বর্তমানে দূষণ ও ধুলাবালির প্রকোপ থেকে মুক্ত থাকা অসম্ভব। এর প্রভাব আমাদের ত্বকের ওপরও পড়ে, যা ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ও স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললে ত্বককে দূষণ ও ধুলাবালির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করা সম্ভব।
এ প্রসঙ্গে শোভন’স মেকওভারের রূপবিশেষজ্ঞ শোভন সাহা বলেন, ‘দূষণ ও ধুলাবালি থেকে ত্বককে সুরক্ষিত রাখতে আপনাকে কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে। দূষণের মাত্রা বেশি এমন কোনো জায়গায় গেলে অবশ্যই ফেসমাস্ক ব্যবহার করতে হবে। বাইরে বের হলে ত্বককে যথাসম্ভব কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখার চেষ্টা করতে হবে। তাহলে ত্বক তুলনামূলক সুরক্ষিত থাকবে।’
তিনি জানান, বাইরে বের হওয়ার সময় মুখে ভালো সানস্ক্রিন এবং গায়ে সান প্রটেকশনযুক্ত লোশন লাগাতে হবে। বাইরে থেকে এসে প্রথমে ভালোভাবে ফেস ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুতে হবে। তারপর শ্যাম্পু, কন্ডিশনার এবং বডিওয়াশ ব্যবহার করে ভালোভাবে গোসল করতে হবে। গোসল শেষে চুলে সিরাম এবং বডি লোশন বা বডি অয়েল লাগিয়ে নেবেন। ফেসে টোনার লাগিয়ে এরপর ভালো রিপেয়ারিং নাইট ক্রিম লাগাতে হবে।
ত্বককে সুরক্ষিত রাখতে কী করবেন
ত্বক পরিষ্কার রাখা
ধুলাবালি ও দূষণ ত্বকের পোরসগুলো বন্ধ করে দিতে পারে; যা ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস এবং অন্যান্য ত্বকের সমস্যার কারণ হতে পারে। এ কারণে প্রতিদিন অন্তত দু’বার মুখ পরিষ্কার করুন। স্যালিসাইলিক এসিড বা চারকোলযুক্ত ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন, যা ত্বকের গভীর থেকে ময়লা পরিষ্কার করে। বাইরের কাজ শেষে ত্বক ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন
দূষণের কারণে ত্বকের আর্দ্রতা হারিয়ে যেতে পারে। এ জন্য নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। ত্বকের ধরন অনুযায়ী হালকা বা গভীর ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন। অ্যালোভেরা জেল, নারকেল তেল বা গ্লিসারিন ব্যবহার করলেও ত্বক আর্দ্র থাকবে।
সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন
সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ও দূষণ একত্রে ত্বকের বয়স বাড়িয়ে দিতে পারে। এসপিএফ ৩০ বা তার বেশি সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। বাইরে বের হওয়ার অন্তত ১৫-২০ মিনিট আগে সানস্ক্রিন লাগান। ঘরেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি। কারণ, জানালা দিয়ে আসা আলোও ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। আবার লাইটের আলোও ত্বকের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ স্কিন কেয়ার পণ্য
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে দূষণের কারণে সৃষ্ট ফ্রি র্যাডিকাল থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন সি, ভিটামিন ই বা গ্রিন টিসমৃদ্ধ পণ্য ব্যবহার করুন। এ ধরনের পণ্য ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায় এবং ত্বকের ক্ষতি পূরণে সহায়তা করে।
মেকআপের আগে প্রাইমার লাগিয়ে নিন
মেকআপ করার সময় প্রাইমার ব্যবহার করলে ত্বক মেকআপ এবং বাইরের ধুলাবালির প্রভাব থেকে কিছুটা রক্ষা পায়। ত্বকের ধরন অনুযায়ী অয়েল ফ্রি বা সিলিকনভিত্তিক প্রাইমার ব্যবহার করতে পারেন।
প্রাকৃতিক ক্লিনজার ব্যবহার
কিছু প্রাকৃতিক উপাদান ত্বকের জন্য দারুণ কার্যকর হতে পারে। গোলাপজল বা কাঁচা দুধ ব্যবহার করে ত্বক পরিষ্কার করুন। বেসন ও হলুদের মিশ্রণ দূষণ পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। মধু ত্বকের ময়েশ্চার ধরে রাখে।
হাইড্রেটেড থাকুন
ত্বকের সুস্থতার জন্য পানি পানের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে স্যুপ, ডাবের পানি ও ফলের রস পান করুন।
সুষম খাবার
খাদ্যাভ্যাসের ওপর ত্বকের স্বাস্থ্য অনেকাংশে নির্ভর করে। ভিটামিন এ, সি, ই এবং জিঙ্কসমৃদ্ধ খাবার খান। বাদাম, ফলমূল ও সবুজ শাকসবজি ত্বক উজ্জ্বল রাখতে সহায়তা করে। ভাজাপোড়া বা অতিরিক্ত মসলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন।
পর্যাপ্ত ঘুম
ঘুমের অভাবে ত্বকে ক্লান্তি দেখা দেয় এবং বলিরেখা পড়ে। প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন। ঘুমানোর আগে মেকআপ বা ধুলাবালি পরিষ্কার করে নিতে হবে।
নিয়মিত এক্সফোলিয়েশন করুন
ত্বকের মরা কোষ দূর করতে স্ক্রাব ব্যবহার করুন। প্রাকৃতিক স্ক্রাবার হিসেবে চিনি ও মধুর মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন। সপ্তাহে ২-৩ বার এক্সফোলিয়েট করুন।
মানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন
দূষণ শুধু ত্বকের জন্য ক্ষতিকর নয়, মানসিক চাপও ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। যোগব্যায়াম বা মেডিটেশন করতে পারেন। পছন্দের কাজ করে মানসিক চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। v
মডেল: রুহি; ছবি: কাব্য
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবহ র করত র ব যবহ র ক ম কআপ ত বকক
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!
ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন
গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’