‘গানটা না থাকলে রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য কতটা উঁচু হতো আমার ধারণা নেই’
Published: 29th, January 2025 GMT
ভারতীয় বাংলা গানের শ্রোতাপ্রিয় সংগীতশিল্পী অঞ্জন দত্ত। অভিনয়, গান, পরিচালনা— সবক্ষেত্রে চর্চিত তিনি। তাকে নিয়ে ভক্তদের উৎসাহ অন্তহীন। অঞ্জন দত্ত কখনো বিশেষ রাখঢাক করে কথা বলেন না। এবার পপুলার আর্ট, রবীন্দ্রনাথের কাজ, সাহিত্য নিয়ে নিজের ভাবনার কথা অকপটে জানালেন।
কিছু দিন আগে কলকাতার একটি পডকাস্টে কথা বলেন অঞ্জন দত্ত। এ আলাপচারিতায় উঠে আসে আজকালের কলকাতার প্রসঙ্গ। পপুলার আর্ট প্রসঙ্গে অঞ্জন দত্ত বলেন, “এটা হতে পারে যে, কিছু অভিনেতা থাকবেন যারা অতটা জনপ্রিয় নন। কিন্তু যে জনপ্রিয় অভিনেতা তাকে ভালো অভিনেতা হতে হবে। উত্তম কুমারকে ভালো অভিনেতা হতে হবে। তার কিছু ম্যানারিজম দিয়ে হবে না। একটা সময় পর্যন্ত হয়তো তার সেই ম্যানারিজম দেখছি। কিন্তু তারপর দেখেছি তিনি সেটার বাইরে চলে যাচ্ছেন। আলাদা কিছু দিচ্ছেন তার দর্শককে। চরিত্র দিয়ে আরম্ভ করছেন তিনি। বুঝতে পারছেন যে শুধু ম্যানারিজম দিয়ে হবে না। আমার কাছে পপুলার শিল্পকে শিল্পের উচ্চতর একটা ভাগ হতে হবে।”
পপ মিউজিক নিয়ে কথা বলতে গিয়ে টেনে আনেন কবীর সুমনকে। তার ভাষায়, “পপ মিউজিক তো কালচার চেঞ্জ করে দিল। বিটলসরা না এলে তো ওয়ার্কিং ক্লাসের গান তো হতো না। এগুলো তো জনপ্রিয়। সুমনের (কবীর সুমন) গান তো ৪ জন কবি, ৫ জন আঁতেল শুনছে না খালি; গোটা দুনিয়া শুনছে। হয়তো ভেতরের মানেটা অনেকে বুঝত পারছেন না। ‘তোমাকে চাই’-এ তোমাকেটা ‘কে’ হয়তো তা জানতে চাইছে। কিন্তু ভালো লাগছে। তাই আমার কাছে জনপ্রিয় শিল্পের মান উঁচু হওয়ার কথা। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা তো দারুণ জনপ্রিয়। সবাই পড়ছে। সমরেশ মজুমদারের বই সবাই পড়ছে। হয়তো শঙ্কর বেশি সংখ্যক মানুষ পড়ছেন। কিন্তু তাই বলে তার লেখা তো নিচু মানের লেখা নয়। দারুণ লেখন শৈলী। কত কী জানা যায় তার লেখা থেকে।”
আরো পড়ুন:
রবীন্দ্রনাথের গান নিয়ে ‘অশালীন অঙ্গভঙ্গি’, ক্ষুব্ধ শ্রীজাত
ছানার সন্দেশ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য বিশ্লেষণ করে অঞ্জন দত্ত বলেন, “বনফুল’, রমাপদ চৌধুরী সাংঘাতিক শক্তিশালী লেখক। বরং আমার মনে হয় না রবীন্দ্রনাথের গল্প, বড় গল্প খুব উঁচু মানের। গান যতটা উঁচু আর কি, সেই তুলনায়। গানটা না থাকলে রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য কতটা উঁচু হতো আমার ধারণা নেই। সেই তুলনায় সুনীল বাবু অনেক বেশি আধুনিক। এরা সবাই জনপ্রিয় লেখক। এটা হারিয়ে গেল কোথাও, যেটা আমাদের বাঙালিদের ছিল। জনপ্রিয় মানেই খারাপ জিনিস ভাবতে শুরু করল। জনপ্রিয় মানেই বাজার যেটা খাবে। কিন্তু আদতে তো শিল্প ঠিক করবে যে বাজার কী খাবে না খাবে। শিল্পী ঠিক করবে, শিল্পী সেটা তৈরি করে যেটা তার ভালো লাগে, বাজার কী খাবে সেটা ভেবে সেই কাজ করে না।”
গানের পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেও খ্যাতি কুড়িয়েছেন অঞ্জন দত্ত। ১৯৯৮ সালে ‘বড়দিন’ সিনেমা পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে অভিষেক ঘটে তার। পরবর্তীতে আরো ২১টি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। ২০১১ সালে তার নির্মিত ‘রঞ্জনা আমি আর আসবোনা’ সিনেমাটি ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে।
তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র চলচ চ ত র জনপ র য়
এছাড়াও পড়ুন:
মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ল
মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ালো ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার। সামরিক অভ্যুত্থানের চার বছর পূর্তির একদিন আগে এ ঘোষণা এলো। আজ শুক্রবার রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমের বরাতে রয়টার্স এ তথ্য জানায়।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সুচির সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতাসীন হয়। এরপর থেকে দেশটি গৃহযুদ্ধের কবলে পড়ে। সম্প্রতি বিদ্রোহীরা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বড় ধরনের জয় পাচ্ছে। দেশের অনেক এলাকা এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর নিয়ন্ত্রণে।
এদিকে জান্তা বাহিনী এ বছর নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। সমালোচকরা বলছেন, প্রক্সির মাধ্যমে জেনারেলদের ক্ষমতায় রাখার জন্য একটি প্রহসন হতে পারে এ নির্বাচন। কারণ, সেনাবাহিনী ক্ষমতা ধরে রাখতে বহুবার জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে আবারও মেয়াদ বাড়ানো পরিস্থিতির ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার চেষ্টার ইঙ্গিত দেয়।
রাষ্ট্র পরিচালিত এমআরটিভি তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে জরুরি অবস্থা বৃদ্ধির ঘোষণা প্রচার করে বলেছে, সাধারণ নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য এখনো আরও অনেক কাজ বাকি আছে। বিশেষ করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য স্থিতিশীলতা ও শান্তি প্রয়োজন।
নির্বাচনের জন্য কোনো তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি। তবে জান্তা সরকার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। যদিও তারা দেশের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার লড়াইয়ে ক্লান্ত। কারণ, তারা একাধিক ফ্রন্টে সশস্ত্র বিদ্রোহকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর শাসন শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটি গভীর অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এক সময় মিয়ানমারের অর্থনীতি আন্তর্জাতিক বাজারে একটি প্রতিশ্রুতিশীল শক্তি হিসেবে দেখা হলেও এখন তা ব্যাপক চাপে রয়েছে। সামরিক বাহিনী একাধিক ফ্রন্টে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই করছে এবং দেশটির জনগণের ওপর চাপ দিন দিন বাড়ছে।