ভারতে কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে ৪০ জনের মৃত্যু
Published: 29th, January 2025 GMT
ভারতের উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে কমপক্ষে ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৬০ জন। মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বুধবার ভারতীয় পুলিশের তিনটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে মৌনী অমাবস্যা উপলক্ষে পবিত্র স্নানের জন্য নদীতীরে জড়ো হন লাখ লাখ মানুষ। প্রচণ্ড ভিড়ে সামনে এগোতে না পেরে ব্যারিকেড ভেঙে পায়ের নিচে চাপা পড়ে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভোরের আলো ফোটার আগেই লাখ লাখ ভক্ত কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মহাকুম্ভমেলার সবচেয়ে শুভদিনটি উপলক্ষে পবিত্র স্নান করতে জড়ো হন সেখানে। এ সময় প্রচণ্ড মানুষের ভিড়ে ঠেলাঠেলিতে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করেন পুণ্যার্থীরা। সেই ভিড়ে পড়ে গিয়ে চাপা পড়েন অনেকে।
পুলিশ সূত্রগুলো জানায়, মর্গে এ পর্যন্ত ৪০টি লাশ এসেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই সংখ্যা আরও বাড়বে। জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা বৈভব কৃষ্ণা বলেন, কতজন মারা গেছেন তা এখনও নিশ্চিতভাবে বলে যাচ্ছে না। মানুষের ভিড় ব্যবস্থাপনায় আমরা কাজ করছি। ড্রোন ফুটেজে দেখা যায়, লাখ লাখ পুণ্যার্থী কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই মহাকুম্ভমেলার সবচেয়ে শুভদিনটি উপলক্ষে স্নানের জন্য আসছে।
ঘটনা সম্পর্কে অবগত ব্যক্তিরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন, কমপক্ষে ৪০টি মৃতদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এদিকে এ ঘটনায় ভারতের বিরোধী নেতারা সরকারের সমালোচনা করেছেন এবং অভিযোগ করেছেন, অব্যবস্থাপনার কারণে কুম্ভমেলা ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটেছে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানব সমাবেশ এই হিন্দু উৎসবে গত দুই সপ্তাহে ইতোমধ্যে প্রায় ১৪৮ মিলিয়ন মানুষ অংশ নিয়েছেন। কর্মকর্তারা আশা করেছিলেন, এবার প্রায় ১০০ মিলিয়ন মানুষ এই পবিত্র স্নান করতে আসবেন। যেহেতু এটি একটি বিরল আকাশ গঙ্গা অ্যালাইনমেন্টের কারণে সবচেয়ে শুভদিন, যা ১৪৪ বছর ধরে চলে আসছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৩৯ ফিলিস্তিনির প্রাণহানি
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক। এতে করে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৫১ হাজার ২৫০ জনে পৌঁছেছে।
গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ১ হাজার ৮৫০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। খবর আনাদোলু এজেন্সির।
সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে ভূখণ্ডটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫১ হাজার ২৪০ জনে পৌঁছেছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি আক্রমণে আহত হওয়া আরও ৬২ জনকে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে সংঘাতের শুরু থেকে আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৩১ জনে পৌঁছেছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।
দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় গত সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও প্রায় ৪ হাজার ৯০০ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এর আগে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরায়েল।