বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) শ্রেণিকক্ষ সংকটসহ বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে দুইটি ভবনে তালা ঝুলিয়েছেন ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অফিস ও ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের ভবনে তালা লাগিয়ে দেন তারা। পরে শিক্ষকদের আশ্বাসে দুপুর ২টার পরে তালা খুলে দেন শিক্ষার্থীরা।

ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, তাদের বিভাগের জন্য বরাদ্দ দেওয়া ভবনে চারটি বর্ষের পাঠদান চললেও শ্রেণিকক্ষ রয়েছে তিনটি। এতদিন কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ১১৯ নম্বর কক্ষে ক্লাস নেওয়া হত। কিন্তু সম্প্রতি সেটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষের অভাবে স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। শ্রেণিকক্ষ ফাঁকা না থাকায় ক্লাস না করে বসে থাকতে হয়।

তারা আরও জানান, সমস্যার কথা জানাতে গেলে বিভাগের প্রধান অনুষদের ডিনের কাছে পাঠান। ডিন আবার বিভাগের প্রধানের কাছে পাঠান। এভাবে বারবার ঘুরতে হয়, কিন্তু সমাধান মেলে না। তাদের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য তিন দফা দাবি সম্বলিত অনুষদের ডিন বরাবর লিখিত দাবি জানিয়েছেন তারা।

তাদের দাবিগুলো হলো- দ্রুত নতুন শ্রেণিকক্ষ বরাদ্দ দিতে হবে; ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়ো ইনফরমেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংসহ তিন বিভাগের পরীক্ষা ভিন্ন সময়ে নিতে হবে; পর্যাপ্ত টেকনিশিয়ান, ল্যাব সরঞ্জাম ও শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করতে হবে।

এ বিষয়ে ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের অধ্যাপক প্রধান ড.

মো. আব্দুল আলীম বলেন, “আমাদের ভবনে তিনটি শ্রেণিকক্ষ আছে, যেখানে তিনটি বর্ষের ক্লাস চলে। আরেকটি ছোট কক্ষ আছে, সেখানে মাস্টার্সের ক্লাস হয়। কিন্তু এ বিভাগের মোট চারটি বর্ষ চলমান থাকায় শ্রেণিকক্ষের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এতদিন ১১৯ নম্বর কক্ষে ক্লাস হতো, সেটাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই ১১৯ নম্বর রুমটি আমাদের দিয়ে দিলে আমাদের সমস্যার সমাধান হবে।”

কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, “শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম সংকটের বিষয়টি নিয়ে সব বিভাগের প্রধানদের সঙ্গে বসে আলোচনা করা হবে। সবার মতামত ও পরামর্শ নিয়ে এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে। আমরা শিক্ষার্থীদের সমস্যা ও দাবিগুলো লিখিত আকারে নিয়েছি। আমরা চাই শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিয়মতান্ত্রিকভাবে হোক।”

ঢাকা/লিখন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

‘অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার দমনে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে ইতালি’

অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার প্রতিরোধ এবং আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনসহ বাংলাদেশ পুলিশের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ইতালি সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রোর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা জানান।

সাক্ষাতে আসন্ন ৫-৬ মে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাতেও পিয়ান্তেদোসির বাংলাদেশ সফর, অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার প্রতিরোধ, নিরাপত্তা খাতে পারস্পরিক সহায়তা; পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদান এবং জনশৃঙ্খলা রক্ষা ও আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকের শুরুতে রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “ইতালি বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু।” তিনি উল্লেখ করেন, ইতালিতে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার বাংলাদেশি দক্ষ কর্মী কর্মরত আছেন, যারা রেমিট্যান্স প্রেরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের মাধ্যমে এই সংখ্যাটি আরো বাড়বে এবং দুদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে।

রাষ্ট্রদূত জানান, সফরকালে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক ও প্রবাসী কল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ৫ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মানে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করা হবে এবং একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে উভয় দেশের সম্মতিক্রমে অবৈধ অভিবাসন রোধ, আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমন এবং পুলিশ বিভাগের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে ঘোষণা, সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে।

তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশ সব সময় আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে বৈধ চ্যানেলে জনশক্তি রপ্তানিতে আগ্রহী। আমরা অবৈধ অভিবাসনের বিপক্ষে এবং যারা দালালের মাধ্যমে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন) মো. শামীম খান, জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব (রাজনৈতিক-১) মো. জসীম উদ্দিন খান এবং ঢাকাস্থ ইতালি দূতাবাসের অভিবাসন সংযুক্ত কর্মকর্তা জিউসেপ্পে দি জিওভান্নি উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ