পটুয়াখালীর আদালত চত্বরে আসামিদের ইট দিয়ে পা থেতলে দিয়েছে বাদীর লোকজন
Published: 29th, January 2025 GMT
পটুয়াখালী জেলা জজ আদালত চত্বরে হাজিরা দিতে এসে মারধরের শিকার হয়েছেন আসামিরা। বাদীর লোকজন ইট দিয়ে পা থেতলে দিয়েছে আসামিদের। বুধবার বেলা ১২টার দিকে জেলা আইনজীবী সমিতির প্রধান গেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বাদীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে ভুক্তভোগীরা হাসপাতালে চিকিৎসাও নিতে পারেননি। এ ঘটনায় আদালত পাড়ায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। হামলায় অংশ নেওয়া সবাই বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
এদিকে এ কর্মকাণ্ডের সময় উপস্থিত লোকজন ছবি ও ভিডিও ধারণ করলেও তা রাখতে পারিনি। হামলাকারীরা নানা ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকি দিয়ে জোরপূর্বক হামলার ছবি ও ভিডিও ডিলেট করতে বাধ্য করেন। হামলায় আহতরা হচ্ছেন- মো.
হামলায় গুরুতর আহত সোহাগ মিয়ার বড় ভাই মো. আল-আমিন জানান, ২০১২ সালে কলাপাড়ায় ছাত্রদল নেতা মো. জিয়া নিহত হওয়ার ঘটনায় ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে একটি মামলা হয়। সেই মামলার আসামিরা হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বুধবার পটুয়াখালী আদালতে হাজিরা দিতে গেলে মামলার বাদীসহ পটুয়াখালী বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় তারা ইট দিয়ে আঘাত করে সোহাগের হাটু থেতলে দেয় এবং বাকীদের বেধড়ক মারধর করে।
এদিকে হামলার শিকার হয়ে ভুক্তভোগীরা পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলেও আহতদের সেখানে চিকিৎসা নিতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন নেতাকে মোটরসাইকেলে করে টহল দিতে দেখা যায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল মিয়া বলেন, ‘উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে আসার পর বুধবার তারা আদালতে হাজিরা দিতে যায়। এ সময় তাদের ১০ থেকে ১২ জনকে মারধর করে গুরুতর জখম করে। আহত করার পর তাদের কালো কাপড় দিয়ে চোখ বেঁধে বসাকবাজার এলাকায় নিয়ে যায় এবং পরে সেখানে ছেড়ে দেয়। তারা তাদের চিকিৎসা পর্যন্ত করতে দেয়নি। আদালতের মত জায়গায় আজ মানুষের নিরাপত্তা নেই।’
এ ব্যাপারে পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ.টি এম. মোজাম্মেল হোসেন তপন বলেন, ‘আমি তখন আদালতে ছিলাম, কি হয়েছে তা ঠিক বলতে পারছি না।’
পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ওয়াহিদ সরওয়ার কালাম সমকালকে বলেন, ‘আদালত চত্বরে এ ধরনের ঘটনা নিন্দনীয় এবং আইনজীবীদের জন্য দুঃখজনক ঘটনা। আদালত এলাকায় মানুষের নিরাপত্তা থাকা উচিত।’
পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ জানান, আদালত চত্বরে হামলার সংবাদ শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে এ বিষয় আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। শুনেছি, আহতরা কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
হত্যার ৩২ বছর পর রায়, ১ জনের যাবজ্জীবন
জামালপুর সদরের মেষ্টাতে মোজাম্মেল হক হত্যা মামলার ৩২ বছর পর একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও চারজনকে খালাসের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ, দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. আবু বকর ছিদ্দিক এই রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো. হাফিজুর রহমান সরিষাবাড়ি উপজেলার ঢুরিয়াভিটা গ্রামের মৃত রুহুল আমীনের ছেলে। এছাড়াও তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। অনাদায়ে আরো দুই মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
মামলায় খালাস পাওয়া আসামিরা হলেন- সরিষাবাড়ী থানার গোবিন্দ নগর (বয়রা) গ্রামের মো. মতিয়ার রহমানের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে আজাদ, পাখাডুবি গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে গোলাম রব্বানী ওরফে রব্বানী, জসীম উদ্দিনের ছেলে ওমর আলী ও জামালপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া দেওয়ানীপাড়া গ্রামের মরহুম মো. নিজাম উদ্দিনের ছেলে মো. শওকত আলী।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ, দ্বিতীয় আদালতের অতিরিক্ত পি.পি আইনজীবী এ.কে.এম নাজমুল হুদা জানান, প্রধান আসামি হাফিজুর রহমান ও নিহত মোজাম্মেল হক বাল্য বন্ধু ছিলেন। ১৯৯৩ সালের ২৩মে বিকালে দাওয়াত খাওয়ার কথা বলে মোজাম্মেল হককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান হাফিজুর রহমান। এরপর আর বাড়ি ফিরেননি মোজাম্মেল হক। পরদিন ২৪মে মেষ্টা ইউনিয়নের হাসিল পারিল গৌরিপুর গ্রামে কাঁচা রাস্তার উপর মোজাম্মেল হকের রক্তাক্ত মরদেহ দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা।
পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের পর দাফন করে। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে ২৮মে নিহত মোজাম্মেল হকের বড় ভাই শাহজাহান ছবি দেখে তার ভাইকে শনাক্ত করেন। পরে জামালপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার দীর্ঘ তদন্তের পর ১৩ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ৩২ বছর পর এই রায় দেন আদালত। মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. ফজলুল হক।
ঢাকা/শোভন/এস