চাষাড়ায় আড়াইহাজারের পলাতক সাবেক এমপি বাবুর ভাইসহ আটক ৫ (ভিডিও)
Published: 29th, January 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী আখ্যা দিয়ে পাঁচজন যুবককে আটকে পুলিশে সোপর্দ করেছে জনতা। তাদের মধ্যে আড়াইহাজারের সাবেক এমপি পলাতক নজরুল ইসলাম বাবুর খালাতো ভাই মো: বাকের রয়েছেন। তিনি আড়াইহাজার উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম অহবায়ক।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় শহরের চাষাঢ়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে আটকদের প্রাথমিক তদন্তে চারজনের সঙ্গে আওয়ামী লীগ বা এর সহযোগী সংগঠনের কোনও সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি বলে জানান সদর মডেল থানার ওসি নাছিরউদ্দিন আহমদ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শহীদ মিনারে কয়েকজন যুবককে আটক করেন স্থানীয় কয়েকজন। ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে তাদের জেরা করা হয়। এক পর্যায়ে তাদের মোবাইল ফোনও দেখা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ।
পরে ওই পাঁচজনকে পুলিশ ভ্যানে করে সদর মডেল থানায় নেওয়া হয় বলে জানান ওসি নাছির।
তিনি বলেন, পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নিতে পারে বিবেচনা করে তাদের হেফাজতে নিয়ে থানায় আসি। প্রাথমিকভাবে যাচাই-বাছাই করে জানা গেছে, তাদের মধ্যে চারজন আওয়ামী লীগ বা দলটির কোনো সংগঠনের সঙ্গে জড়িত নন। তারা একভাবে শহীদ মিনারে গিয়েছিলেন। সন্দেহের বশে তাদের আটক করা হয়।
ওসি নাছির বলেন, তাদের মধ্যে একজনের সঙ্গে যুবলীগের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তিনি যুবলীগের একটি শাখা কমিটির পদেও আছেন। তার বিষয়ে আরও যাচাই-বাছাই চলছে।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই চারজনের বাইরে অপরজনের নাম বাকের ভুইয়া। সে ৫ আগস্টের পর আড়াইহাজার ছেড়ে ফতুল্লার ভুইঘড় রূপায়ণ টাউনে তার নিজস্ব ফ্ল্যাটে আত্মগোপনে ছিল। সন্ধ্যায় তার পূর্ব পরিচিতদের (আটক ৪জন) নিয়ে শহীদ মিনারে চা খেতে আসে। বাকের ভুইয়া সবশেষ ২০২৩ সালের ১৩ নভেম্বর সকালে দেশব্যাপী বিএনপি-জামায়াতের চতুর্থ দফায় ৪৮ ঘন্টার ডাকা অবরোধ, অগ্নিসন্ত্রাসের প্রতিবাদে আড়াইহাজারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাচরুখী এলাকায় শান্তি সমাবেশ ও মিছিল বের করে। ওই মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছেন আড়াইহাজার উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আহমেদুল কবির উজ্জ্বল ও যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক বাকের ভুঁইয়া।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: য বল গ য বল গ ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
সরস্বতি পূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জে জমজমাট প্রতিমার হাট
আগামী ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা। এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্নস্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এখন চলছে প্রতিমার বেচাকেনা। এবার প্রতিমার দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রীয়া থাকলেও কারিগররা বলছেন, জিনিস পত্রের দাম বাড়ায় প্রতিমার দামও কিছুটা বাড়তি।
পঞ্জিকা মতে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে আশীর্বাদ লাভের আশায় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা করে থাকেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। শুধু বাড়িতেই নয় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। দেবীর পায়ে অঞ্জলী দিয়ে অনেক শিশুর শিক্ষাজীবন শুরু হবে।
এ পূজার প্রধান অনুসঙ্গ হলো প্রতিমা। ফলে জেলা শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ী, সদর উপজেলার সাতপাড়, বৌলতলী, কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ, ভাঙ্গারহাট, ঘাঘর বাজারসহ অনেক স্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এসব হাটে আনা এক একটি প্রতিমা প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে।
আরো পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে রাসপূর্ণিমা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
পুটিয়ার কৃষ্ণপুরে চলছে কাত্যায়নী পূজা
এ বছর ক্রেতাদের মধ্যে প্রতিমার দাম নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ক্রেতাদের অনেকেই বলছেন, দাম সাধ্যের মধ্যে আবার কেউবা বলছেন দাম আগের চেয়ে বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে, এর মধ্যেও বিভিন্ন বয়সের মানুষ এসব হাট থেকে কিনে নিচ্ছেন পছন্দমতো প্রতিমা। হাটে শুধু প্রতিমাই নয় বিক্রি হচ্ছে ফুল, মালা, মিষ্টিসহ পূজার অন্যান্য উপকরণও।
রীতি অনুযায়ী বিদ্যার দেবী সরস্বতি পূজার পাশাপশি বসন্ত পঞ্চমীতে গণেশ, লক্ষ্মী, নবগ্রহ, বই, খাতা, কলম ও বাদ্যযন্ত্রের পূজা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে শীত ঋতুর অবসান হয়ে বসন্ত ঋতুর আগমন বার্তা ঘটবে।
প্রতিমা কিনতে আসা উত্তম সাহা বলেন, “শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীতে সরস্বতী প্রতিমার হাট বসেছে। এবার বাড়িতে পূজা করাব। ছেলেকে নিয়ে হাটে প্রতিমা কিনতে এসেছি। ঘুরে ফিরে পছন্দমত প্রতিমা কিনেছি। আমি মনে করি, পূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে।”
অপর ক্রেতা নারু গোপাল বলেন, “প্রতিবছর এখানে প্রতিমার হাট বসে। এবে এবার প্রতিমার আমদানি একটু কম। তারপরেও দেখে বুঝে দরদাম করে একটি প্রতিমা কিনেছি। এবার আমাদের বাড়িতে সরস্বতী পূজা হবে।”
অপর ক্রেতা পরিমল চন্দ্র ঢালী বলেন, “এক একটি প্রতিমা ২০০ তেকে ১০ হাজার টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হচ্ছে। হাটে এসে প্রতিমা দেখছি। পছন্দ হলে কিনে নিয়ে যাব। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিমার দাম একটু বেশি।”
গোপালগঞ্জ শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীর হাটে প্রতিমা বিক্রি করতে আসা উত্তম পাল বলেন, “এবার ২০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি। ইতোমধ্যে ১০টি বিক্রি করা হয়েছে। তবে এবার ক্রেতার সংখ্যা একটু কম। আশা করি, বাকি দুই দিনও বেচাকেনা হবে।”
কার্ত্তিক পাল বলেন, “কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ গ্রাম থেকে ৩০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি বিক্রির জন্য। চার থেকে পাঁচটি প্রতিমা বিক্রি করেছি। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, তাতে প্রতিমা বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ প্রতিমা তৈরির অনুসঙ্গের যে দাম তাতে খরচও উঠছে না।”
স্বপন পাল নামে এক বিক্রেতা বলেন, “প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহৃত ছোন, রংসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের দাম প্রতিবছর বেড়েই চলছে। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, সেই দামে বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তারপরেও বাব-দাদার পেশা আমরা ধরে রেখেছি।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ