বিভিন্ন দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবার। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় শুরু হওয়া কর্মসূচি চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে গণঅভ্যুত্থানে আহত আমিনুল ইসলাম ইমন বলেন, ‘আমরা এখানে যারা উপস্থিত হয়েছি, প্রত্যেকের পায়ে চিকিৎসার জন্য বেড়ি পরানো, হাতে ক্ষত। আমরা যুদ্ধ করেছি। সম্মুখসারিতে ছিলাম বলেই আমাদের গুলি লেগেছে, আহত হয়েছি। আমাদের ভাইয়েরা শহীদ হয়েছেন। আমরা এই সরকারেরই একটা অংশ। কিন্তু আমাদের পরিবার চলতে পারছে না। আমরা যারা আন্দোলন করেছি, আমাদেরই শিশু না খেয়ে থাকে, স্কুল-কলেজে যেতে পারে না। 

তাই শহীদ পরিবারগুলোকে এককালীন ১ কোটি ও আহতদের ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’
অবস্থান কর্মসূচি থেকে আরও কিছু দাবি জানানো হয়। সেগুলো হলো– আন্দোলনে আহত ও শহীদদের বিষয়ে সরকারের যে কোনো আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সংশ্লিষ্ট পরিবারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের জাদুঘর নির্মাণ, শহীদদের স্মরণে দিবস ঘোষণা, আহতদের আজীবন সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা, গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত এবং আহত ও শহীদ পরিবারের আজীবন নিরাপত্তা দিতে আইন প্রণয়ন করা, আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি বা আজীবন পুনর্বাসন, শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে শিক্ষা ও চাকরি করতে সক্ষমদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা কার্যক্রম চলছে। এরই মধ্যে ২ হাজার ২০০ পরিবার সহায়তা পেয়েছে। ‘শহীদ পরিবারের পাশে বাংলাদেশ’ কর্মসূচির আওতায় এ সহায়তা দিচ্ছে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন।
এদিকে গতকাল বিকেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, জুলাই আন্দোলনে চোখে ও মেরুদণ্ডে গুলিবিদ্ধ দু’জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন– ইমরান হোসাইন ও মহিউদ্দীন রাব্বি। সকালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল আই সেন্টার 
এবং ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের উদ্দেশে তারা রওনা দেন। এ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে 
মোট ২২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানো হলো।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গণঅভ য ত থ ন আহতদ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে চট্টগ্রামে অনশনে বৈষম্যবিরোধীরা

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ জড়িত সবার ফাঁসির দাবিতে অনশন করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর জামালখানে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে এ অনশন শুরু করেন তারা। পরে প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। রাত সাড়ে ৮টা এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অনশন চলছিল। এর আগে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেন তারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য রাসেল আহমেদ বলেন, ‘বিপ্লবের ছয়মাস পূরণ হতে যাচ্ছে। আমরা এখনও এ সরকারের কাছে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। আমাদের ভাইদের রক্ত এখনও রাজপথে লেগে আছে। আমি এখানে বসলাম, যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেবে না আমরা এখান থেকে উঠব না। আমাদের লড়াই চলছে, চলবে। আমরা আমাদের আমরণ অনশন চালিয়ে যাব। আমরা বিচার চাই। বিচার ছাড়া কোনো কথা নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ সরকার আমাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় বসেছে। ইউনূস সরকার কি করে। খুনি বাইরের দেশে বসে আছে। তাদের ধরে এনে ফাঁসির দড়িতে ঝুলাতে হবে। এটাই আমাদের শেষ কথা।’ 

রাসেল আহমেদ বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে যেভাবে ফ্যাসিবাদী কাঠামো গড়ে উঠেছিল, সেটাকে ভেঙে দিয়ে খুনি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমরা রাজপথে নেমে এসেছিলাম। এখন পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে আমরা ন্যূনতম সংস্কার ও বিচার পাইনি। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আমাদের দুই হাজারের অধিক ভাই জীবন দিয়েছে। তারা রাজপথে সাহসিকতার সঙ্গে আওয়ামী লীগের পেটোয়া বাহিনী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল।’

রাসেল আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার পর এখনও আমাদের খুনি হাসিনা, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের বিচারের দাবিতে রাজপথে নামতে হয়। আমাদের এ মুক্ত বাতাসে এখনও লাশের গন্ধ ভেসে বেড়ায়। বারবার আমাদের তাদের বিচারের দাবিতে আওয়াজ তুলতে হচ্ছে। এ অন্তর্বর্তী সরকারকে সেসব খুনিদের বিচার করার জন্যই ক্ষমতায় বসানো হয়েছে। আজও ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুণ্ডাবাহিনী বীর চট্টলার বুকে মিছিল করেছে। খুনি হাসিনাসহ আমাদের ভাইদের যারা খুন করেছে, তাদের বিচার ও ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে এখন থেকেই আমরণ অনশন পালন করব।’ 

আজ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাকিলা সোলতানা বলেন, ‘এখনো তারা সড়কে আছেন। তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে।’ 

অনশনকারীদের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- দ্রুত বিচার আইনে বিভাগীয় ট্রাইব্যুনাল গঠন করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ও উস্কানিদাতাদের গ্রেপ্তার-বিচার করা, শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত এনে বিচার করা, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণা করা, সব হত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ, অপরাধ ও নির্যাতনের বিচার করা, আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, আওয়ামী লীগ নেতাদের অবৈধভাবে অর্জিত সব অর্থ ও সম্পদ রাষ্ট্রীয়ভাবে বাজেয়াপ্ত করা, বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনা, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জীবনের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে গ্রহণ করতে হবে ও নতুন সংবিধান প্রণয়ন করাসহ রাষ্ট্রের যাবতীয় গণতান্ত্রিক সংস্কারের রূপরেখা প্রদান করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্রলীগের ‘ভয়ংকররূপে’ ফেরার বার্তা কী বার্তা দেয়?
  • চাঁদপুরে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে গোলাগুলি, নিহত ২
  • লাল, কালো, সাদার মন্ত্রে এবারের অমর একুশে বইমেলা
  • শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে চট্টগ্রামে অনশনে বৈষম্যবিরোধীরা
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত সবুজের লাশ উত্তোলন 
  • গণমাধ্যম এখন নজিরবিহীন স্বাধীনতা ভোগ করছে: প্রধান উপদেষ্টা
  • গণমাধ্যম নজিরবিহীন স্বাধীনতা ভোগ করছে: প্রধান উপদেষ্টা
  • ভারতে কুম্ভ মেলায় পদপিষ্ট হয়ে নিহত ১৫ 
  • শাবিপ্রবিতে গণঅভ্যুত্থানের শহীদের স্মরণে দোয়া