বরিশালে শিক্ষার্থী ও বাস শ্রমিকদের মধ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সংঘর্ষের পর গভীর রাতে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় বুধবার সকালে শ্রমিকরা নতুন করে ধর্মঘট ডাকলে বরিশাল বিভাগের ৫ জেলার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। পরে গতকাল সন্ধ্যায় পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে সভায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়। 

শ্রমিকরা দাবি করেছেন, নিরাপত্তাহীনতার কারণে নগরের রূপাতলী বাস টার্মিনালের পরিবহন শ্রমিকরা বুধবার সকালে কর্মবিরতিতে যান। এ টার্মিনাল থেকে বিভাগের পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা জেলা এবং বাগেরহাট-খুলনা রুটে বাস চলাচল করা হয়।

বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন জানান, নিরাপত্তার জন্য শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে অস্বীকার করেন। এতে দক্ষিণাঞ্চলের ৫ জেলায় বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি সমাধানে ৫ জেলার মালিক সমিতি পুলিশ কমিশনারের দপ্তরে সভা করে। সভায় পুলিশ নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়ায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শ্রমিকরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন।

বিএম কলেজের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র কামরুল ইসলাম হাবিব বলেন, আমরা ৮ দফা দাবিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সড়ক অবরোধ করেছিলাম। প্রশাসনের মধ্যস্থতায় সভায় বাস মালিক-শ্রমিকরা দাবি মেনে নিলে গভীর রাতে অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়। এর পরও মালিক-শ্রমিকরা বুধবার সকালে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ধর্মঘট শুরু করে।
বুধবার দুপুরে রূপাতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, বাস বন্ধ থাকায় যাত্রীরা থ্রি-হুইলারসহ বিভিন্ন যানবাহনে গন্তব্যে যাচ্ছে। স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। 

প্রসঙ্গত, বিএম কলেজের এক ছাত্রী মঙ্গলবার বাসে ঝালকাঠি থেকে বরিশালে যাচ্ছিলেন। হাফ ভাড়া নিয়ে তর্কাতর্কিতে ছাত্রীকে হেনস্তা করার অভিযোগ ওঠে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা রূপাতলী বাস টার্মিনালে গেলে শ্রমিকদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েকটি বাসে ভাঙচুর করা হয়। শিক্ষার্থীরা ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বর শ ল অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

সরস্বতি পূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জে জমজমাট প্রতিমার হাট

আগামী ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা। এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্নস্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এখন চলছে প্রতিমার বেচাকেনা। এবার প্রতিমার দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রীয়া থাকলেও কারিগররা বলছেন, জিনিস পত্রের দাম বাড়ায় প্রতিমার দামও কিছুটা বাড়তি।

পঞ্জিকা মতে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে আশীর্বাদ লাভের আশায় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা করে থাকেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। শুধু বাড়িতেই নয় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। দেবীর পায়ে অঞ্জলী দিয়ে অনেক শিশুর শিক্ষাজীবন শুরু হবে।

এ পূজার প্রধান অনুসঙ্গ হলো প্রতিমা। ফলে জেলা শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ী, সদর উপজেলার সাতপাড়, বৌলতলী, কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ, ভাঙ্গারহাট, ঘাঘর বাজারসহ অনেক স্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এসব হাটে আনা এক একটি প্রতিমা প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে। 

আরো পড়ুন:

লক্ষ্মীপুরে রাসপূর্ণিমা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু

পুটিয়ার কৃষ্ণপুরে চলছে কাত্যায়নী পূজা

এ বছর ক্রেতাদের মধ্যে প্রতিমার দাম নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ক্রেতাদের অনেকেই বলছেন, দাম সাধ্যের মধ্যে আবার কেউবা বলছেন দাম আগের চেয়ে বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে, এর মধ্যেও বিভিন্ন বয়সের মানুষ এসব হাট থেকে কিনে নিচ্ছেন পছন্দমতো প্রতিমা। হাটে শুধু প্রতিমাই নয় বিক্রি হচ্ছে ফুল, মালা, মিষ্টিসহ পূজার অন্যান্য উপকরণও। 

রীতি অনুযায়ী বিদ্যার দেবী সরস্বতি পূজার পাশাপশি বসন্ত পঞ্চমীতে গণেশ, লক্ষ্মী, নবগ্রহ, বই, খাতা, কলম ও বাদ্যযন্ত্রের পূজা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে শীত ঋতুর অবসান হয়ে বসন্ত ঋতুর আগমন বার্তা ঘটবে।

প্রতিমা কিনতে আসা উত্তম সাহা বলেন, “শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীতে সরস্বতী প্রতিমার হাট বসেছে। এবার বাড়িতে পূজা করাব। ছেলেকে নিয়ে হাটে প্রতিমা কিনতে এসেছি। ঘুরে ফিরে পছন্দমত প্রতিমা কিনেছি। আমি মনে করি, পূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে।”

অপর ক্রেতা নারু গোপাল বলেন, “প্রতিবছর এখানে প্রতিমার হাট বসে। এবে এবার প্রতিমার আমদানি একটু কম। তারপরেও দেখে বুঝে দরদাম করে একটি প্রতিমা কিনেছি। এবার আমাদের বাড়িতে সরস্বতী পূজা হবে।”

অপর ক্রেতা পরিমল চন্দ্র ঢালী বলেন, “এক একটি প্রতিমা ২০০ তেকে ১০ হাজার টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হচ্ছে। হাটে এসে প্রতিমা দেখছি। পছন্দ হলে কিনে নিয়ে যাব। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিমার দাম একটু বেশি।”

গোপালগঞ্জ শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীর হাটে প্রতিমা বিক্রি করতে আসা উত্তম পাল বলেন, “এবার ২০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি। ইতোমধ্যে ১০টি বিক্রি করা হয়েছে। তবে এবার ক্রেতার সংখ্যা একটু কম। আশা করি, বাকি দুই দিনও বেচাকেনা হবে।”

কার্ত্তিক পাল বলেন, “কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ গ্রাম থেকে ৩০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি বিক্রির জন্য। চার থেকে পাঁচটি প্রতিমা বিক্রি করেছি। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, তাতে প্রতিমা বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ প্রতিমা তৈরির অনুসঙ্গের যে দাম তাতে খরচও উঠছে না।”

স্বপন পাল নামে এক বিক্রেতা বলেন, “প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহৃত ছোন, রংসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের দাম প্রতিবছর বেড়েই চলছে। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, সেই দামে বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তারপরেও বাব-দাদার পেশা আমরা ধরে রেখেছি।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ