শেখ হাসিনা নিজে গুম-খুনের নির্দেশদাতা ছিলেন বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। গতকাল মঙ্গলবার যমুনায় এইচআরডব্লিউর এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ইলেইন পিয়ারসনের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জুলাই বিপ্লবের ওপর একটি প্রতিবেদন হস্তান্তর করে। যেখানে এ তথ্য উল্লেখ রয়েছে।

বাসস জানায়, এইচআরডব্লিউর প্রতিনিধি দল অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি ও দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়ন প্রচেষ্টার প্রশংসা করে।

ইলেইন পিয়ারসন বলেন, ‘আপনারা এখন পর্যন্ত যে অগ্রগতি করেছেন, তাকে আমরা সাধুবাদ জানাই।’ জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান সময়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ এখন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মানবাধিকারের গুরুত্ব উপলব্ধি করছে।’

শেখ হাসিনার শাসনামলের কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে ড.

ইউনূস বলেন, ‘আপনাদের প্রতিবেদনগুলোতে গত ১৬ বছরের একনায়ক শাসনামলের ব্যাপক অপরাধ উন্মোচনে সহায়ক হয়েছে।’ তিনি বলেন, র‌্যাব অপরাধের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছে। তবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি এবং শাস্তি পেতে হবে।

পিয়ারসন বলেন, ‘২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার শাসনামলে নিরাপত্তা বাহিনী রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত ছিল এবং তারা শাসক দলের ক্যাডারের মতো আচরণ করত। এ জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার প্রয়োজন।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা উন্মুক্ততা ও স্বচ্ছতায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সব সংস্কার সুপারিশ প্রকাশ করছি এবং জনগণকে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার নির্ধারণের সুযোগ দিচ্ছি। ১৬ বছরের দমন-পীড়ন এবং অপরাধের ক্ষতিপূরণ করা একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হবে।’

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৈরি ‘মুজিব বর্ষ ১০০’ পঞ্জিকার এখন অস্তিত্বই নেই

‘মুজিব বর্ষ ১০০’ নামে একটি বিশেষ পঞ্জিকা যৌথভাবে তৈরি করেছিল শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় তহবিল। এতে ব্যয় করা হয়েছিল প্রায় তিন লাখ টাকা। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বানানো এই পঞ্জিকার প্রথম মাসের নাম ছিল ‘স্বাধীনতা’। আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন (১৭ মার্চ) ছিল এই মাসের প্রথম দিন। ইংরেজি ক্যালেন্ডারের মতো এটিরও গণনা করার কথা ছিল ৩৬৫ দিন ধরে। ২০২০ সালের ১৬ মার্চ পঞ্জিকাটির উদ্বোধন করেছিলেন তখনকার সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তবে পঞ্জিকাটি শেষ পর্যন্ত আর আলোর মুখ দেখেনি।

এই পঞ্জিকায় ১২টি মাস আছে। তবে কোনো অধিবর্ষ (ইংরেজি লিপইয়ার) নেই। ১২ মাসের নাম দেওয়া হয়েছিল—স্বাধীনতা, শপথ, বেতারযুদ্ধ, যুদ্ধ, শোক, কৌশলযুদ্ধ, আকাশযুদ্ধ, জেলহত্যা, বিজয়, ফিরে আসা, নবযাত্রা ও ভাষা। ২০২০ সালের ১৬ মার্চ শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন শ্রমসচিব কে এম আলী আজম পঞ্জিকাটির মোড়ক উন্মোচন করে গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, পঞ্জিকায় বেশ কিছু সংস্কার প্রয়োজন। সব অংশীজনের মতামত নিয়ে ক্যালেন্ডারটি চূড়ান্ত করে এরপর সরকারি সব দপ্তরে রাখার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বানানো পঞ্জিকা

সম্পর্কিত নিবন্ধ