Samakal:
2025-02-27@18:59:12 GMT

অভিভাবকের স্বার্থ দেখবে কে?

Published: 29th, January 2025 GMT

অভিভাবকের স্বার্থ দেখবে কে?

গত ২০ জানুয়ারি সমকালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলছে, ‘বেড়েছে শিক্ষার ব্যয়, অসহায় অভিভাবক’। যদিও প্রতিবেদনটি চট্টগ্রাম শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নিয়ে লেখা, কিন্তু এটি যেন পুরো দেশেরই শিক্ষাচিত্র। দিন দিন শিক্ষা উপকরণে খরচ এমন একটি অসহনীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে, দরিদ্র ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেক শিক্ষার্থী ব্যয় সংকুলান করতে পারছে না।

এমনকি মধ্যবিত্ত শ্রেণির অভিভাবকরাও দিশেহারা। বই, খাতা, কলম, পেন্সিল, জ্যামিতি বক্স– প্রতিটি উপকরণেরই দাম বেড়েছে। এমনিতেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম ঊর্ধ্বমুখী, তার ওপর শিক্ষা উপকরণের দাম এভাবে বাড়তে থাকলে অভিভাবকরা যাবেন কোথায়? যেসব পরিবারে দুই বা ততধিক শিক্ষার্থী, তাদের অবস্থা বলার অপেক্ষা রাখে না।

এর সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যও উল্লেখযোগ্য। প্রতিবছর শিক্ষার্থীরা নতুন ক্লাসে ওঠামাত্র ভর্তি প্রক্রিয়ায় বিশাল অঙ্কের অর্থ খরচের ধকল সামাল দিতে হয় অভিভাবকদের। তারপর যুগের পরিবর্তনে শিক্ষাক্ষেত্রে এমন অবস্থা হয়েছে, পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা যেমনই হোক; নতুন ক্লাসে নতুন স্কুল ড্রেস, নতুন জুতা, নতুন টিফিন বক্স, নতুন খাতাপত্র– সব অবশ্যই দিয়ে পাঠাতে হয়। যেন সাধ্যের অতিরিক্ত জীবনযাপনের জন্য শৈশব থেকেই শিক্ষার্থীদের ভেতর একটি ক্রমবর্ধমান চাহিদা তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে।

সাধারণ পরিমিতিবোধসম্পন্ন জীবনযাত্রা থেকে শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। আবার আগের বছরের কোনো খাতাপত্র ব্যবহার উপযোগী থাকলেও তা বাদ দেওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। একজন শিক্ষক হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, আগের বছরের বেঁচে যাওয়া ভালো খাতাপত্র যদি হোমওয়ার্ক করার নির্দেশও দেওয়া হতো তাহলে অনেক দরিদ্র ও অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে। বছর শেষ হয়েছে বলে ভালো খাতাও ফেলে দিতে হবে কেন? শিক্ষার মূল কাজ তো মানবিক গুণাবলির বিকাশ ঘটানো। আমরা যদি শিক্ষার্থীদের শৈশব থেকেই এভাবে সাশ্রয়ী ও মিতব্যয়ী হতে শেখাতাম; এ আদর্শের শিক্ষা তাদের পরবর্তী জীবনেও কাজে লাগত। অথচ আমাদের শিক্ষাকাঠামো মানবিক গুণাবলির বিকাশ তো হচ্ছেই না, কোনো প্রকারের নৈতিকতা ও মূল্যবোধের শিক্ষাও দিতে পারছে না। শিক্ষাকাঠামো এখন কেবল সনদসম্পন্ন যন্ত্র তৈরির কারিগরে পরিণত হয়েছে, যার বাইরের পোশাকটা ঝলমলে, ভেতরটা ফাঁকা। 

ছেলেবেলায় একটা প্রবাদ খুব শোনা যেত– ‘লেখাপড়া করে যে, গাড়িঘোড়ায় চড়ে সে’। ভাবতে অবাক লাগে, আজ যুগের পরিবর্তনে নির্মম বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে প্রবাদটি যেন ঘুরিয়ে বলার সময় এসেছে। কেননা.

আজকাল সমাজে যারা গাড়িঘোড়ায় চড়ে, তারাই খুব সম্ভবত পড়াশোনা করে।

দরিদ্র ও অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা দিন দিন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। শিক্ষা আজ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভোগসর্বস্ব পয়সাওয়ালাদের বিষয়। যেন তাদেরই অধিকার এ ক্ষেত্রে। অথচ একটি গণতান্ত্রিক সমাজ কাঠামোতে এমনটি তো হওয়ার কথা নয়। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের মতো শিক্ষাও মানুষের মৌলিক অধিকার। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও রাষ্ট্র আমাদের নাগরিকদের সে অধিকার নিশ্চিত করতে পারছে না। জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য কোনো গৌরবের বিষয় নয়।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে সংস্কারের কথা বলছে। দেশের মানুষ এক বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। দেশে একটি শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা দরকার। দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও শিক্ষা উপকরণে যেন তার কোনো প্রভাব না পড়ে। যেন অভিভাবকদের আয়ত্তের বাইরে তা চলে না যায়। নতুবা বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে।

মাহজাবিন আলমগীর: শিক্ষিকা, মোহাম্মদপুর, ঢাকা  

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ব র র

এছাড়াও পড়ুন:

সেহরি

কয়েকদিন পরই শুরু হচ্ছে রোজা। এখন থেকেই নিতে হবে প্রস্তুতি। সুস্থ থাকতে সেহরিতে রাখুন সহজপাচ্য খাবার। স্বাদে ভিন্নতা আনতে ইফতারের প্রথম দিন ছোলা, মুড়ি, পেঁয়াজু, বেগুনির পাশাপাশি বানাতে পারেন অন্যরকম কিছু খাবার। রেসিপি দিয়েছেন আলিফ রিফাত

চিয়া সিড পুডিং 

উপকরণ: চিয়া সিড ১/৪ কাপ, দুধ ১ কাপ, খেজুর কুচি ২টা, বাদাম কুচি ১ চা চামচ, ভ্যানিলা এসেন্স ১/৩ চা চামচ, ১টা কলা টুকরো করা।
প্রস্তুত প্রণালি: দুধ, চিয়া সিড, খেজুর কুচি, ভ্যানিলা এসেন্স একসঙ্গে মিক্স করে ৪-৫ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর কাটা কলা ও বাদাম কুচি দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করতে হবে।

ওটস খিচুড়ি 

উপকরণ: ওটস ১/২ কাপ, পছন্দমতো সবজি কাটা ১ কাপ, মুরগির মাংস ছোট করে কাটা ১ কাপ, মসুর ও মুগ ডাল ভেজে ভেজানো ১/৩ কাপ, আদা-রসুন বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১/২ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১/২ চা চামচ, গরম মসলা গুঁড়া ১/৩ চা চামচ, তেল বা ঘি ২ টেবিল চামচ, পানি ২ কাপ, ধনিয়া পাতা কুচি ১ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো।
প্রস্তুত প্রণালি: বাটা ও গুঁড়া মসলা দিয়ে মাংসের টুকরো ম্যারিনেট করে রাখতে হবে ১০-১৫ মিনিট। একটি পাত্রে তেল বা ঘি দিয়ে মাংস কষাতে হবে। মাংসের পানি শুকিয়ে গেলে সবজি ও ডাল দিয়ে আবারও কষাতে হবে। এবার দেড় কাপ পানি দিয়ে সবজি ও ডাল সেদ্ধ করতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে ওটস মিশিয়ে সাবধানে নাড়তে হবে। ১/২ কাপ গরম পানি দিয়ে অল্প আঁচে খিচুড়ি দমে রাখতে হবে। ওটস সেদ্ধ হয়ে এলে ধনিয়া পাতা কুচি দিয়ে নামাতে হবে। 

ভাতুরি

উপকরণ: পোলাও চাল, বাসমতী চাল ১/২ কেজি, মাছের ফিলে ৪ পিস, হলুদ গুঁড়া ১/২ চা চামচ, কাঁচামরিচ কুচি ২ টেবিল চামচ, আদা কুচি ২ টেবিল চামচ, লেবুর রস ১ চা চামচ, সরিষা পেস্ট ১ টেবিল চামচ, ধনিয়া পাতা কুচি ১ টেবিল চামচ, সরিষার তেল ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি ২টা, লবণ স্বাদমতো, পানি ১ কাপ, নারকেল দুধ ১/২ কাপ ।
প্রস্তুত প্রণালি: চাল ধুয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে ৩০ মিনিট। মাছে লবণ ও লেবুর রস মাখিয়ে ৩০ মিনিট ম্যারিনেট করে ধুয়ে নিন। এবার একটা পাত্রে হলুদ, মরিচ কুচি, ধনিয়া পাতা কুচি, সরিষা পেস্ট ও লবণ মেখে নিন। মাছের ফিলের এক পাশে মসলার মিশ্রণটা মাখিয়ে রোল করে সুতা দিয়ে বেঁধে নিন। এবার যে পাত্রে ভাতুরি রান্না করা হবে সেই পাত্রে পেঁয়াজ কুচি, লবণ, তেল ও অবশিষ্ট মাছের মসলা দিয়ে ভালো মতো মেখে তার ওপর সুতায় বেঁধে রাখা মাছ বিছিয়ে দিতে হবে। এবার আগে থেকে ভিজিয়ে রাখা চাল, নারকেল দুধ ও পানি দিয়ে চুলায় বসাতে হবে ফুল আঁচে। পানি ফুটে উঠলে চুলার জ্বাল কমিয়ে দমে বসিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পর আঁচ বন্ধ করে আরও ৫ মিনিট দমে রেখে পরিবেশন করুন। 

ফিশ কেক

উপকরণ: আলু সেদ্ধ ২-৩টা, যে কোনো মাছের ফিলে ৩-৪ টুকরো, গোলমরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, পেঁয়াজ কলি কুচি ১/২ কাপ, অরিগনো ১/২ চা চামচ, চিলি ফ্লেক্স ১/২ চা চামচ, রসুন কুচি ১ টেবিল চামচ, মাখন ৩ টেবিল চামচ, ময়দা পরিমাণমতো, ফেটানো ডিম ২টা, ব্রেড ক্রাম্ব, লবণ ও  তেল পরিমাণমতো ।
প্রস্তুত প্রণালি: আলু এমনভাবে সেদ্ধ করতে হবে যাতে পানি পানি ভাব না থাকে। মাছ ছোট ছোট চৌকোনা টুকরো করে লবণ ও গোলমরিচ মাখিয়ে মাখনে ভেজে নিন। ওই মাখনেই রসুন কুচি দিয়ে ভাজতে হবে। এরপর একে একে অরিগনো চিলি ফ্লেক্স পেঁয়াজকলি দিয়ে ভাজতে হবে ২ মিনিট। এরপর আলু, ভাজা মাছ ও মসলা একত্রে মাখাতে হবে আলতো করে। এবার পছন্দমতো শেপে ফিশ কেক বানিয়ে ময়দায় গড়িয়ে, ডিমে চুবিয়ে, ব্রেডক্রাম্বে মাখিয়ে ফ্রিজে রাখতে হবে ১০-১৪ মিনিট। এরপর ডুবো তেলে ভাজতে হবে। রুটি, ভাত কিংবা গার্লিক ব্রেডের সঙ্গে অনায়াসে সেহরিতে খাওয়া যায় এই মজাদার সহজপাচ্য ফিশ কেক।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘শুল্ক সুবিধা নিয়ে আমদানির পরও তাঁত শিল্পে দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে’
  • কোন উপকরণ দিয়ে তৈরি পাউরুটি বেশি স্বাস্থ্যকর
  • ইফতার
  • সেহরি