প্যারিসের বিশ্বখ্যাত ল্যুভর জাদুঘরের সংস্কার কাজ এবং নতুন নির্মাণ কাজের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তাই লিওনার্দো দা ভিঞ্চির আঁকা চিত্রকর্ম মোনালিসা নতুন একটি প্রদর্শনী স্থানে সরিয়ে নেওয়া হবে। মঙ্গলবার ল্যুভর জাদুঘরে মোনালিসার সামনে দাঁড়িয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ তার নতুন রেনেসাঁ প্রকল্পের রূপরেখা ঘোষণার সময় এসব কথা বলেন।

২০৩১ সালে নতুন প্রদর্শনী স্থান খুলে দেওয়া হবে এবং মোনালিসাকে দেখতে হলে দর্শনার্থীদের আলাদা করে টিকিট কাটতে হবে। খবর: বিবিসি

এই প্রকল্পে কাচের তৈরি পিরামিড আকৃতির ল্যুভর জাদুঘরে প্রবেশের জন্য দ্বিতীয় একটি ঢোকার পথ তৈরি করা হবে। জাদুঘরে আসা দর্শনার্থীদের বাড়তি চাপ সামাল দিতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ল্যুভর জাদুঘরের দ্বিতীয় প্রবেশ দ্বারের নকশা চূড়ান্ত করা হবে।

এ ছাড়া জাদুঘরে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশ মূল্যেও পরিবর্তন হবে। আগামী বছর জানুয়ারি থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশের বাসিন্দা নন, এমন ব্যক্তিদের জাদুঘর প্রবেশে বাড়তি অর্থ খরচ করতে হবে। যুক্তরাজ্যের নাগরিকদেরও বাড়তি অর্থ গুনতে হবে।

সম্প্রতি ল্যুভরের পরিচালক লোরঁস দে কার জাদুঘরটির অবস্থা নিয়ে সতর্ক করে ফ্রান্স সরকারকে একটি চিঠি লিখেছেন। চিঠিতে তিনি দর্শনার্থীদের অতিরিক্ত ভিড় এবং জাদুঘর ভবনের অবস্থার কথা তুলে ধরেন।

এ মাসের শুরুতে ফ্রান্স সরকার ওই চিঠি প্রকাশ করে। চিঠিতে লোরঁস দে কার আরও লেখেন, ১৯৮৯ সাল থেকে পিরামিড আকৃতির জাদুঘরটির ভেতরে প্রবেশের একটিই প্রবেশ পথ এবং অবকাঠামোগত দিক দিয়ে সেটি আর অতিরিক্ত দর্শনার্থীর চাপ সামলানোর মতো অবস্থায় নেই। বর্তমানে বছরে ৯০ লাখের বেশি দর্শনার্থী ল্যুভর জাদুঘরে আসেন।

চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘সবার দৃষ্টিতে, মোনালিসাকে উপস্থাপনার বিষয়টি আরও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন।’

প্রতিদিন গড়ে ৩০ হাজার দর্শনার্থী ল্যুভর জাদুঘরে আসেন। তাদের তিন-চতুর্থাংশই লিওনার্দো দা ভিঞ্চির মোনালিসা দেখতে যান। এবং তাদের মোনালিসা দেখার অভিজ্ঞতা রীতিমতো ধৈর্যের পরীক্ষায় পরিণত হয়। দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে তারা মোনালিসার সামনে যাওয়ার সুযোগ পান এবং সেটি দেখা এবং ছবি তোলার জন্য গড়ে ৫০ সেকেন্ড সময় পান।

নতুন প্রকল্পে প্রবেশ দরজা দিয়ে সরাসরি ভূগর্ভস্থ নতুন প্রদর্শনী স্থলগুলোতে চলে যাওয়া যাবে। সেখান থেকেই যাওয়া যাবে পিরামিড ভবনের ভেতরের দিকে অংশে।

মাখোঁ বলেছেন, মোনালিসাকে বর্তমান স্থান থেকে সরিয়ে নেওয়া হলে জাদুঘরে সেটিকে ঠিকমতো দেখা যাবে। দর্শনার্থীদের জন্য অন্যসব বিখ্যাত চিত্রকর্ম দেখাও সহজ হবে, যেগুলো বেশির ভাগ সময় অদেখাই থেকে যায়।

এই সংস্থার এবং নতুন নির্মাণকাজে কয়েক শ কোটি ইউরো ব্যয় হবে। তবে করদাতাদের এর ব্যয়ভার বহন করতে হবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট মাখোঁ। তিনি বলেছেন, টিকিট বিক্রির অর্থ, অনুদান এবং জাদুঘরটির পৃষ্ঠপোষক ল্যুভর আবু ধাবি থেকে এই অর্থ আসবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এম ন য় ল ম খ র জ দ ঘর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

আশা করি অন্তবর্তী সরকার জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করবে: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকের এ দিনে আমরা আশা করব, যেই দায়িত্ব নিয়েছেন সেই দায়িত্বে সবাই সফল হবেন এবং বিশেষ করে অন্তবর্তী সরকার জনগণের কাছে তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করবে। তিনি বলেন, আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকেও অবশ্যই সেই প্রতিশ্রুতি পালন করব বলে শপথ নিয়েছি।

ঈদের দিন আজ সোমবার সকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারতের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।

ফ্যাসিবাদ সরকারের শাসনামলের থেকে ‘এবার ঈদ আনন্দময় পরিবেশে হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের এই পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনে প্রত্যেকটি বাংলাদেশি মানুষ যেন আনন্দের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পারেন, সেজন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেছি। দোয়া চেয়েছি আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে দ্রুত আমাদের কাছে ফিরে আসেন এবং আমাদের নেতা তারেক রহমান তিনি যেন অতি শিগগিরই আমাদের মাঝে ফিরে আসেন, সেই দোয়া চেয়েছি।

গত ১৫ বছরের ঈদের সঙ্গে এবারকার ঈদের কি পার্থক্যটা কি- জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক পার্থক্য। এবার আমরা মুক্ত পরিবেশে একটা আনন্দময় পরিবেশে আমরা ঈদ পালন করছি।

আজ সকাল সাড়ে ১১টায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান শেরে বাংলা নগরে জিয়া উদ্যানে জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে এসে তার কবরে ফুল দেন এবং দোয়া করেন। এ সময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন- আহমেদ আজম খান, আমান উল্লাহ আমান, মাহবুব উদ্দিন খোকন, রুহুল কবির রিজভী, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মীর সরফত আলী সপু, রফিকুল ইসলাম, সাইফুল আলম নিরব, মীর নেওয়াজ আলী, রফিক শিকদার, এসএম জাহাঙ্গীর, আমিনুল হকসহ দলের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সহস্রাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

খালেদা জিয়া ও তারেকের ঈদ শুভেচ্ছা

জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারতের পরে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদেন বলেন, আমরা দলের পক্ষ থেকে, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে এবং স্থায়ী কমিটির সদস্যদের পক্ষ থেকে আমরা আপনাদের (গণমাধ্যম) সবাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি… ঈদ মোবারক… আপনাদের মাধ্যমে আমরা পুরো দেশবাসীর কাছে ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি… ঈদ মোবারক।

তিনি বলেন, আজকে আমরা জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করতে এসেছিলাম। আমরা পরম করুণাময় আল্লাহতালার কাছে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছি। আমরা একইসঙ্গে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কনিষ্ট পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, একইসঙ্গে বিগত গণতান্ত্রিক আন্দোলনগুলোতে যারা প্রাণ দিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন তাদেরও আত্মর মাগফেরাত কামনা করেছি। বিশেষ করে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা এদেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছি এবং গণতন্ত্রের জন্য বিগগ ১৫ বছর ও জুলাই-আগস্টে যারা শহীদ হয়েছে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছি।”

ফখরুল বলেন, আজকের এই পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনে প্রত্যেকটি বাংলাদেশি মানুষ যেন আনন্দের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পারেন, সেজন্য আল্লাহর কাছে আমরা দোয়া করেছি। দোয়া চেয়েছি আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে দ্রুত আমাদের কাছে ফিরে আসেন এবং আমাদের নেতা তারেক রহমান তিনি যেন অতি শিগগিরই আমাদের মাঝে ফিরে আসেন সেই দোয়া চেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে আমরা যে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সংগ্রাম করেছি, মানুষের ভোটের অধিকারের জন্য যে সংগ্রাম করেছি, মানুষের ভাতের অধিকারের জন্য যে সংগ্রাম করেছি, মানবাধিকারের জন্য যে সংগ্রাম করেছে, সেই সংগ্রাম যেন প্রতিষ্ঠিত হতে পারে সেজন্য পরম আল্লাহর কাছে দোয়া করেছি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ