বাস মালিক সমিতি, পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের বৈঠকের পর অবশেষে বাস শ্রমিকদের ডাকা বরিশালসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৮টি রুটের অনির্দিষ্টকালের বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে বাস শ্রমিকরা। 

বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বৈঠকের পর বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাত ৮টায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে প্রায় সাড়ে ১৩ ঘণ্টা পর রাত ৯টার দিকে রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে বাস চলাচল শুরু হলো। 

বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদদেলোয়ার হোসেন বাস শ্রমিকদের নিয়ে এ বৈঠকের আয়োজন করেন। বৈঠক শেষে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বরিশাল বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম চৌধুরী। 

বরিশাল রুপাতলী বাসমালিক সমিতির সভাপতি মো.

জিয়াউদ্দীন সিকদার জানান, উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে বৈঠক শুরু হয়। ঘণ্টাব্যাপী আলোচনার পর মালিক-শ্রমিকেরা ধর্মঘট প্রত্যাহারে সম্মত হন। এসময় শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক। তার আশ্বাসের পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। 

বৈঠকের পর রাতে বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকআবুল কালাম চৌধুরী বলেন, “আলোচনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া নেওয়া হবে। বন্ধের দিনে কোনো হাফ ভাড়া থাকবে না। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরাও একমত হয়েছেন।”

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, “বৈঠকে উভয় পক্ষ আলোচনায় সমঝোতার পর বাস ধর্মঘট তুলে নেওয়া হয়েছে।”

এর আগে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর শিক্ষার্থী ও বাস শ্রমিকের মধ্যে সংঘর্ষের পর বাস টার্মিনালে ব্যাপক হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনার পর নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে ওইদিন রাত ৮টার পর থেকে বরিশালের রূপাতলী বাস টার্মিনাল থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৮টি রুটে অনির্দিষ্টকালের বাস ধর্মঘটের ডাক দেন পরিবহন শ্রমিকরা। 

এতে বরিশাল থেকে দক্ষিণের বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর ছাড়াও বাগেরহাট, খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সব রুটে বাস যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকেলে বিএম কলেজের এক ছাত্রীর কাছ থেকে হাফ ভাড়া আদায় নিয়ে ঝালকাঠি রুটের একটি বাসের হেলপার খারাপ আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর শিক্ষার্থীদের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল মীমাংসার জন্য টার্মিনালে গেলে তিন জনকে শ্রমিকরা মারধর করেছে বলে অভিযোগ। 

এসময় শিক্ষার্থী ও বাস শ্রমিকদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পাঁচটি বাস ও শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। এরপর মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেন রূপাতলী বাস টার্মিনালের শ্রমিকরা।

ঢাকা/পলাশ/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

পাবনায় সড়কে গাছ ফেলে ৪০ গাড়িতে ডাকাতি

সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

পাবনার সাঁথিয়ায় মধ্যরাতে সড়কে গাছ ফেলে বাস-ট্রাকসহ অন্তত ৪০টি গাড়িতে ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত দেড়টার দিকে পাবনা-সাঁথিয়া সড়কের ছেচানিয়া ব্রিজের পাশে ঘটে এ ঘটনা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান।

এ বিষয়ে পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রাত দেড়টার দিকে ছেচানিয়া ব্রিজের পাশে সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে প্রথমে একটি পণ্যবাহী ট্রাক আটকে রাখে ডাকাতরা। এতে কিছু সময়ের মধ্যেই বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোসহ প্রায় ৪০টি গাড়ি আটকে পড়ে। এসময় ৪০ থেকে ৫০ জন হাসুয়া, রামদা, ছুরি, চাকুসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে পর্যায়ক্রমে গাড়িগুলোতে ডাকাতি চালায়। গাড়ির গেট খুলতে দেরি করায় কিছু গাড়ি ভাঙচুরও করে। এসময় পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীদের মারধর করে তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল, টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে এ তাণ্ডব।

ডাকাতির কবলে পড়া আব্দুস সালাম নামে এক ইসলামী বক্তা ফেসবুকে দেওয়া ভিডিও বক্তব্যে বলেন, কিছুক্ষণ আগে এই সড়কে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে গাড়িগুলোতে ডাকাতি করেছে। হুট করে আমাদের গাড়িতে আক্রমণ করে ডাকাত দলের সদস্যরা। বারবার গাড়িতে আঘাতের পর আমরা ড্রাইভারকে গেট খুলে দিতে বললে ডাকাতরা ঢুকে ড্রাইভারের গলা ও পেটে চাকু ধরে। একইভাবে অন্যদেরও জিম্মি করে সব লুটে নিয়ে যায়। আমরা বলেছি, ভাই যা আছে সব নেন, কিন্তু কাউকে আঘাত কইরেন না। আমাদের গাড়িতে কাউকে আঘাত করেনি। অনুরোধ করায় আমার দুটি মোবাইল ফেরত দিয়ে যায়।

তিনি বলেন, একটি মাইক্রোতে করে দেশে ফিরছিলেন এক প্রবাসী। ওই গাড়িতে আক্রমণ করে কয়েকজনকে মারধর করে সব লুটে নিয়ে গেছে। একইভাবে সব গাড়িতে পর্যায়ক্রমে ডাকাতি চালায়। গাড়ি ভাঙচুর ও অনেককেই মারধর করে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবু বলেন, ঘটনা শুনেছি। এখনো বিস্তারিত জানি না। তবে ওই রাস্তাটি খুব বেশি ব্যস্ত না হলেও বেড়া-বাঘাবাড়ি হয়ে ঢাকায় যাওয়ার জন্য বেশকিছু গাড়ি ওই রাস্তা দিয়ে যায়। এটি ডাকাতরা জেনেই গাছ ফেলে ডাকাতি করেছে।

সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ পাঠানো হয়। সুনির্দিষ্ট করে সংখ্যা বলতে না পারলেও কয়েকটি গাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এনজে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বগুড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২, প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ
  • টাঙ্গাইলে পিকনিকের বাসে ডাকাতির ঘটনায় আরও ২ জন গ্রেপ্তার 
  • সাভারে চলন্ত বাসে ডাকাতি, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংঙ্কার লুট
  • ‘চিকিৎসক হিসেবে সম্মান চাই’
  • যশোরে ট্রাফিককে মারধর করায় ছাত্রদল নেতা আটক
  • তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ইফতার সামগ্রী বিতরণ মামুন মাহমুদের 
  • গোদনাইল মেঘনা ডিপোতে আসলাম মন্ডলের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ৪
  • বন্দরে বিধবা নারীর ভিটেবাড়ি দখল করে উচ্ছেদ, প্রতিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন
  • শরীয়তপুরে ডাকাতির ঘটনায় আরো এক জনকে গণপিটুনির পর পুলিশে সোপর্দ
  • পাবনায় সড়কে গাছ ফেলে ৪০ গাড়িতে ডাকাতি