আন্দোলনরত অন্য সাত কলেজের সঙ্গে নয়, নিজেদের জন্য পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় চান সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। 
এ দাবিতে তারা এখন ‘শাটডাউন তিতুমীর’ কর্মসূচি শুরু করেছেন। দাবি না মানলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীর মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

এর আগে গত ৭ জানুয়ারি কলেজ ফটকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়’ লেখা টানিয়ে দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। এর পর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন। গত সোমবার রাতে সভা করে গতকাল মঙ্গলবার থেকে সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর আন্দোলনের সংগঠন ‘তিতুমীর ঐক্য’।
শিক্ষার্থীদের দাবি, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামো গঠন করতে হবে। সে সঙ্গে ভিসি ও প্রোভিসি নিয়োগ দিয়ে প্রশাসনিক কাঠামো গঠন করতে হবে। 

তিতুমীর কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থী বেলাল হোসেন বলেন, গত সোমবার সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এ মুহূর্তে আমাদের আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর কাঠামো প্রণয়ন করতে হবে। আর এই দাবি না মানলে বৃহস্পতিবার থেকে মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করব।

এদিকে আগামী শুক্রবার থেকে টঙ্গীতে শুরু হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা। ধর্মপ্রাণ লাখো মুসল্লি সারাদেশ থেকে রাজধানী ও টঙ্গীতে আসবেন। বৃহস্পতিবার মহাখালীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মহাসড়ক ও রেলপথ 
অবরোধ থাকলে হাজারো মানুষ বিপদে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিতুমীর ঐক্যের সংগঠক গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম সমকালকে বলেন, আমরা কাউকে বিপাকে ফেলতে নয়, আমাদের যৌক্তিক দাবি পূরণে আন্দোলন করছি। আমরা ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়েছি সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামো গঠন করতে। এ সময়ের মধ্যে ভিসি-প্রোভিসি নিয়োগ দিয়ে প্রশাসনিক কাঠামো গঠন করা না হলে বৃহস্পতিবার মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করব।

তিনি বলেন, তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না পাওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে শাটডাউন তিতুমীর কর্মসূচি পালন চলবে।
এর আগে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে গত ৩ ডিসেম্বর পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ কমিটি এখনও কোনো প্রতিবেদন দেয়নি।
পৃথক বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে গত ১৯ নভেম্বর সকাল থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ‘ক্লোজডাউন তিতুমীর’ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তার আগের দিন সকালে মহাখালীর আমতলী, কাঁচাবাজার ও রেলক্রসিংয়ে শত শত শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে অবরোধ করেছিলেন। পরে বিকেলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনার পর কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত ত ম র কল জ কল জ র অবর ধ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষা উপদেষ্টা, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে ক্যাম্পাসে এসেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সি আর আবরার। আজ বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে তিনি ক্যাম্পাসে পৌঁছান।

এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। উপদেষ্টা অনশনরত শিক্ষার্থীদের সামনে বসে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। কীভাবে ছয় দফা থেকে উপাচার্য পদত্যাগের এক দফা দাবি পরিণত হলো, সেই বিষয়টি শিক্ষার্থীরা জানান। তাঁরা উপাচার্যের অপসারণ ছাড়া কোনোভাবেই অনশন কর্মসূচি থেকে সরে আসবেন না বলেও উপদেষ্টাকে জানান।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ফোন করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সি আর আবরার।

এদিকে আমরণ অনশন কর্মসূচির তৃতীয় দিনে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন অনেক শিক্ষার্থী। তবে উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) গঠন করা কমিটির তিন সদস্যের দল আজ কুয়েটে আসার কথা রয়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে গত সোমবার বিকেল ৪টা থেকে ৩২ জন ছাত্র আমরণ অনশন শুরু করেন, তাঁদের মধ্যে ৬ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এখন ২৬ জন শিক্ষার্থী অনশনে আছেন।

গতকাল সন্ধ্যার দিকে তালা ভেঙে আবাসিক হলে প্রবেশ করেন ছাত্রীরা। এর আগে ১৫ এপ্রিল ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভাঙেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক লোক আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। এরপর ১৪ এপ্রিল রাতে সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি আগামী ২ মে থেকে আবাসিক হল খুলে দেওয়া ও ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।

এরপর ১৫ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবির ঘোষণা দেন এবং ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভেঙে হলগুলোয় প্রবেশ করেন। ১৬ এপ্রিল দুপুরে মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন। গত রোববার উপাচার্যের পদত্যাগের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয় এবং বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনে বসার ঘোষণা দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে রাবি শিক্ষার্থীদের প্রতীকী অনশন
  • আন্দোলন স্থগিত করে ক্লাসে ফিরছেন সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা
  • কুয়েটে শিক্ষা উপদেষ্টা, কথা বলছেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে
  • কুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষা উপদেষ্টা, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে
  • কুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানাল এনসিপি
  • তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করল কুয়েটের ছাত্রীরা, শিক্ষা উপদেষ্টার ফোন
  • সুনামগঞ্জ মেডিকেল শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত
  • কুয়েট শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ শিক্ষা উপদেষ্টার
  • সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ: আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের বৈঠক, দ্রুত দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস