লেবাননে যুদ্ধবিরতির মধ্যেও ইসরায়েলের হামলা
Published: 29th, January 2025 GMT
যুদ্ধবিরতির মধ্যেও লেবাননে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। এ ঘটনায় ২৪ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের দাবি, তারা লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর গাড়ি লক্ষ্য করে এই হামলা চালিয়েছে।
বুধবার পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু ও রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার দক্ষিণ লেবাননের অন্যতম প্রধান শহর নাবাতিহে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ২৪ জন আহত হয়েছেন বলে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা নাবাতিহের প্রান্তে অস্ত্র পরিবহনকারী হিজবুল্লাহর যানবাহনে হামলা চালিয়েছে।
নাবাতিহের ওপর হওয়া এই দুটি হামলার তীব্র নিন্দা এবং এগুলোকে ইসরায়েলের সঙ্গে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির লঙ্ঘন বলে বর্ণনা করেছেন লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি।
এ বিষয়ে মিকাতি মার্কিন জেনারেল জ্যাসপার জেফার্সের সাথেও কথা বলেছেন। তিনি এই যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ নিযুক্ত কমিটির সভাপতিত্ব করছেন।
লেবাননের ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, নাবাতিহে আল-ফাওকার আল-রাওদাত স্কুলের কাছে রাস্তায় একটি পিকআপ ট্রাককে লক্ষ্য করে গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। হামলায় গাড়িটি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং রাস্তায় পার্ক করা গাড়ি পুড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ওই এলাকার মধ্য দিয়ে যাওয়া কয়েকজন নাগরিক আহত হয়েছেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রত্যেক দিন ইসরায়েলি সামরিক চৌকি ও ভূখণ্ডে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও তাদের মিত্ররা। ইসরায়েল-লেবানন সীমান্ত এলাকায় এবারের এই সংঘাতে লেবাননে প্রায় চার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ১২ লাখ মানুষ।
পরে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল-হিজবুল্লাহর ১৪ মাস ধরে চলা সংঘাতের অবসানে ৬০ দিনের এক যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল ব নন ইসর য় ল আহত ইসর য় ল র ল ব নন র ত হয় ছ
এছাড়াও পড়ুন:
‘আত্মবিশ্বাসে ভর করে এগিয়ে চলুন’
বিয়ার গ্রিলস। দুঃসাহসী অভিযাত্রী। টিভি সিরিজ ‘ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড’-এর জন্য বিখ্যাত। তাঁর বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে অনুপ্রেরণামূলক কথা তুলে এনেছেন মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ
স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস আমার ভেতরে জাগতিক ভয়-ডরকে কমিয়ে দিয়েছে। লোকজন বলে, গ্রিলস নাকি কোনোকিছুতেই ভয় করে না। আসলে আমার অনেক কিছুতেই ভয়। মিলিটারি প্রশিক্ষণের সময় আমি স্কাই-
ডাইভিংয়ের দুর্ঘটনায় পড়ি। ডাক্তার তো ধরে নিয়েছিলেন, সারা জীবনের জন্য আমি
পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে থাকব। তারপর থেকে এখনও প্যারাস্যুট দেখলে আমার ভয় লাগে! এই মহাজগতে আমি একা লড়ছি না– এ বোধটি আমাকে সাহস জোগায়। নিজের ওপর রাখা আস্থায় আমাকে ঘরের বাইরে উন্মুক্ত পরিবেশে টেনে নিয়ে যায়। ফলে পাহাড়-পর্বত কিংবা জঙ্গল– যেখানে যাই, কোনো না কোনো
অলৌকিকতার মুখোমুখি হই। যেহেতু প্রতিটি অভিযাত্রা শেষে রয়েছে বাড়ি ফেরার সম্ভাবনা। ফলে মৃত্যুর ভয়ও তেমন কাজ করে না আমার।
বাবার অনুপ্রেরণা
কিশোর বয়সে নিজেকে নিজে বলেছি, এমনভাবে এগিয়ে চলো, যেন তোমার বাবা স্বয়ং রয়েছেন তোমার পাশে। আমার বয়স বিশে পৌঁছানোর আগে বাবা মারা যান। অসাধারণ এক বাবা ছিলেন তিনি। ভীষণ মিশুক ও ফূর্তিবাজ। মূলত তিনি আমাকে অল্প বয়সে ক্লাইম্বিং করতে শিখিয়েছেন। বাবা বলতেন, গ্রিলস, তুমি বন্ধুদের দিকে তাকাও আর মনের সাড়ায় এগিয়ে চলো। কখনও কোনোকিছু দেখে ভড়কে যেও না।
নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস
স্কুলের পাঠ শেষে আর্মিতে যখন যোগ দিই তখন আমার বন্ধুরা সবাই অফিসার হিসেবে যোগ দিলেও আমি যোগ দিই একজন প্রাইভেট হিসেবে। কেননা নিজের মতো করে একটি পথ খুঁজে নেওয়ার আত্মবিশ্বাস ছিল আমার। নিজের কিশোর বয়সে যখন ফিরে তাকাই, দেখি এক লাজুক বিয়ার গ্রিলসকে, যে কিনা আত্মপরিচয় খুঁজে পেতে মরিয়া। ট্রেন্ডি পোশাক পরতে আর চুলে স্পাইক করতে ভালো লাগত তখন। যদি পারতাম তবে সেই কিশোরকে বলতাম, শোনো, এত পরিপাটি থাকার কোনো মানে নেই। তোমাকে মানায় না এসব। কোনো কিছু ভালো না লাগলে মন খারাপ করার কিছু নেই; বরং যা করতে ভালো লাগে করে যাও, আর মুখে রাখো হাসি। ইউনিভার্সিটিতে যাওয়ার সুযোগ না পেলে মন খারাপ করো না। কেননা একাডেমিক পড়াশোনা জীবনের খুবই ছোট্ট একটা অংশ। বাবা বলতেন, স্কুলে সেরা হওয়ার চেষ্টা করো না; এতে বাকি জীবন দুঃসহ হয়ে উঠবে!
পরিবার ও অনুপ্রেরণা
তরুণ বয়সে টিভি-পার্সোনালিটি হয়ে ওঠার বিষয়ে আমার কোনো আগ্রহ ছিল না। টিভি কোনোদিন আমার রাডারে ধরা পড়েনি। খ্যাতি কোনোদিন আমার লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠতে পারেনি। কেউ যদি বলে, তুমি তো টিভির লোক; আমি বলি, ‘ওহ, তাই নাকি? খুব হাস্যকর না?’ আরকেটা কথা। নিজের একটি পারিবারিক ছবি সব সময়ই জুতার মধ্যে বয়ে চলি আমি। অনেকের কাছে এটি হাস্যকর মনে হলেও আমার কাছে বড্ড অনুপ্রেরণার। ছবির পাশাপাশি সব সময় সঙ্গে রাখি স্যাটেলাইট ফোন। প্রতি রাতে, ছবিতে দেখা সন্তানদের ‘শুভরাত্রি’ বলে ঘুমোতে যাই। সময় পেলে বই পড়তে বসি। জীবনী গ্রন্থগুলো আমাকে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা জোগায়। মাদার তেরেসাও আমাকে প্রেরণা জোগায়।
ভালো লাগতো না পড়াশোনা; তবে...
কলেজের পড়াশোনা ভালো লাগত না আমার। বিশেষ করে, বাড়ি থেকে দূরে থাকতে হতো বলে। তাই ১৬ বছর বয়সে পর্বতারোহণ ও মার্শাল আর্টের প্রতি ঝুঁকে পড়ি। কারাতে খেলার দিনগুলোতে এমন একদল বন্ধু পাশে পেয়েছিলাম, যারা শক্তি ও সামর্থ্যে আমার চেয়ে এগিয়ে ছিল। দিন দিন তারা সবাই সরে গেলেও রয়ে গেলাম আমি। প্রতিকূল আবহাওয়া ও ঝড়ের ভেতর পাহাড়ে চড়ার লড়াইটা বেশ জমাতে পারি আমি। এটি আমার জন্য
অনেক গর্বের!