সীমান্ত নিয়ে উত্তেজনার মধ্যেই ফের সরাসরি বিমান চলাচল শুরু করতে সম্মত হয়েছে ভারত ও চীন। দুই প্রতিবেশীর মধ্যে প্রাণঘাতী সামরিক সংঘাতের প্রায় পাঁচ বছর পর আবার ফ্লাইট চলাচল শুরু হতে যাচ্ছে। সোমবার চীন সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির সঙ্গে চীনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী উন ওয়েইদংয়ের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। খবর এনডিটিভির।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। এ ঘোষণাকে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ভারতের শীতল সম্পর্কের বরফ গলানোর ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান পরিষেবা ফের চালুর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। দুই দেশের কারিগরি কর্তৃপক্ষ দ্রুত এ বিষয়ে একটি হালনাগাদ কাঠামো নিয়ে আলোচনা করবে। চীন আবারও হিন্দু দেবতা কৃষ্ণের জনপ্রিয় তীর্থযাত্রার অনুমতি দিয়েছে, যা মহামারির শুরুতে স্থগিত করা হয়েছিল। বিবৃতিতে দুই দেশ সম্পর্ক পুনর্গঠনে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার এবং বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক ইস্যুগুলো সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে উল্লেখ করা হয়। মহামারির আগে ভারত-চীনের মধ্যে প্রতি মাসে প্রায় ৫০০টি সরাসরি ফ্লাইট পরিচালিত হতো।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বিমান পরিষেবা ফের চালুর বিষয়ে উল্লেখ না থাকলেও বলা হয়েছে, গত বছর থেকে দুই দেশ সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করছে। চীন-ভারত সম্পর্ক উন্নয়ন দুই দেশের মৌলিক স্বার্থের সঙ্গে পুরোপুরি সংগতিপূর্ণ।
২০২০ সালে হিমালয় সীমান্তে ভারত ও চীনের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর দুই দেশের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ওই সংঘর্ষের জেরে চীনা সংস্থাগুলোর জন্য বিনিয়োগের পথ কঠিন করে তোলে ভারত। ভারতীয় সরকার দেশটিতে জনপ্রিয় শতাধিক চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করে এবং সরাসরি যাত্রীবাহী ফ্লাইট চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
শাল-গজারি বনে রং ছড়িয়ে বিদায় নিচ্ছে বসন্ত
প্রকৃতি থেকে বসন্ত বিদায় নিচ্ছে। আসছে গ্রীষ্ম। বসন্তের বিদায়বেলায় বিস্তৃত সবুজ শাল-গজারি বনে বাসন্তী রং ছড়াচ্ছে হলদে শাল-গজারি ফুল। গাজীপুরের অধিকাংশ এলাকাজুড়ে এখন বসন্তের এই রং উৎসব চলছে। বিশেষ করে শ্রীপুর, গাজীপুর সদরের একাংশ, কাপাসিয়ার একাংশ ও কালিয়াকৈর উপজেলার বিস্তৃত এলাকাজুড়ে চলছে এই রঙের উৎসব।
শ্রীপুরের কর্ণপুর থেকে বরমী কিংবা হায়াতখার চালা থেকে গোসিংগা আঞ্চলিক সড়কের মতো অনেকগুলো সড়ক ভ্রমণ এখন যে কাউকে এক ব্যতিক্রমী বসন্তের অভিজ্ঞতা দেবে। বিশেষ করে এ সময় মাওনা থেকে কালিয়াকৈর উপজেলায় যাতায়াতের সড়কপথের পুরোটাই ফুলে ছেয়ে থাকে। এসব সড়কে ভ্রমণ করলে দেখা যায়, দুই পাশে শুকনা পাতার ওপর ছড়িয়ে আছে কাঁচা হলুদ রঙের শাল-গজারি ফুল। সঙ্গে আছে মোহনীয় গন্ধ।
শাল-গজারি বনের কোনো একটি গাছের মাথায় উঠে চারদিকে তাকালে মনে হবে, বনের গাছপালার ওপর কেউ যেন হলুদ রঙের মাদুর বিছিয়ে রেখেছে। ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়াচ্ছে মৌমাছিসহ নানা কীটপতঙ্গ। পাখিদের ওড়াউড়িতে বনজুড়ে যেন এক মহোৎসব চলছে। পাখির ডানা ঝাপটানো কিংবা হঠাৎ একটু দমকা বাতাসে গাছ থেকে নিচে ঝরে পড়ে হলুদ শাল-গজারি ফুল। বসন্তে গাছের সব পাতা ঝরে যাওয়ার পর গাছে থাকা হলুদ ফুলগুলো এক অনন্য সৌন্দর্য ছড়ায়।
প্রতিবছর বসন্তের মাঝামাঝি থেকে শাল-গজারিগাছে ফুল ফুটতে শুরু করে। এরপর গাছ থেকে অপরিণত অবস্থায় বেশির ভাগ ফুল নিচে ঝরে পড়ে। থেকে যাওয়া ফুলগুলো বড় হয়। বৈশাখের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে এসব ফুল পরিণত হয়ে যায়। তখন এর রং হয় কিছুটা বাদামি।
পরিণত ফুলের আবার অন্য রকম সৌন্দর্য ও বৈশিষ্ট্য আছে। এসব ফুলের এক পাশে থাকে বীজ। আর অন্য পাশে ফুলের পাপড়ির মতো ছড়ানো বড় বড় পাতলা পাপড়ি। একসময় গাছ থেকে বীজসহ এসব ফুল ঝরে পড়ে। তখন বীজের এক পাশে থাকা পাপড়ির মতো অংশ বাতাসে ঘুরতে ঘুরতে এলোমেলোভাবে দূরদূরান্তে বীজগুলোকে ছড়িয়ে দেয়।
বসন্তের এ সময় শাল-গজারি বনে বিভিন্ন ফুল ফোটে। এগুলোর মধ্যে আছে কনকচাঁপা, জারুল, শিমুল, শেফালি, শিরীষ, মান্দার, কামিনী, অতসী, দাঁতরাঙা, কাঞ্চন, বেলি, শটি, রঙ্গনসহ নানা ফুল।
শাল-গজারি বনের বর্ণিল বিভা বসন্তের সৌন্দর্যে যোগ করে নতুন মাত্রা