চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে পুলিশ সদর দপ্তরের সামনে অবস্থান
Published: 29th, January 2025 GMT
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ‘অবৈধভাবে চাকরিচ্যুত’ সকল পুলিশ সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি চলছে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় পুলিশ সদর দপ্তরের সামনে চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্যরা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। এ সময় চাকরি ফিরে পেতে নানান ধরনের স্লোগান দিচ্ছেন তারা।
অবস্থান কর্মসূচি পালন করা চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য রাজু আহমেদ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘‘আমরা গত ছয় মাস ধরে চাকরি ফিরে পাওয়ার জন্য দাবি জানিয়ে আসছি। এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি নেই। আমাদের অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে অনুরোধ, আমাদের চাকরিতে পুনর্বহাল করুন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা পুলিশ সদর দপ্তরের সামনে থেকে যাব না।’’
তারা নিম্নোক্ত দাবি তুলে ধরেন
১.
২. ‘স্বৈরাচারী সরকারের’ আমলে পুলিশ বাহিনীর বেশিরভাগ সিনিয়র কর্মকর্তা পুলিশ বাহিনীকে ভয়ঙ্কর দানবে পরিণত করতে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন মামলা দিয়ে চাকরিচ্যুত করেছে।
৩. বিভাগীয় মামলা তদন্তের ক্ষেত্রে ন্যায়সঙ্গত কোনপ্রকার প্রসিডিউর অনুসরণ করেনি।
৪. মিথ্যা সাক্ষ্য গ্রহণসহ সকল কিছুতেই তাদের পক্ষের একতরফা নীতি অনুসরণ করেছে। তারা এমনভাবে মামলা সৃজন করেছে যেন, আদালত থেকেও কোনভাবে বিবাদী নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে না পারে।
৫. বিজ্ঞ আদালত থেকে রায় পাওয়ার পরও আমাদের চাকরিতে পুনর্বহাল করেনি।
৬. স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল ও অন্যান্য অনুমোদনহীন হাসপাতাল থেকে ডোপ টেস্টের মাধ্যমে নিরীহ পুলিশ সদস্যদের চাকরিচ্যুত করেছে। বেশিরভাগ চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য ঐদিনই ঢাকা মেডিকেল ও পিজি হাসপাতাল থেকে ডোপ টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট জমা দিলেও তা গ্রহণ করেনি।
৭. ডোপ টেস্টে যারা মোটা অংকের টাকা ঘুষ দিয়েছে বা যারা স্বৈরাচারী সরকারের লোক ছিলেন, তাদের চাকরিতে বহাল রেখেছেন। আর যারা টাকা দিতে পারেনি, তাদের চাকরিচ্যুত করেছেন।
৮. যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে কমেন্ট করেছেন, তাদের অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করেছেন।
৯. বিগত স্বৈরাচারী দোসরদের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে কিছু পুলিশ সদস্যকে চাকরিচ্যুত করতে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে মাদক ও অস্ত্র দিয়ে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দিয়েছেন।
১০. পুলিশ বাহিনীর কিছু অসাধু কর্মকর্তা নিজেদের পরিচিত লোকের মাধ্যমে মিথ্যা, ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়ে অসংখ্য পুলিশ সদস্যকে চাকরিচ্যুত করেছেন।
১১. ২০০৭ সালে সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ বিভাগীয় মামলার ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন শাস্তি প্রদানের প্রজ্ঞাপন জারি করেন, কিন্তু স্বৈরাচারী সরকারের দোসরার আওয়ামী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে ছোটখাটো অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি চাকরিচ্যুত করেছেন।
১২. অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার এম সাখাওয়াত হোসেন মানবিক বিবেচনায় সকল পুলিশ সদস্যকে পুনর্বহালের আদেশ দিলেও, পরে স্বৈরাচারী সরকারের নিয়োজিত দোসররা তা বাস্তবায়নে বাধা দেন।
১৩. অনেক পুলিশ সদস্যকে চাকরিচ্যুত করার পর যদি বিজ্ঞ আদালতে কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চায়; তাহলে গুম-খুনের হুমকি দিয়েছেন। এসবের ভয়ে অনেক পুলিশ সদস্য আদালতে মামলা দায়ের করতে পারেনি।
১৪. অনেক পুলিশ সদস্যকে জোরপূর্বক অথবা স্বাক্ষর জাল করে চাকরি হতে স্বেচ্ছায় অবসর বা বাধ্যতামূলক অবসর গ্রহণ করতে বাধ্য করেছে।
১৫. পুলিশ প্রধান পি, আর, বি ৮৮৪ প্রবিধান মতে সকল চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্যকে পুনর্বহালের ব্যবস্থা গ্রহণ করার ক্ষমতা থাকলেও বিগত স্বৈরাচারী দোসরদের বাধার কারণে তা প্রয়োগ হচ্ছে না।
চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্যদের অবস্থান কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিএমপি রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, ‘‘চাকরি ফিরে পাওয়ার জন্য চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্যরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। আমরা তাদের বলেছি আলোচনায় বসার জন্য। কিন্তু তারা যেতে চাচ্ছে না।’’
রায়হান/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ কর চ য ত কর ছ ন দ র চ কর ত সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!
ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন
গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’