ছিপছিপে গড়নের সেই যে ছেলেটি, মাথায় রং করা চুলের ঝুটি! বছর ১৫ আগে সেই ছবি দেখিয়ে লাতিন মিডিয়াগুলো প্রথম খবর প্রকাশ করতে থাকে। তারা বলতে থাকে, এক বিস্ময় বালকের আবির্ভাব হতে যাচ্ছে বিশ্ব ফুটবলে। সান্তোসে খেলা সেই ছেলেটিকে পরে বিশ্ব চিনে নিয়েছিল বার্সেলোনা, পিএসজি ও ব্রাজিলের জার্সি গায়ে।
সে দিনের সেই কিশোর নেইমার এখন বছর বত্রিশের পরিণত একজন। ক্যারিয়ারে চোটাঘাত তাঁকে অনেকটা পিছিয়ে দিয়েছে। গত দুই মৌসুমে সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলালে তাঁর নাম নথিভুক্ত থাকলেও আদতে তাদের কিছুই দিতে পারেননি ব্রাজিলিয়ান এই তারকা। সাকল্যে মাত্র ৭টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি আল হিলালের হয়ে এবং গোল মাত্র একটি। যিনি বিরল ফুটবলারের একজন, যিনি কিনা ভিন্ন ভিন্ন তিনটি ক্লাবের হয়ে ১০০-এর বেশি গোল করেছেন, সেই নেইমার আদতে রিয়াদের ক্লাবটিকে কিছুই দিতে পারেননি।
বরং বাঁ-পায়ে অস্ত্রোপচার করার পর প্রায় এক বছর ক্লাবটি তাঁর সব চিকিৎসার খরচ জুগিয়েছে। এখন তিনি অনেকটাই ফিট। এই জুন পর্যন্তই চুক্তি ছিল তাঁর আল হিলালের সঙ্গে। তার আগেই নেইমার আল হিলাল ছেড়ে তাঁর শৈশবের ক্লাব ব্রাজিলের সান্তোস এএফসিতে ফিরে যাচ্ছেন। গতকাল সৌদি ক্লাবের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে সেই খবর নিশ্চিতও করেছে। ‘নেইমার তাঁর ক্যারিয়ারে আমাদের জন্য যা করেছেন, তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। তাঁর আগামীর জন্য শুভকামনা।’
ইএসপিএনের খবর, দু’পক্ষের সমঝোতার মধ্য দিয়েই চুক্তি ভাঙা হয়েছে। ২০২৩ সালে পিএসজি থেকে আল হিলালে এসেছিলেন নেইমার। বছরে প্রায় ১১০ মিলিয়ন পাউন্ড পেতেন নেইমার আল হিলালের কাছ থেকে। ক্লাবটির হয়ে মোট ৪২৮ মিনিট খেলেছেন। তবে ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম গ্লোবা জানাচ্ছে, চোটের কারণে এত বেশি আয় করতে পারেননি তিনি। ৫২ মিলিয়ন পাউন্ডের মতো পেয়েছেন তিনি আল হিলাল থেকে। আর্থিক এই ক্ষতি মেনে নিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা।
সৌদিতে সপ্তাহে যেখানে তাঁর বেতন ছিল ১.
আপাতত সান্তোসের সঙ্গে ৬ মাসের চুক্তিতে যাচ্ছেন তিনি, সঙ্গে এক বছরের বর্ধিত সময়ও রয়েছে। যেখানে দু’পক্ষ চাইলে আরও এক বছর সান্তোসে খেলতে পারবেন নেইমার। প্রিয় ক্লাবের হয়ে মাঠে নামার জন্য নেইমার নাকি এতটাই মুখিয়ে, এরই মধ্যে মেডিকেল টেস্ট দিতে দেশের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। ৫ ফেব্রুয়ারি সান্তোসের পরের ম্যাচেই মাঠে নামতে চাইছেন। লাতিন মিডিয়াগুলোর খবর, সান্তোসের মালিকানার কিছু অংশ নিতে চলেছেন নেইমার।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অস্কার মঞ্চে অভিবাসীদের অবদান তুলে ধরলেন অশ্রুসিক্ত জো
জমকালো আয়োজনের মধ্যদিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের ডলবি থিয়েটারে অনুষ্ঠিত হয়েছে ৯৭তম একাডেমি অ্যাওয়ার্ডস। এবারের আসরে সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগের পুরস্কার জিতেছেন আমেরিকান তারকা জো সালদানা। ‘এমিলিয়া পেরেজ’ চলচ্চিত্রে একজন আইনজীবীর চরিত্রে অনবদ্য অভিনয়ের সুবাদে এই স্বীকৃতি উঠেছে তাঁর হাতে।
স্প্যানিশ-ভাষার সংগীতনির্ভর ছবিটি পরিচালনা করেছেন ফ্রান্সের জ্যাক অঁদিয়ার। অস্কারের মতো এমন অর্জন হাতে নেওয়ার পর অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন এই অভিনেত্রী।
মঞ্চে উঠে আবেগাপ্লুত জোয়ি তাঁর মাকে স্মরণ করেন এবং ‘এমিলিয়া পেরেজ’-এর সব শিল্পী ও কলাকুশলীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর তিনি শিল্প জগতে অভিবাসীদের অবদান তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘আমার দাদি ১৯৬১ সালে এই দেশে এসেছিলেন। আমি গর্বিত একজন অভিবাসী বাবা-মায়ের সন্তান, যারা স্বপ্ন, সম্মানবোধ ও কঠোর পরিশ্রমের মানসিকতা নিয়ে বড় হয়েছেন। আমি ডোমিনিকান বংশোদ্ভূত প্রথম আমেরিকান, যে একাডেমি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করছে। আমি জানি, আমি শেষ ব্যক্তি নই। আমি আশা করি, এই পুরস্কার পাওয়ার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই চরিত্রে আমি গান গাওয়ার ও স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। যদি আমার দাদি আজ বেঁচে থাকতেন, তিনি অত্যন্ত আনন্দিত হতেন।’
তার এই বক্তব্য এমন এক সময়ে দিলেন যখন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন অভিবাসন নীতিতে কঠোর আগ্রাসন চালাচ্ছে।
চলচ্চিত্র দুনিয়ার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ একাডেমি পুরস্কার তথা অস্কারের আয়োজন চলছে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে হলিউডের ডলবি থিয়েটারে। অনুষ্ঠানটি শুরু হয়েছে বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোর সাড়ে পাঁচটায়। আয়োজনের প্রথম পুরস্কারটি পেয়েছেন আমেরিকান অভিনেতা কিয়েরান কালকিন। ‘আ রিয়েল পেইন’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা পার্শ্ব অভিনেতার স্বীকৃতি পেলেন তিনি।
অন্যদিকে, এবার সেরা অ্যানিমেশন ছবি (স্বল্পদৈর্ঘ্য) হিসেবে ‘ইন দ্য শ্যাডো অব সাইপ্রেস’, ফিচার অ্যানিমেশন হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে ‘ফ্লো’। সেরা মেকআপ এবং হেয়ারস্টাইল বিভাগে পুরস্কার জিতেছে গেল বছরের অন্যতম আলোচিত ছবি ‘দ্য সাবস্ট্যান্স’।
সেরা অ্যাডাপ্ট চিত্রনাট্যর পুরস্কার পেয়েছে আলোচিত ছবি ‘কনক্লেভ’। এছাড়া পল ট্যাজওয়েল ‘উইকেড’ চলচ্চিত্রের জন্য সেরা পোশাক পরিকল্পনাকারী এবং শন বেকার ‘আনোরা’ চলচ্চিত্রের জন্য সেরা মৌলিক চিত্রনাট্যের পুরস্কার পেয়েছেন।