সাভারে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে দ্বিতীয় দিন বিক্ষোভ ট্যানারি শ্রমিকদের
Published: 29th, January 2025 GMT
সাভারের হেমায়েতপুরের হরিণধরায় চামড়াশিল্প নগরের প্রধান ফটক সংলগ্ন সড়কে ট্যানারি শিল্পের শ্রমিকদের জন্য পাঁচটি গ্রেডে সরকার ঘোষিত নূন্যতম মজুরি বাস্তবায়নের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন শ্রমিকেরা।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের ব্যানারে এসকল কর্মসূচি পালন করেছেন তারা।
বিক্ষোভকারী শ্রমিকেরা জানান, সকাল ১০ টার দিকে সাভারের চামড়া শিল্প নগরীর প্রধান ফটক সংলগ্ন সড়কে বিভিন্ন ট্যানারির শতাধিক শ্রমিক অবস্থান নেন। পরে তারা সেখানে কর্মবিরতিসহ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। দুইঘণ্টা কর্মসূচি পালন শেষে বেলা ১২টার দিকে তারা চলে যান।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া নজরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের (ট্যানারি শিল্পের শ্রমিকদের) জন্য পাঁচটি গ্রেডে সরকার নূন্যতম মজুরির প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। কিন্তু এখনো সেটি বাস্তবায়ন হয়নি। এখন দুই ঘণ্টার জন্য কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করতেছি। এরপরও যদি বাস্তবায়ন করা না হয় তাহলে আধাবেলা (অর্ধদিবস), তারপরও না হলে কারখানা বন্ধ করে দিব। সরকার যে প্রজ্ঞাপন জারি করছে তা বাস্তবায়ন করে ছাড়ব।”
শ্রমিক হাসিনা বেগম বলেন, “আমার বেতন ১০ হাজার টাকা। বহুদিন ধরে আমাদের বেতন বাড়ানো হয় না। এই বেতন দিয়া সংসার চলে না, জীবন চলে না। যতদিন মালিকেরা আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না করবেন, ততদিন আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, “সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ঐক্যমতের ভিত্তিতে সরকার ট্যানারি শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন। মালিকপক্ষের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে তারা যেন দ্রুত এটি বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন।”
তিনি আরো বলেন, “উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বাস্তবায়নের ঘোষণা না দেওয়া হলে সংকট আরো বাড়বে। শ্রমিকদের কাছেও আমাদের অনুরোধ থাকবে তারা যেন শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করেন।”
ঢাকা/আরিফ/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সরস্বতি পূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জে জমজমাট প্রতিমার হাট
আগামী ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা। এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্নস্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এখন চলছে প্রতিমার বেচাকেনা। এবার প্রতিমার দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রীয়া থাকলেও কারিগররা বলছেন, জিনিস পত্রের দাম বাড়ায় প্রতিমার দামও কিছুটা বাড়তি।
পঞ্জিকা মতে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে আশীর্বাদ লাভের আশায় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা করে থাকেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। শুধু বাড়িতেই নয় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। দেবীর পায়ে অঞ্জলী দিয়ে অনেক শিশুর শিক্ষাজীবন শুরু হবে।
এ পূজার প্রধান অনুসঙ্গ হলো প্রতিমা। ফলে জেলা শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ী, সদর উপজেলার সাতপাড়, বৌলতলী, কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ, ভাঙ্গারহাট, ঘাঘর বাজারসহ অনেক স্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এসব হাটে আনা এক একটি প্রতিমা প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে।
আরো পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে রাসপূর্ণিমা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
পুটিয়ার কৃষ্ণপুরে চলছে কাত্যায়নী পূজা
এ বছর ক্রেতাদের মধ্যে প্রতিমার দাম নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ক্রেতাদের অনেকেই বলছেন, দাম সাধ্যের মধ্যে আবার কেউবা বলছেন দাম আগের চেয়ে বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে, এর মধ্যেও বিভিন্ন বয়সের মানুষ এসব হাট থেকে কিনে নিচ্ছেন পছন্দমতো প্রতিমা। হাটে শুধু প্রতিমাই নয় বিক্রি হচ্ছে ফুল, মালা, মিষ্টিসহ পূজার অন্যান্য উপকরণও।
রীতি অনুযায়ী বিদ্যার দেবী সরস্বতি পূজার পাশাপশি বসন্ত পঞ্চমীতে গণেশ, লক্ষ্মী, নবগ্রহ, বই, খাতা, কলম ও বাদ্যযন্ত্রের পূজা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে শীত ঋতুর অবসান হয়ে বসন্ত ঋতুর আগমন বার্তা ঘটবে।
প্রতিমা কিনতে আসা উত্তম সাহা বলেন, “শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীতে সরস্বতী প্রতিমার হাট বসেছে। এবার বাড়িতে পূজা করাব। ছেলেকে নিয়ে হাটে প্রতিমা কিনতে এসেছি। ঘুরে ফিরে পছন্দমত প্রতিমা কিনেছি। আমি মনে করি, পূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে।”
অপর ক্রেতা নারু গোপাল বলেন, “প্রতিবছর এখানে প্রতিমার হাট বসে। এবে এবার প্রতিমার আমদানি একটু কম। তারপরেও দেখে বুঝে দরদাম করে একটি প্রতিমা কিনেছি। এবার আমাদের বাড়িতে সরস্বতী পূজা হবে।”
অপর ক্রেতা পরিমল চন্দ্র ঢালী বলেন, “এক একটি প্রতিমা ২০০ তেকে ১০ হাজার টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হচ্ছে। হাটে এসে প্রতিমা দেখছি। পছন্দ হলে কিনে নিয়ে যাব। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিমার দাম একটু বেশি।”
গোপালগঞ্জ শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীর হাটে প্রতিমা বিক্রি করতে আসা উত্তম পাল বলেন, “এবার ২০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি। ইতোমধ্যে ১০টি বিক্রি করা হয়েছে। তবে এবার ক্রেতার সংখ্যা একটু কম। আশা করি, বাকি দুই দিনও বেচাকেনা হবে।”
কার্ত্তিক পাল বলেন, “কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ গ্রাম থেকে ৩০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি বিক্রির জন্য। চার থেকে পাঁচটি প্রতিমা বিক্রি করেছি। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, তাতে প্রতিমা বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ প্রতিমা তৈরির অনুসঙ্গের যে দাম তাতে খরচও উঠছে না।”
স্বপন পাল নামে এক বিক্রেতা বলেন, “প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহৃত ছোন, রংসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের দাম প্রতিবছর বেড়েই চলছে। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, সেই দামে বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তারপরেও বাব-দাদার পেশা আমরা ধরে রেখেছি।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ