সাংবাদিকদের হেনস্তার অভিযোগ সালমান এ রহমানের আইনজীবীদের বিরুদ্ধে
Published: 29th, January 2025 GMT
ঢাকার আদালতে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের আইনজীবীদের বিরুদ্ধে একাধিক জাতীয় সংবাদপত্রের সাংবাদিকদের হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। এর আগে আইনজীবীদের মাধ্যমে সরকার উৎখাতের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এর জেরে এ হেনস্তা বলছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা।
আজ বুধবার সকালে বিভিন্ন থানার মামলায় গ্রেপ্তার ও রিমান্ড শুনানির জন্য সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক এমপি দিলীপ কুমার আগারওয়াল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ বেশ কয়েকজন আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর সকাল ১০টার দিকে আসামিদের হাজতখানা থেকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে তোলা হয়। আসামিদের কাঠগড়ায় তোলার সঙ্গে সঙ্গে সালমান এফ রহমান ও অন্য আসামিদের আইনজীবীরা কাঠগড়া ঘিরে ধরেন। আগের মতোই সালমান এফ রহমানসহ সব আসামি তাদের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। এরপর বিচারক ১০টা ১২ মিনিটে এজলাসে ওঠেন।
এরপর পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে প্রথমে কালের কণ্ঠ, পরে প্রথম আলো ও সর্বশেষ কালবেলার কর্মরত সাংবাদিককে হেনস্তা করে কাজে বাধা দেন সালমান এফ রহমানের আইনজীবীরা। সাংবাদিকরা কেন এজলাস কক্ষে আছে বলে উত্তেজিত হন আইনজীবীরা। এরপর ছবি ও ভিডিও করার অভিযোগ তুলে হেনস্তার চেষ্টা করে এজলাস কক্ষ বিশৃঙ্খলা করেন আইনজীবীরা।
এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি আদালতে এসে সরকারের বিপক্ষে বেক্সিমকো শ্রমিকদের মাঠে নামতে ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বার্তানুসারে সবাইকে ‘প্রস্তুত’ থাকতে তার আইনজীবীদের নির্দেশনা দেন সালমান এফ রহমান। ওই কারাগার থেকে টিস্যু পেপারে লিখে আইনজীবীর মাধ্যমে ‘গোপন বার্তাও’ পাঠান জুনাইদ আহমেদ পলক। এরপর আদালতে আসামিদের নিয়ে যাওয়া আসার সময় কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আইনজীবীদের মাধ্যমে সাংবাদিকদের টার্গেটে রেখে হেনস্তা করার চেষ্টা করছেন আওয়ামী লীগের সাবেক এই প্রভাবশালী মন্ত্রীরা।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকতা করে আসছি। আগের নিউজ সংক্রান্ত বিষয়ে তারা সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ সব সাংবাদিককে নজরে রাখে আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা। এজলাস কক্ষে সাংবাদিক রয়েছে কেন প্রশ্ন তোলাসহ ছবি ও ভিডিও করার মিথ্যা অভিযোগ তুলে আদালত প্রাঙ্গণ অস্থিতিশীল করার পায়তারা করছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। সাংবাদিকদের হেনস্তা করছেন তারা।’
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘সাংবাদিকরা এখানে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করবেন। আইনজীবীরা কেন বাধা দেবেন? আজকের ঘটনা কি হয়েছে সামনে ছিলাম বলে দেখিনি। তবে সামনের দিন থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কেউ যেন এ ধরণের আচরণ না করতে পারে সে বিষয়টি দেখব।’
ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি খোরশেদ মিয়া আলম বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই নিন্দনীয়। যেসব আইনজীবী হেনস্তা করেছে, তাদের নাম দিলে আমরা ঢাকা আইনজীবী সমিতি থেকে ন্যায় বিচার করব। আইনানুগভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যা যা করার দরকার আমরা প্রতিকার করব। আইনজীবীদের নাম্বার আমাদের কাছে দেন শুধু।’
অভিযুক্ত আইনজীবীদের সঙ্গে এসময় কথা বলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আইনজ ব র আইনজ ব দ র র আইনজ ব র মন ত র ব দ কর এজল স
এছাড়াও পড়ুন:
আমার ব্রেনে এই শহরে কোনো কাজ হয়নি: কেসিসির পরিকল্পনা কর্মকর্তা
খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে পরিকল্পনা কর্মকর্তার (প্ল্যানিং অফিসার) কোনো কাজ নেই বলে মন্তব্য করেন কেসিসির প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবির-উল-জব্বার। তিনি বলেন, যে প্রকল্প আসে, তা বাস্তবায়ন হয় রাজনৈতিক বিবেচনায়। এর ৩১ ওয়ার্ডের কোনোটিতেই কোনো পরিকল্পনা নেই।
আজ মঙ্গলবার নগর ভবনের শহীদ আলতাফ মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন আবির-উল-জব্বার। এতে একটি প্রকল্পের পরিচিতি সভার আয়োজন করে ‘সিরাক-বাংলাদেশ’ নামের একটি বেসরকারি সংস্থা।
অনুষ্ঠানটির মুক্ত আলোচনাপর্বে আবির-উল-জব্বার বলেন, ‘যা এত দিন বলতে পারিনি, তা আজ বলছি। আমার ব্রেনে এই শহরে কোনো কাজ হয়নি। আমি যখন একটা প্রস্তাব দিই, তখন আমার ওপরের অথরিটি সেটি মাথায় নেয় না। এ কারণে আমার এক পার্সেন্টও প্ল্যান বাস্তবায়ন হয় না। সারা বাংলাদেশে একই সিস্টেম। প্ল্যানাররা সব সময়ই অবহেলিত।’
আক্ষেপের সুরে কেসিসির প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা বলেন, ‘বিদেশে আগে প্ল্যানাররা প্ল্যান করেন, পরে আর্কিটেক্টরা ডিজাইন করেন। এরপরই কাজ করেন ইঞ্জিনিয়াররা। দিস ইজ দ্য সিস্টেম, সারা ওয়ার্ল্ডে। কিন্তু আমাদের দেশে হয় উল্টো। আগে ইঞ্জিনিয়াররা প্রোজেক্ট পাস করায় দেবেন, এরপর আমাকে বলবে, “এই টাকা এসেছে, এখন ডিজাইন করো।” এরপর আর্কিটেক্ট একটা ডিজাইন করেন, সেখানে আমার একটা মতামত দিতে হয়। ব্যস, উল্টোভাবে চলছে সারা বাংলাদেশ।’
যে প্রকল্পে রাজনৈতিক তদবির ভালো, সেটি দ্রুত পাস হয় জানিয়ে আবির-উল-জব্বার বলেন, কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা না থাকায় একই শহরে একই রাস্তা বারবার খোঁড়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) লস্কর তাজুল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিতান কুমার মণ্ডল, কেসিসির সচিব শরীফ আসিফ রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিরাক-বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এস এম সৈকত।