আওয়ামী লীগের দখল, রক্ষা ও ভোগে বিএনপি
Published: 29th, January 2025 GMT
বরিশাল নগরীসংলগ্ন চরবাড়িয়া ইউনিয়নের তালতলী বাজারে খাস খতিয়ানের জমি রয়েছে ছয় একর। এর মধ্যে আছে দুটি পুকুর, প্রতিটি এক একর আয়তনের। আওয়ামী লীগ আমলে এসব ভোগদখল করতেন দলটির স্থানীয় নেতারা। মাছ বাজার, বালুর খলা ও স্পিডবোট ঘাট বসিয়ে আয় করতেন লাখ লাখ টাকা। ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের দখলদাররা পালানোয় সেগুলো রক্ষা ও ভোগের দায়িত্ব নিয়েছে স্থানীয় বিএনপি।
বরিশাল নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোড থেকে সড়কপথে তালতলী বাজারের দূরত্ব প্রায় ছয় কিলোমিটার। নদীর তীরবর্তী হওয়ায় বিনোদনপিপাসুদের কাছে এলাকাটি জনপ্রিয়। বাজারের সঙ্গে নদীর তীর ঘেঁষে গণপূর্তের ৯ একর জমি ছিল। কয়েক বছর আগে ওই জমি থেকে ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও উপজেলা মডেল মসজিদের জন্য প্রায় সাড়ে তিন একর অধিগ্রহণ করা হয়। বাকি ৬ একর ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত করে জেলা প্রশাসনের অধীনে নেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গণপূর্তের অধীনে থাকাকালেই ওই জমি আওয়ামী লীগ নেতাদের দখলে যায়। তারা মাছের পাইকারি বাজার ও মেহেন্দীগঞ্জ রুটে যাত্রীবাহী স্পিডবোট ঘাট স্থাপন করেন। বড় অংশজুড়ে বসানো হয় বালুর খলা (বালু বিক্রির দোকান)।
সর্বশেষ দুই বছর আগে উচ্ছেদের পর শেখ রাসেল মিনি মার্ক স্থাপনের জন্য সীমানা প্রাচীরের কাজ শুরু হয়েছিল। সেই কাজ এখনও শেষ হয়নি। ওই সীমানার মধ্যে মাছের পাইকারি বাজার ও স্পিডবোট ঘাটের ব্যবসা চালাতেন আওয়ামী লীগের দখলদাররা। ৫ আগস্টের পর এসব নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে তালতলী বাজার কমিটির নামে।
কমিটির সভাপতি সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য ও চরবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুরুজ আহমেদ। তিনি এখন সব নিয়ন্ত্রণ করেন। চাঁদা ওঠে বাজার কমিটির নামে।
চরবাড়িয়া ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা শাহীন আলম জানান, নদীর তীর ঘেঁষে চার একর জমিতে শেখ রাসেল শিশুপার্ক করার জন্য সীমানা প্রাচীর নির্মাণকাজ চলমান। সড়কের পাশে থাকা মাছ বাজারটি পার্কের মধ্যে স্থানান্তর করা হয়েছে। আগে স্পিডবোট ভেড়ানো হতো তালতলীর বাজারসংলগ্ন পাকা ঘাটে। এখন পার্কের জমিতে ঘাট স্থাপন করা হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চরবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে ডেকে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন।
ইউএনও ইকবাল হাসান বলেন, ‘আমাদের জমি অবৈধ দখলে নিয়ে স্পিডবোট ঘাট ও মাছের বাজার করা হয়েছে। দখল উচ্ছেদ করতে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
বাজার কমিটির সভাপতি সুরুজ আহমেদ বলেন, ‘সব নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলছে। আমরা কোনো দখলে নেই। এর চাইতে বেশি কিছু বলব না।’
এদিকে মাছ ঘাট ও স্পিডবোট ঘাট ইজারা চেয়ে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আবেদন করেছেন উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব নিয়াজ মোর্শেদ। তিনি বলেন, সরকারি জমিতে থাকা বাজার ও ঘাট ইজারা দেওয়া হলে সরকার রাজস্ব পাবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বর শ ল কম ট র ত লতল র দখল উপজ ল আওয় ম ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!
ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন
গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’