একটি গণমাধ্যমে ৩০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ১৫ জন সংবাদকর্মী প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড পাবে বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড ইস্যুর ক্ষেত্রে এমন প্রস্তাব রেখে একটি সুপারিশমালা তৈরি করেছে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর। এই সুপারিশমালা নিয়ে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।

বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান। 

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি হয়েছে। তাদের কাজ হবে বিদ্যমান নীতিমালাকে পর্যালোচনা করা যাতে গণমাধ্যমকর্মীরা আরও সহজভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারেন। 

উপপ্রেস সচিব বলেন, ২০২২ সালের নীতিমালার বেশকিছু বিষয়ে সংশোধনের সুপারিশ করা হয়েছে। যেমন আগের নীতিমালার প্রথম ধারায় বলা হয়েছিল, অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড পেতে হলে সরকারের উন্নয়ন-সাফল্য তুলে ধরতে হবে। কার্ডধারীরা বিদেশে যেতে হলে প্রধান তথ্য কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে যেতে হবে। এবার এ ধরনের ধারা বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। আগে কোনো প্রকার নিয়ম না মেনেই ফ্রিল্যান্সিং সাংবাদিকদের নামে কার্ড ইস্যু করা হয়েছে। আবার এমন গণমাধ্যম আছে যাদের ৩০-৩৫টি কার্ড ইস্যু করা হয়েছে, কিন্তু তাদের সে রকম তৎপরতা চোখে পড়েনি। লেখালেখিতে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে ফ্রিল্যান্সিং হিসেবে কার্ড পেতে পারবেন। মফস্বলের সংবাদকর্মীদেরও কীভাবে স্থানীয়ভাবে কার্ড দেওয়া যায়, সে ব্যাপারেও সুপারিশ থাকবে।

তিনি বলেন, যদি কেউ কার্ড না পেয়ে ক্ষুব্ধ হন, তাদের আপিলেরও ব্যবস্থা থাকবে। নতুন নীতিমালায় অস্থায়ী-স্থায়ী কোনো কার্ড থাকবে না। সব কার্ডের মেয়াদ হবে তিন বছর। সার্কুলেশনের ভিত্তিতে কার্ড ইস্যুর নিয়ম তুলে দেওয়া হবে। সরকার নিবন্ধিত সব গণমাধ্যমের কর্মীরাই আবেদন করতে পারবেন। 

ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব আহমদ ফয়েজ, সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি উপস্থিত ছিলেন। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘পর্যাপ্ত’ সাক্ষ্যপ্রমাণ পেয়েছে তদন্ত সংস্থা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ‘পর্যাপ্ত’ সাক্ষ্যপ্রমাণ পেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এ মামলায় যেকোনো সময় ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আজ বুধবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ তাঁর (শেখ হাসিনার) বিরুদ্ধে পাওয়া গেছে। এটা আদালতে আমরা প্রমাণ করব ইনশা আল্লাহ। সেটার ওপর বাকি তৎপরতা অব্যাহত আছে। আমরা অকাট্যভাবে প্রমাণ করব তাঁর অপরাধ।’

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা শেখ হাসিনার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করতে ব্যাপক কাজ করেছে বলেও জানান তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন এখনো হাতে আসে নাই। চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরির কাজ চলছে।’

ট্রাইব্যুনাল আইন অনুযায়ী, কোনো মামলায় তদন্ত শেষে প্রথমে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত সংস্থা। এরপর পর্যালোচনা ও যাচাই শেষে সেই প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়। প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার পর তা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আকারে ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেন চিফ প্রসিকিউটর বা তাঁর কার্যালয়।

কবে নাগাদ শেখ হাসিনার মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হবে, তা জানতে চাইলে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ফরমাল চার্জ (আনুষ্ঠানিক অভিযোগ) দাখিলের প্রক্রিয়া চলছে এখন। …যেকোনো সময় দাখিল হয়ে যাবে।’

গণ–অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে প্রথম মামলা (বিবিধ মামলা বা মিস কেস) হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। যেখানে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও আসামি করা হয়েছে।

এ মামলায় আগামী ২০ এপ্রিল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। একটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গুম ও খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে, অন্যটিতে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের হত্যা-নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ