কর্মবিরতির প্রভাবে গড়বড় ট্রেন সূচিতে
Published: 30th, January 2025 GMT
রেলের রানিং স্টাফরা মঙ্গলবার মধ্যরাতে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন। তবে গতকাল বুধবার সময়সূচি মেনে ট্রেন না চলায় ভুগেছেন যাত্রীরা। ঢাকার কমলাপুর থেকে কুড়িগ্রামগামী ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস’ এবং সিলেটগামী ‘জয়ন্তিকা’র যাত্রা বাতিল হয়। অন্যান্য ট্রেনও এক থেকে চার ঘণ্টা বিলম্বে যাত্রা করে।
পুরোনো নিয়মে ভাতা ও পেনশন সুবিধা পুনর্বহাল দাবিতে গত সোমবার মধ্যরাত থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন রানিং স্টাফরা। মঙ্গলবার দিনভর দফায় দফায় বৈঠক হলেও সুরাহা হয়নি। রাত ২টা পর্যন্ত রাজধানীর রেলভবনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন রানিং স্টাফরা। মধ্যস্থতায় ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শ্রমিক নেতা শামসুর রহমান বিশ্বাস শিমুল। রাতে এ বৈঠকে যোগ দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
বৈঠক শেষে সবাই রেল উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের মন্ত্রিপাড়ার বাসভবনে যান। সেখান থেকে রাত আড়াইটায় কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা আসে। রেলওয়ে রানিং স্টাফ এবং কর্মচারী শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান জানান, সব দাবি পূরণ না হলেও যাত্রীদের দুর্ভোগের কারণে তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন।
গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে জানানো হয়, রানিং স্টাফরা আগের নিয়মে রেলওয় সংস্থাপন কোড অনুযায়ী রানিং ভাতা পাবেন। অন্য কোনো ভাতা তারা প্রাপ্য হবেন না।
ট্রেনের চালক, সহকারী চালক, টিটি, গার্ড, অ্যাটেনডেন্টসরা রানিং স্টাফ। দিনে প্রতি ১০০ মাইল ট্রেন পরিচালনায় এক দিনের বেতনের সমপরিমাণ ভাতা পান। এর ৭৫ শতাংশ মূল বেতন যোগ করে পেনশন সুবিধা দেওয়া হয়। ২০২১ সালে পেনশন সুবিধা বাতিল হলে আন্দোলনে নামে রানিং স্টাফরা। পুরোনো নিয়মে ভাতা পুনর্বহাল করা হলেও, পেনশন দাবিকে অন্যায্য আখ্যা দিয়ে মানেনি সরকার।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বুধবার ভোর ৬টা থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন জানান, ভোর সাড়ে ৬টায় ঢাকা থেকে যাত্রা করে রাজশাহীগামী ধূমকেতু। আন্দোলন থামলেও ইঞ্জিন প্রস্তুত পাওয়া যাচ্ছে না। রেললাইনে এনে বগিতে জুড়তে সময় লাগছে। ভোর ৬টা ৩৫ মিনিটে সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেসের কমলাপুর থেকে যাত্রার কথা ছিল। ট্রেনটি যাত্রা করে ৪ ঘণ্টা ২০ মিনিট দেরিতে। সকাল ৭টার সোনারবাংলা এক্সপ্রেস এক ঘণ্টা, সোয়া ৬টার কক্সবাজারগামী পর্যটক এক্সপ্রেস আড়াই ঘণ্টা, সোয়া ৭টার মহানগর প্রভাতি তিন ঘণ্টা দেরিতে যাত্রা করে। দিনের অন্যান্য ট্রেনও এক থেকে দেড় ঘণ্টা বিলম্বে ছাড়ে।
রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ঢাকাগামী জাহানাবাদ এক্সপ্রেস (ট্রেন নম্বর-৮২৫), রাজশাহীগামী টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস (ট্রেন নম্বর-৭৮৩) এবং ঢাকাগামী চিলাহাটি এক্সপ্রেস (ট্রেন নম্বর-৮০৬) বুধবার চলবে না। সোমবার মধ্যরাতে এ ট্রেনগুলো গন্তব্য স্টেশনে পৌঁছে দিয়ে কর্মবিরতিতে যান রানিং স্টাফরা। এগুলো প্রারম্ভিক স্টেশনে পৌঁছাতে না পারায়, গতকাল চলাচল বাতিল হয়।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানিয়েছে, বন্দর নগরীতে গতকাল ট্রেনের সূচি গড়বড় হলে যাত্রী ভোগান্তি হয়। ঢাকাগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস দেড় ঘণ্টা বিলম্বে সকাল ৯টা ৫ মিনিটে যাত্রা করে। সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেসও এক ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে।
স্টেশন ম্যানেজার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, সকালে কয়েকটি ট্রেন সময় মতো ছাড়তে না পারায় শিডিউল বিপর্যয় ঘটে। তবে দুপুরের পরে ঠিক হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ট র ন য গ য গ বন ধ গতক ল প নশন
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!
ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন
গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’