হায়দার আলীর চার ছক্কার ঝড় সীমানায় দাঁড়িয়ে দেখছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বিসিবির ইনডোরের আউটডোরে ব্যাটিং অনুশীলন শেষে মাঠ দিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরছিলেন। চিটাগং কিংসের জয়ের পরপরই দ্রুত ব্যাট-প্যাড রেখে মাঠের কয়েক চক্কর কাটেন জাতীয় দলের অধিনায়ক। কিন্তু অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় তাকে। গ্যালারি থেকে শুনতে হয় ‘ভুয়া-ভুয়া’ দুয়োধ্বনি। এর আগে একই কাণ্ডের শিকার চট্টগ্রামে হতে হয়েছিল লিটন কুমার দাসকে।

সাম্প্রতিক সময়ে শান্ত ফর্মে নেই। ফর্মে তো নেই-ই, ফরচুন বরিশাল একাদশে সুযোগ হচ্ছে না তার। অথচ সামনে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মতো বড় আসর। বরিশালের কম্বিনেশনের কারণে শান্ত সুযোগ পাচ্ছে না। শুরুতে সুযোগ পেলেও তা কাজে লাগাতে পারেননি। ৫ ম্যাচে রান করেছেন ৫৬। সর্বোচ্চ ৪১। বাকি চারটিতেই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পারেননি। তার ফর্ম নিয়ে রীতিমত হচ্ছে প্রবল সমালোচনা।

ওয়েস্ট ইন্ডিজে মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্বেই তিন ওয়ানডে খেলেছিল বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে বিপিএলই একমাত্র ক্রিকেটারদের প্রস্তুতির জায়গা। নিজেদের প্রস্তুতি নিয়ে মিরাজ আশার কথা শোনাতে পারলেন না, ‘‘আমাদের বেশ কিছু খেলোয়াড় খেলছে। অনেকে ভালো খেলছে। অনেকে ভালো করতে পারছে না। আমার কাছে মনে হয় আরও কিছু জায়গায় ভালো করতে হবে। আত্মবিশ্বাসটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর এই প্রতিযোগিতা যদি ভালো করতে পারে, ভালোভাবে শেষ করতে পারে, রান করতে পারে তাহলে ভালো একটি আত্মবিশ্বাস পাওয়া যাবে প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের।’’

আরো পড়ুন:

শততম ওয়ানডেতে মিরাজের নেতৃত্বের অভিষেক

প্রস্তুতি ভালো ছিল, দিনটা আমাদের ছিল না: শান্ত

যে আত্মবিশ্বাস পাওয়ার কথা মিরাজের কণ্ঠে সেখান থেকে অনেক দূরে শান্ত। প্লে’ অফ নিশ্চিত করা শান্তর আজও সুযোগ হয়নি ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে। অন্য দলের পরিকল্পনা, রণ কৌশল নিয়ে মিরাজ মন্তব্য করতে চাইলেন না। তবে ম্যাচ খেলার সুযোগ না পেলে মনোবল হারাবে তা বলতে দ্বিধা করলেন না, ‘‘দেখেন, আপনি যেটা বললেন সেটা সম্পূর্ণ টিম কম্বিনেশন বা টিমের যারা আছে তারাই ভালো বলতে পারবে। যেহেতু ও ম্যাচ খেলছে না, এটা অবশ্যই একটা আত্মবিশ্বাসের ব্যাপার। মোরাল ডাউন হবে একটা খেলোয়াড়ের।’’

তবে শান্তকে নিয়ে বেশ আশাবাদী মিরাজ, ‘‘ও এটা কীভাবে নিজেকে মানসিকভাবে সেট করেছে, কিভাবে মানিয়ে নিয়েছে এবং এখান থেকে কিভাবে উন্নতি হবে সেই সিদ্ধান্ত ও-কেই নিতে হবে। ওর সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রথম দিকে সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু যে ধরনের খেলায়াড় ওই অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারেনি। কিন্তু আমি আশা করি যে, এখনও অনেক ম্যাচ আছে বিপিএলে। যখন খেলবে, পারফর্ম করবে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে যদি একটু দুইটা রান করতে পারে তাহলে ওরও আত্মবিশ্বাস ভালো থাকবে।’’

২০১৭ সালে সবশেষ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশ সেমিফাইনাল খেলেছিল। এবার কেমন করবে বাংলাদেশ? এবারও কী সেমিফাইনালের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ? মিরাজ সেই আশাই দেখালেন, ‘‘আমরা তো খেলেছিলাম ২০১৭ সালে সেমিফাইনাল ইংল্যান্ডে। অবশ্যই আশা করি যে সেমিফাইনাল খেলবো।’’

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের গ্রুপে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকা। দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে খেলার পর পাকিস্তানে গিয়ে দুই ম্যাচ খেলবে দল। আসরের চ্যালেঞ্জ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে মিরাজ বলেছেন, ‘‘দুইটা দুইরকম কন্ডিশন। দুবাইয়ে আমরা যেখানে খেলেছিলাম, ওখানে একটু কন্ডিশনটা অন্যরকম। উইকেটটা অন্যরকম থাকে, ওয়েদার একটু গরম থাকবে, উইকেট অনেক সময় বোলিংও এডভান্টেজ থাকে, ব্যাটিংও থাকে।’’

‘‘রাওয়ালপিন্ডিতে অবশ্যই আমাদের জন্য বড় একটা সুযোগ থাকবে। যেহেতু আমরা পাকিস্তানে দুটা টেস্ট ম্যাচ একই মাঠে খেলেছি। ওই কন্ডিশনটা আমরা জানি, ওখানে উইকেটটা কী রকম আছে। এটা একটা বাড়তি আত্মবিশ্বাস দেবে প্রত্যেকটা খেলোয়াড়কে। বিশেষ করে আমাকে অনেক আত্মবিশ্বাস দেবে যেহেতু আমি ম্যান অব দ্য সিরিজ হয়েছিলাম ওখানে। উইকেট অনেক ভালো থাকবে। অনেক চ্যালেঞ্জিং থাকবে বোলারদের জন্য। অবশ্যই আমরা বোলাররা ওটা চিন্তা করবো যে কীভাবে ওখানে ভালো করতে পারি।’’- যোগ করেন মিরাজ 

ঢাকা/ইয়াসিন/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

সাতকানিয়ায় ‘ডাকাত সন্দেহে’ গণপিটুনিতে নিহত ২, গুলিবিদ্ধ ৪ বাসিন্দা

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ‘ডাকাত সন্দেহে’ গণপিটুনিতে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। এর আগে ওই যুবকদের গুলিতে স্থানীয় চার বাসিন্দা আহত হন। সোমবার রাতে সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত যুবকদের পরিচয় তাৎক্ষণিক নিশ্চিত করতে পারেননি পুলিশ। গুলিবিদ্দ স্থানীয় চার বাসিন্দা হলেন ওবায়দুল হক (২২), মামুনুর রশিদ (৪৫), নাসির উদ্দিন (৩৮) ও আব্বাস উদ্দিন (৩৮)। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, আটটি গুলির খোসা এবং একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা জব্দ করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে নয়টা থেকে দশটার মধ্যে চারটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে একদল যুবক ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় গিয়ে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করতে থাকেন। এ সময় স্থানীয় মসজিদে ডাকাত পড়েছে এমন প্রচারের পর লোকজন জড়ো হয়ে অটোরিকশায় করে আসা দুই যুবককে আটক করে পিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই যুবক নিহত হন।

এক যুবকের লাশের পাশ থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করেছে পুলিশ। দুই যুবককে আটকের আগে গুলির ঘটনায় আহত চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল ইসলাম, সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দলসহ সাতকানিয়া থানা পুলিশের সদস্যরা।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ডাকাত সন্দেহে মসজিদের মাইকে প্রচারের পর স্থানীয় বাসিন্দাদের পিটুনিতে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। এখনো ওই দুই যুবকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ