সাবেক এমপি মুন্নাসহ ৪৭ জনের নামে হত্যা মামলা
Published: 28th, January 2025 GMT
বিএনপির এক কর্মীকে হত্যার অভিযোগে সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্নাসহ আওয়ামী লীগের ৪৭ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঘটনার ১০ বছর পর নিহত জাহাঙ্গীর হোসেনের স্ত্রী রোজিনা খাতুন রোববার কামারখন্দ আমলি আদালতে মামলাটি করেন।
মঙ্গলবার বাদীপক্ষের আইনজীবী এস. এম নাজমুল ইসলাম জানান, কামারখন্দ থানাকে মামলাটি এজাহারভুক্ত করে তদন্তপূর্বক আদালতে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। মামলায় ৪২ জনের নাম উল্লেখ ও চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।
জাহাঙ্গীর হোসেনের বাড়ি সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া গ্রামে। ২০১৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি কামারখন্দ উপজেলার ঝাঐল ওভারব্রিজের দক্ষিণ পাশ থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সাবেক এমপি মুন্না ছাড়াও মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন– সদর উপজেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন, সিরাজগঞ্জ পৌরসভার অপসারিত মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম শফি, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জানপুর মহল্লার মো.
এজাহারে বলা হয়েছে, জাহাঙ্গীরের কাছে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. আলম ও সয়দাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইদুল ইসলাম রাজা। চাঁদা দিতে না চাওয়ায় তারা জাহাঙ্গীরকে হত্যা ও গুমের পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে জাহাঙ্গীরকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। বাদী রোজিনা খাতুনকে মোবাইল ফোনে কল করে নবীদুল ইসলাম বলেন, ‘তোর স্বামীকে অপহরণ করেছি। জীবিত ফিরে পেতে চাইলে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে।’ এরপর দুই দফায় নবীদুলকে ১০ লাখ টাকা দেন তিনি। তারপরও জাহাঙ্গীরকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে তারা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ ল ইসল ম আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
সরস্বতি পূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জে জমজমাট প্রতিমার হাট
আগামী ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা। এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্নস্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এখন চলছে প্রতিমার বেচাকেনা। এবার প্রতিমার দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রীয়া থাকলেও কারিগররা বলছেন, জিনিস পত্রের দাম বাড়ায় প্রতিমার দামও কিছুটা বাড়তি।
পঞ্জিকা মতে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে আশীর্বাদ লাভের আশায় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা করে থাকেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। শুধু বাড়িতেই নয় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। দেবীর পায়ে অঞ্জলী দিয়ে অনেক শিশুর শিক্ষাজীবন শুরু হবে।
এ পূজার প্রধান অনুসঙ্গ হলো প্রতিমা। ফলে জেলা শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ী, সদর উপজেলার সাতপাড়, বৌলতলী, কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ, ভাঙ্গারহাট, ঘাঘর বাজারসহ অনেক স্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এসব হাটে আনা এক একটি প্রতিমা প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে।
আরো পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে রাসপূর্ণিমা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
পুটিয়ার কৃষ্ণপুরে চলছে কাত্যায়নী পূজা
এ বছর ক্রেতাদের মধ্যে প্রতিমার দাম নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ক্রেতাদের অনেকেই বলছেন, দাম সাধ্যের মধ্যে আবার কেউবা বলছেন দাম আগের চেয়ে বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে, এর মধ্যেও বিভিন্ন বয়সের মানুষ এসব হাট থেকে কিনে নিচ্ছেন পছন্দমতো প্রতিমা। হাটে শুধু প্রতিমাই নয় বিক্রি হচ্ছে ফুল, মালা, মিষ্টিসহ পূজার অন্যান্য উপকরণও।
রীতি অনুযায়ী বিদ্যার দেবী সরস্বতি পূজার পাশাপশি বসন্ত পঞ্চমীতে গণেশ, লক্ষ্মী, নবগ্রহ, বই, খাতা, কলম ও বাদ্যযন্ত্রের পূজা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে শীত ঋতুর অবসান হয়ে বসন্ত ঋতুর আগমন বার্তা ঘটবে।
প্রতিমা কিনতে আসা উত্তম সাহা বলেন, “শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীতে সরস্বতী প্রতিমার হাট বসেছে। এবার বাড়িতে পূজা করাব। ছেলেকে নিয়ে হাটে প্রতিমা কিনতে এসেছি। ঘুরে ফিরে পছন্দমত প্রতিমা কিনেছি। আমি মনে করি, পূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে।”
অপর ক্রেতা নারু গোপাল বলেন, “প্রতিবছর এখানে প্রতিমার হাট বসে। এবে এবার প্রতিমার আমদানি একটু কম। তারপরেও দেখে বুঝে দরদাম করে একটি প্রতিমা কিনেছি। এবার আমাদের বাড়িতে সরস্বতী পূজা হবে।”
অপর ক্রেতা পরিমল চন্দ্র ঢালী বলেন, “এক একটি প্রতিমা ২০০ তেকে ১০ হাজার টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হচ্ছে। হাটে এসে প্রতিমা দেখছি। পছন্দ হলে কিনে নিয়ে যাব। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিমার দাম একটু বেশি।”
গোপালগঞ্জ শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীর হাটে প্রতিমা বিক্রি করতে আসা উত্তম পাল বলেন, “এবার ২০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি। ইতোমধ্যে ১০টি বিক্রি করা হয়েছে। তবে এবার ক্রেতার সংখ্যা একটু কম। আশা করি, বাকি দুই দিনও বেচাকেনা হবে।”
কার্ত্তিক পাল বলেন, “কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ গ্রাম থেকে ৩০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি বিক্রির জন্য। চার থেকে পাঁচটি প্রতিমা বিক্রি করেছি। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, তাতে প্রতিমা বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ প্রতিমা তৈরির অনুসঙ্গের যে দাম তাতে খরচও উঠছে না।”
স্বপন পাল নামে এক বিক্রেতা বলেন, “প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহৃত ছোন, রংসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের দাম প্রতিবছর বেড়েই চলছে। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, সেই দামে বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তারপরেও বাব-দাদার পেশা আমরা ধরে রেখেছি।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ