‘অনলাইনে জুয়া খেলার’ এক সঙ্গীর কাছে নিজের ক্ষমতা জাহির করতে পিরোজপুরের নাজিরপুরে বিএনপি নেতা মো. মন্টু হাওলাদার বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে পুলিশ নাম শুনে মামলা নেয়নি। এমনকি ডিসি, থানা ও ফাঁড়ি সব বুক করে ফেলছি।’ বিএনপি নেতার এমন বক্তব্যের একটি অডিও ভাইরাল হয়েছে।   

মো. মন্টু হাওলাদার(৪৫) নাজিরপুর উপজেলার দেউলবাড়ি দোবরা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক।

ভাইরাল হওয়া অডিওতে বিএনপি নেতাকে বলতে শোনা যায়, আমাগো কথা ছাড়া পুলিশ আইলে বাইন্দা থুমু জায়গার উপর। আমার বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে পুলিশ নাম শুনে মামলা নেয়নি। এমনকি ডিসি, থানা ও ফাঁড়ি সব বুক করে ফেলছি।’

অনলাইনে জুয়া খেলা নিয়ে দ্বন্দ্বে সম্প্রতি হাউল ও তার ভাই কাউয়ুম নামের দুই যুবককে পিটিয়ে আহত করেন বিএনপি নেতা মন্টু। এ নিয়ে ভুক্তভোগীরা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
 
অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে মন্টু হাওলাদারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু হাসান খান জানান, মন্টুর দলীয় কোনো পদ নেই।

নাজিরপুর থানার ওসি মো.

মাহমুদ আল ফরিদ ভূঁইয়া বলেন, অভিযুক্ত মন্টুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

ফিতরা কীভাবে হিসাব করব

 রমজান পরবর্তী ঈদের অন্যতম ইবাদত হলো ‘ফিতরা’ দেওয়া; মানে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বা খাদ্য দান করা। পরিভাষায় একে বলে, ‘সদাকাতুল ফিতর’, অর্থাৎ ‘ফিতরের সদকা’। কখনো ‘যাকাতুল ফিতর’ও বলা হয়। ফিতর মানে নাশতা বা সকালের খাবার, বা যা খেয়ে রোজার সমাপ্তি করা হয়। রোজাদার ব্যক্তি দীর্ঘ এক মাস পরে অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের মতো খাবার খাচ্ছেন, হতে পারে রোজা পালনের সময় কোনো ত্রুটি বিচ্যুতি ঘটে গেছে, একই সঙ্গে সমাজের দরিদ্র মানুষও যেন ঈদ উৎসবে অংশ নিতে পারেন, ইসলামি চিন্তাবিদদের মতে, এ-কারণেই ‘ফিতরার’ বিধান রাখা হয়েছে। এমনকি এই ঈদের নামকরণ করা হয়েছে ‘ঈদুল ফিতর’ বা ফিতরের ঈদ নামে। আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলিম নারী-পুরুষ এবং ছোট-বড় সবার জন্য নির্বিশেষে মহানবী মুহাম্মদ (সা.) ‘ফিতরা’ বাধ্যতামূলক করেছেন।

 ফিতরা যেভাবে পরিমাপ করা হয়

 ফিতরা নির্ধারণের ক্ষেত্রে যে-পাঁচটি খাদ্য-পণ্য বিবেচনায় নেওয়া হয়, তা হলো, আটা, যব, কিশমিশ, খেজুর ও পনির। এসব পণ্যের যে-কোনো একটি দ্বারা ফিতরা প্রদান করা যাবে। ফিতরার পরিমাপ হলো, গম ও চালের ক্ষেত্রে ‘অর্ধ সা’ এবং বাকি চারটি পণ্যের ক্ষেত্রে ‘এক সা’ নির্ধারণ করা হয়েছে। ‘সা’ হলো প্রাচীন আরব পরিমাপের একক। কেজি ও গ্রাম হিসেবে ‘এক সা’ সমপরিমাণ ৩ কেজি ৩শ’ গ্রাম এবং ‘অর্ধ সা’ সমপরিমাণ ১ কেজি ৬শ ৫০ গ্রাম।

আরও পড়ুনরমজানে ৬টি অভ্যাস১০ মার্চ ২০২৫

ফিতরা কার জন্য বাধ্যতামূলক

 প্রতিটি সচ্ছল মুসলিম ব্যক্তি, যার ওপর জাকাত ওয়াজিব, ফিতরা তার ওপর ওয়াজিব বা বাধ্যতামূলক। তবে এটি নিজের জন্য দেওয়ার পাশাপাশি তার ওপর কেউ যদি নির্ভরশীল থাকে তাদের জন্যও দিতে হবে। যেমন, মা, বাবা, স্ত্রী, সন্তান। এমনকি তার ওপর নির্ভরশীল পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্যও ফিতরা দেবেন।

 ফিতরা কখন দিতে হবে

ফিতরা প্রদান করতে হয় ঈদুল ফিতর নামাজের আগে। পরে দিলেও তা ‘সদকা’ হিসেবে আদায় হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে সওয়াব তুলনামূলক কম বলা হয়।

আরও পড়ুনরোজার নিয়ত কখন করবেন১০ মার্চ ২০২৫

জাকাত ও ফিতরার পার্থক্য

জাকাত ও ফিতরার মধ্যে একটি মৌলিক পার্থক্য আছে। জাকাতের বিধানের সঙ্গে রমজান বা ঈদের বিশেষ কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু ফিতরার সঙ্গে রমজান ও ঈদের বিশেষ সম্পর্ক আছে। সম্পদের পরিমাণ যত বেশি থাকে জাকাতের পরিমাণও তত বেশি হয়। কিন্তু ফিতরার ক্ষেত্রে বিষয়টি সে রকম নয়। ফিতরা নির্ধারিত একটি অঙ্ক, সম্পদের পরিমাণ হ্রাস-বৃদ্ধির সঙ্গে ফিতরার পরিমাণ ওঠা-নামা করে না।

ফিতরা কারা পাবে

ইসলামের দৃষ্টিতে যিনি জাকাত পাওয়ার উপযুক্ত তিনি ফিতরা পাওয়ার ক্ষেত্রেও উপযুক্ত হবেন।

বাংলাদেশে চলতি বছর জনপ্রতি সর্বোচ্চ ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৮০৫ টাকা এবং সর্বনিম্ন ১১০ টাকা। এই ফিতরা নির্ধারণ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রতিটি বিভাগ থেকে আটা, যব, কিশমিশ, খেজুর ও পনির এই পাঁচটি পণ্যের বাজারমূল্য সংগ্রহ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। এরপর এসব মূল্যের ওপর ভিত্তি করে ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে।

 ১. গম বা আটা ফিতরা দিলে ১ কেজি ৬শ ৫০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ১১০ টাকা দিতে হবে।

২. যব দিয়ে আদায় করলে ৩ কেজি ৩শ’ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ৫৩০ টাকা।

৩. কিশমিশ দিয়ে আদায় করলে ৩ কেজি ৩শ’ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ১৯৮০ টাকা।

৪. খেজুর দিয়ে আদায় করলে ৩ কেজি ৩শ’ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২৩১০ টাকা।

৫. পনির দিয়ে আদায় করলে ৩ কেজি ৩শ’ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২৮০৫ টাকা।

সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আব্দুল আজিজ আল-শেখ বলেছেন, ফিতরায় খাদ্যপণ্য দেওয়া উচিত। অর্থ আকারে না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সৌদি গেজেট পত্রিকায় তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘যাকাত-আল-ফিতর’ খাদ্য হিসেবে দেওয়া নবীজি (সা.) এর সুন্নত।

আরও পড়ুনযাদের জাকাত দেওয়া যাবে০৭ মার্চ ২০২৫

রোজা পালন করার সময় মানুষ এমন কিছু ছোটখাটো ত্রুটিবিচ্যুতি করতে পারে যার জন্য তার রোজাকে মাকরুহ করে ফেলে, যেমন কোনো অশ্লীল কথা বলে ফেলেছে। ফিতরার মাধ্যমে রোজা পরিশুদ্ধ হয়। ফিতরার আরেকটি উদ্দেশ্য হচ্ছে ঈদের আগে দরিদ্র মানুষের জন্য আহারের ব্যবস্থা করা বা তাদেরকে আর্থিকভাবে সাহায্য করা। যাতে তারা এই অর্থ দিয়ে ঈদের দিন উদ্‌যাপন করতে পারে।

আরও পড়ুনজীবনজুড়ে রমজান২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফিতরা কীভাবে হিসাব করব