ক্রিকেটের ‘রুদ্ধদ্বারে’ আফগান নারীদের ধাক্কা
Published: 29th, January 2025 GMT
বিশ্ব ক্রিকেটের ফ্র্যাঞ্চাইজি বাজারে আফগানদের চড়া মূল্যের চাহিদা সবারই জানা। আইপিএল থেকে বিগব্যাশ, বিপিএল থেকে এসএ ২০– সর্বত্রই রশিদ খান, গুরবাজদের দাপুটে সব উপস্থিতি। তাদের অনেকেই থাকেন দুবাই-আবুধাবিতে। গত এক দশকে আফগান ক্রিকেটের উত্থান বিশ্ব ক্রিকেটে প্রবলভাবে প্রশংসিত।
কিন্তু তাদের নারী দল! ছেলেদের মতো আফগান মেয়েদেরও সম্ভাবনা ছিল। ২০২০ সালে সেই দেশের বোর্ড ২৫ নারী ক্রিকেটারকে কেন্দ্রীয় চুক্তিতেও এনেছিল। পরের বছর আইসিসি তাদের টেস্ট এবং ওয়ানডে মর্যাদাও দিয়েছিল। কিন্তু তার পরই সে দেশে তালেবান সরকার আসার পর নারীদের খেলাধুলার ওপর নিষেধাজ্ঞা চলে আসে।
তার পরই সেই নারী ক্রিকেটারদের কেউ চলে যান কানাডায়, কেউ পাড়ি জমান অস্ট্রেলিয়ায়। এত বছর পর নির্বাসনে থেকেই তারা ফের একসঙ্গে হয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের জংশন ওভালে কাল সকালে ক্রিকেটীয় যাত্রার নতুন সূচনা করতে যাচ্ছেন। যেখানে তারা ‘আফগানিস্তান নারী একাদশ দল’ নামে ম্যাচ খেলবেন ‘ক্রিকেট উইদাউট বর্ডারস’ নামে একটি দলের বিপক্ষে।
ম্যাচটি খেলার সুযোগ পেয়ে নতুন করে যেন স্বপ্ন দেখেছেন আফগান নারী ক্রিকেটাররা। ‘মনে হচ্ছে, আমরা একটা ইতিহাস সৃষ্টি করতে যাচ্ছি। এই প্রথমবারের মতো আফগানিস্তানের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছি। হতে পারে আমাদের এটি প্রীতি ম্যাচ, তবে আমাদের জন্য তা অনেক বড় কিছু। আমরা শুধু দেখিয়ে দিতে চাই, আফগান মেয়েরাও ক্রিকেট খেলতে পারে।’
মেলবোর্নের সংবাদ সম্মেলনে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন বিনাহাফসা হাশামি। ‘আমরা শুধু বন্ধ একটা দরজা খুলে দিতে চাই, যেখান একটি ম্যাচ খেলে আমরা বিশ্বকে বলতে চাই– আমরা হারিয়ে যাইনি, আমরা এখানে আছি।’ সোফিয়া ইউসুফজাইয়ের সুরও আবেগতাড়িত।
মূলত অস্ট্রেলিয়ার ক্যানভেরা, মেলবোর্নে থাকা আফগান শরণার্থীদের মধ্যে থেকে দলটি গড়া হয়েছে। আফগান নারী এই দলটির নবযাত্রায় তাদের পাশে পাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডকে।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী নিক হকলি এই ম্যাচটিকে আফগান নারীদের নতুন আশার বলে মনে করছেন। ‘আমি মনে করি, এটা প্রথম ধাপ। ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের সহকর্মীরা অ্যাশেজ দেখতে আসছেন এবং আফগান এই নারী ক্রিকেটারদের ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া উভয় দেশের পক্ষ থেকে সমর্থনের ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছে। এই ম্যাচটি শুধু একটি খেলা নয়, বরং এটি নারীদের জন্য আরও সুযোগ তৈরির একটি বার্তা।’
অস্ট্রেলিয়া বরাবরই আফগান নারী ক্রিকেটের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছে। আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, পূর্ণাঙ্গ সদস্য দেশে অবশ্য পুরুষ ক্রিকেটের পাশাপাশি নারী ক্রিকেটেরও জাতীয় দল থাকতে হবে। সেটা আফগানিস্তানে না থাকায় অস্ট্রেলিয়া দল আফগানিস্তানের সঙ্গে সব দ্বিপক্ষীয় ক্রিকেটীয় সম্পর্ক বাতিল করেছে। তারা কেবল আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টে আফগানদের বিপক্ষে খেলে থাকে।
ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড থেকেও অলিখিত নিষেধাজ্ঞা রয়েছে আফগান ক্রিকেটে। এবার ক্রিকেটারদের আন্তর্জাতিক সংস্থা ডব্লিউসিএ থেকেও আফগান নারী ক্রিকেটারদের পাশে থাকা আহ্বান জানানো হয়েছে।
সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী টম মোফাট মনে করেন, আইসিসির এই ব্যাপারে সক্রিয় হওয়া উচিত। ‘আফগান নারী ক্রিকেটারসহ সব ক্রিকেটারের অধিকার সুরক্ষিত করার দায়িত্ব আইসিসি এবং সংশ্লিষ্ট বোর্ডের। তাদের এই ব্যাপারে অবশ্যই আরও সক্রিয় হতে হবে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আফগ ন স ত ন ক র ক ট দল আফগ ন স ত ন আফগ ন ন র আইস স
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!
ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন
গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’