ধ্বংস ছাড়া কিছুই মিলছে না ফিলিস্তিনিদের
Published: 29th, January 2025 GMT
এক বছরেরও বেশি সময় পর জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ৩ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি উত্তর গাজায় তাদের ঘরবাড়ির অবশিষ্টাংশ দেখতে পাচ্ছেন। যাত্রাপথে ক্লান্তি ও পানিশূন্যতার কারণে কমপক্ষে দু’জন মারা গেছেন। নিজ নিজ বাড়ির খোঁজে এলাকায় ফিরে আসা এসব লোকজনের অপরিসীম সহায়তা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। খবর আলজাজিরা ও রয়টার্সের।
গাজার জনসংযোগ দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনের কারণে উত্তর গাজার বাসিন্দাদের বড় একটি অংশ এতদিন উপত্যকার দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। অবশেষে ৪৭০ দিন পর তারা নিজেদের বাড়িঘরে ফিরে আসছেন। সোমবার থেকে ফিরতে শুরু করা এসব লোকজন ধ্বংসস্তূপ ছাড়া আর কিছুই খুঁজে পাচ্ছেন না। উত্তরাঞ্চলে ফেরা অনেকে তাদের আপনজন-প্রতিবেশীকে খুঁজে পেয়ে খুশি। তবে ১৫ মাসের টানা যুদ্ধের পর উত্তর গাজার ইসরায়েলি চেকপোস্ট থেকে মালপত্রসহ কয়েক কিলোমিটার হেঁটে বাড়িতে ফেরার পর ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। অনেকেই তাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ির কাছে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করেছেন।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস পুনর্ব্যক্ত করেছে, বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলো ফিরতে শুরু করলেও তাদের জন্য পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র নেই। জরুরি, তাৎক্ষণিক সহায়তা এবং আরও আশ্রয় উপকরণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় দপ্তরের কর্মকর্তা গ্লোরিয়া ল্যাজিক বলেন, সেখানে কিছুটা আশঙ্কাও আছে। হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর সম্পূর্ণ ধ্বংস অবস্থায় পাবে। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রয়োজন।
এদিকে, যুদ্ধবিরতির মধ্যেও গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এক শিশুসহ দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ওয়াফা সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, সোমবার গভীর রাতে নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের পশ্চিমে আল-জিসর এলাকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষণে পাঁচ বছরের নাদিয়া মোহাম্মদ আল-আমাউদি নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া নুসেইরাত শহরে আটকে থাকা একটি গাড়ি সরানোর চেষ্টা করার সময় ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় এক ফিলিস্তিনি নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
গত ১৯ জানুয়ারি কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুসারে, ইসরায়েলি বাহিনী দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফা শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে সরে গেলেও অঞ্চলটি অত্যন্ত বিপজ্জনক আখ্যা দিয়ে এর মেয়র বিধ্বস্ত শহরে ফিরতে চাওয়া বাস্তুচ্যুতদের সতর্ক করেছেন। কারণ, ইসরায়েলি সৈন্যরা ফিলাডেলফি করিডোরে অবস্থান করছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!
ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন
গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’