বিপিএল প্লে-অফে রংপুর-বরিশালের সঙ্গী হচ্ছে কারা
Published: 29th, January 2025 GMT
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) প্রথম পর্ব শেষের পথে, প্লে-অফের লড়াই জমে উঠেছে। রংপুর রাইডার্স ও ফরচুন বরিশাল ইতোমধ্যে শেষ চার নিশ্চিত করলেও, বাকি দুটি দল এখনো নির্ধারিত হয়নি। দুর্বার রাজশাহী শেষ মুহূর্তে দারুণ ফর্ম দেখিয়ে সমীকরণ জটিল করে তুলেছে, বিপাকে পড়েছে খুলনা টাইগার্স ও চিটাগং কিংস।
প্রথম পর্বের বাকি ছয় ম্যাচের পারফরম্যান্সই ঠিক করবে প্লে-অফে কারা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সিলেট স্ট্রাইকার্স ছিটকে গেলেও, বাকি চার দল এখনো দৌড়ে টিকে আছে।
প্লে-অফ নিশ্চিত হলেও শীর্ষ দুইয়ে থাকতে চাইবে রংপুর রাইডার্স ও ফরচুন বরিশাল। কারণ কোয়ালিফায়ার খেলতে পারলে আরও একটি সুযোগ পাবে তারা। এক্ষেত্রে চিটাগং কিংস অন্তত একটি ম্যাচ হারলেই শীর্ষ দুই নিশ্চিত হয়ে যাবে তাদের।
দুর্বার রাজশাহীর সব ম্যাচ শেষ। খুলনা টাইগার্স দুটি ম্যাচের একটি হারলে রাজশাহী নিশ্চিতভাবেই প্লে-অফে যাবে। যদি খুলনা দুটি ম্যাচ জিতে, তাহলে নেট রান রেটের হিসাব চলে আসবে। এছাড়া চিটাগং কিংস তাদের তিন ম্যাচ হারলে প্লে-অফ নিশ্চিত হবে রাজশাহীর। তবে যদি চিটাগং একটি ও খুলনা দুটি ম্যাচ জেতে, তাহলে তিন দলের মধ্যে নেট রান রেটের হিসাব আসবে।
চিটাগং কিংসের বাকি খেলাগুলো হবে রংপুর রাইডার্স, সিলেট স্ট্রাইকার্স, ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে। তিন ম্যাচের সবকটি জিতলে সরাসরি প্লে-অফ নিশ্চিত হবে। দুই ম্যাচ জিতলে তৃতীয় হয়ে শেষ চারে যাবে। একটি জয় পেলেও প্লে-অফে যাওয়ার সুযোগ থাকতে পারে, তবে রাজশাহী ও খুলনার সঙ্গে নেট রান রেটের লড়াইয়ে পড়তে হবে। তিন ম্যাচ হারলেও খুলনা টাইগার্সের পারফরম্যান্সের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে।
রংপুর রাইডার্স, ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে শেষ দুই ম্যাচ খেলবে খুলনা টাইগার্স। দুই ম্যাচের একটিতে জয় পেলেও প্লে-অফের সম্ভাবনা থাকবে, তবে চিটাগং কিংসের ফলাফলের ওপর নির্ভর করতে হবে। চিটাগং তিন ম্যাচ হারলে এক জয়েও খুলনা প্লে-অফে যেতে পারে, তবে নেট রান রেটে এগিয়ে থাকতে হবে। দুই ম্যাচ জিতলেও রাজশাহীর সঙ্গে নেট রান রেটের সমীকরণে যেতে হবে।
প্লে-অফে খেলতে সবচেয়ে কঠিন সমীকরণ মেলাতে হবে ঢাকা ক্যাপিটালসকে। তারা এখন পর্যন্ত ১০ ম্যাচ খেলে ৬ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে। তাদের শেষ দুই ম্যাচের প্রতিপক্ষ ফরচুন বরিশাল ও খুলনা টাইগার্স। এই দুই ম্যাচ জিতলেও তাকিয়ে থাকতে হবে অন্যদের দিকে। চিটাগং আর একটি কিংবা খুলনা দুটি ম্যাচ জিতলেই বাদ ঢাকা।
শেষ মুহূর্তের লড়াইয়ে কোন দুই দল জায়গা পাবে প্লে-অফে, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে শেষ ছয় ম্যাচের ফলাফলের জন্য।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব প এল
এছাড়াও পড়ুন:
প্রিমিয়ার লিগে মোস্তাফিজের অনাগ্রহ কেন?
মোস্তাফিজুর রহমান শেষ কবে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ খেলেছেন মনে করতে পারলেন না তার সতীর্থ অনেকেই। শেষ কোন দলে মোস্তাফিজ নিজে খেলেছেন তারও মনে নেই। কবে খেলেছেন সেই রেকর্ডে তো ধূলা জমা পড়েছে। আয়োজক সিসিডিএমের একাধিক কর্মকর্তারও ধারনা নেই মোস্তাফিজ দেশের ক্রিকেটের জমজমাট আসর ঢাকা লিগ কবে খেলেছেন?
এজন্য ফিরে যেতে হবে মহামারী কোভিডকালীন সময়ে। প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে বাঁহাতি পেসার মাত্র একটি ম্যাচ খেলেছিলেন। এরপর লিগ বন্ধ হয়ে গেলে মোস্তাফিজেরও আর ঢাকা লিগে মাঠে নামা হয়নি।
পরের তিন আসরে মোস্তাফিজকে নেয়নি কোনো ক্লাব। খেলার ব্যাপারে আগ্রহ ছিল না তারও। জাতীয় দলের সফর, দেশের বাইরে ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট, নিজের অনাগ্রহ, বিশ্রাম আর ওয়ার্ক লোড ম্যানেজমেন্টের আওতায় দেশের একমাত্র ৫০ ওভারের ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় দেখা যেত না মোস্তাফিজকে। দেখা যাবে না এবারও।
আরো পড়ুন:
নাটকীয়তার পর ‘আবাহনীর আফিফ’ এখন রূপগঞ্জের
উঁচু মূল্য লিটনের, ঝুলে আছে দলবদল প্রক্রিয়া
১২ ক্লাবের ঢাকা লিগ পর্দা উঠার অপেক্ষায়। ৩ মার্চ শুরু হবে ক্লাবগুলোর শিরোপার লড়াই। অথচ এখন পর্যন্ত মোস্তাফিজ কোনো ক্লাবে নাম লিখাননি। জাতীয় দলের হয়ে সফরে বাইরে থাকায় দলবদলে ছিলেন না মোস্তাফিজ। শোনা যাচ্ছে, কোনো ক্লাবের সঙ্গে কথাও বলেননি মোস্তাফিজ। শিরোপা পেতে তামিম, মুশফিক, তাসকিনদের ভেড়ানো মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব চেয়েছিল মোস্তাফিজকেও নিতে। কিন্তু উঁচু পারিশ্রমিক হাঁকিয়ে ক্লাবগুলোকে নিরাশ করেছেন বাঁহাতি পেসার। শুধু মোহামেডান নয়, দুয়েকটি ক্লাব তার প্রতি আগ্রহও দেখিয়েছিল। কিন্তু পারিশ্রমিকের কারণে বনিবনা হয়নি।
একই অবস্থা লিটন দাসের। পারফরম্যান্সের কারণে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া লিটনের ঢাকা লিগ দিয়ে ফর্মে ফেরার দারুণ সুযোগ ছিল। কিন্তু লিগ শুরু হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা বাকি থাকলেও লিটনের ক্লাবের ঠিকঠিকানা নেই। আকাশছোঁয়া পারিশ্রমিক চেয়ে বসে আছেন। শোনা যাচ্ছে, এখন ম্যাচ চুক্তি করে খেলার পরিকল্পনা করছেন। যে ম্যাচ খেলবেন সেই ম্যাচে পাবেন পারিশ্রমিক।
লিটন তা-ও নিয়মিত ঢাকা লিগ খেলেন। রানের ফুলঝুরি ছোটান। কিন্তু মোস্তাফিজের অনাগ্রহ তুঙ্গে। ২০১৪ সালে ঢাকা লিগে আবাহনীর হয়ে অভিষেক মোস্তাফিজ। প্রথম ম্যাচে কলাবাগানের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়ে নিজের আগমনী বার্তা জানিয়ে দেন। সেবার ৫ ম্যাচে ১২ উইকেট পেয়েছিলেন ১১.৭৫ গড়ে।
২০১৪ থেকে ২০২৪, এই দশ বছরে মোস্তাফিজ ঢাকা লিগে ম্যাচ খেলেছেন মাত্র ১৩টি। আবাহনীর হয়ে ২০১৪ সালের পর ২০১৬ সালে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের হয়ে ৬ ম্যাচ খেলেন। তিন বছর বিরতির পর ২০১৯ সালে খেলেন শাইনপুকুর স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে। সেটাও মাত্র এক ম্যাচ। পরের বছর প্রাইম ব্যাংকের হয়ে খেলেন আরো এক ম্যাচ।
শেষ কয়েক বছরে মোস্তাফিজের পারফরম্যান্স নিয়ে প্রবল সমালোচনা হয়েছে। লাল বলের ক্রিকেট থেকে নিজেকে অনেক আগেই সরিয়ে নিয়েছেন। খেলছেন কেবল সাদা বলের ক্রিকেট। সেখানেও তার পারফরম্যান্স গড়পড়তা। পুরোনো ধার নেই। নেই আগের মতো ছন্দ। অথচ জাতীয় দলের অন্যান্য পেসাররা নিজেদেরকে এগিয়ে নিয়েছেন কয়েকধাপ। এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও মোস্তাফিজের অন্তভূক্তি নিয়ে কথা উঠেছিল। যদিও নির্বাচক, টিম ম্যানেজমেন্ট তার ওপর আস্থা রেখেছিলেন। কিন্তু প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি।
ওয়ানডেতে ধারাবাহিকভাবে কমেছে তার পারফরম্যান্সের মান। ২০২৪ সালে ৪ ম্যাচে ১০ উিইকেট নিয়েছিলেন ১৮.৪০ গড়ে, ৫.১১ ইকোনমিতে। ২০২৩ সালে ২১ ওয়ানডেতে উইকেট কেবল ২১টি। গড় ৪২.৭৬, ইকোনমি ৫.৫৬। ২০২২ সালে ১৪ ওয়ানডেতে উইকেট সমান ১৪টি। গড় ৩৩.৫৭, ইকোনমি ৪.৪৫।
ওয়ানডে ক্রিকেটে ভালো করতে হলে নিয়মিত অনুশীলন ও ম্যাচ খেলার পর্যাপ্ত সুযোগ থাকলেও মোস্তাফিজের ভাবনায় থাকে ভিন্ন কিছু। তা বলতে দ্বিধা করলেন না জাতীয় দলের সাবেক নির্বাচক। জানালেন, একাধিকবার ঢাকা লিগ খেলার কথা তাকে বলা হলেও নানাবিধ ব্যস্ততা, ফ্রাঞ্চাইজি লিগের কথা বলে পাশ কাটিয়ে যেতেন মোস্তাফিজ।
‘‘এটা উদ্বেগজনক। জাতীয় দলের নিয়মিত ক্রিকেটার যার পারফরম্যান্স এখন গড়পড়তারও নিচে সে ঢাকা লিগ খেলছেন না। আমাদের সময়েও তাকে বলা হয়েছে। কিন্তু বিসিবি তাকে সব সময় পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছে তার মতো করে চলার। যার কারণে তাকে জোর করা সম্ভব হয়নি। চাইলে অনেক কিছু ম্যানেজ করে খেলা যায়। ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের ব্যস্ততা থাকবে। আবার বিশ্রামেরও সুযোগ আছে। কিন্তু ঢাকা লিগ নিয়ে তার আগ্রহ খুব একটা চোখে পড়েনি।’’
ঢাকা/ইয়াসিন/নাভিদ