দলগুলো নাম পড়লেই পরিস্কার চিত্রটা সামনে চলে আসবে। বিপিএলে শেষ কয়েক আসরে যে-ই দলগুলোর অংশগ্রহণ কেবল ‘নামকাওয়াস্তে’। আর সেসব দলে অংশ করে গড়পড়তার চেয়ে বেশি পরিশ্রম করে আড়ালে থাকতে হয় তারকা ক্রিকেটারদের।

শেষ কয়েক বছর ধরে তাসকিন আহমেদের সঙ্গে এমন কিছুই হচ্ছে। ২০২৩ সালে সরাসরি চুক্তি করে খেলেছিলেন ঢাকা ডমিনেটর্সে। নয় ম্যাচ খেলে তাসকিন পেয়েছিলেন ১০ উইকেট। দলের ফলাফল ১২ ম্যাচে ৩ জয়।পরের বছর তার ঠিকানা দুর্দান্ত ঢাকা।১২ ম্যাচে তাসকিনের ১৩ উইকেট। দলের ফলাফল ১২ ম্যাচে কেবল ১ জয়।

তারো পেছনে গেলে মিলবে আরো ভয়াবহ চিত্র। ২০১৯ সালে ১২ ম্যাচে তাসকিনের শিকার ২২ উইকেট। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী। তার দল সিলেট সিক্সার্সের ফলাফল ১২ ম্যাচে পাঁচ জয়। অতীতের সবকিছুকে তাসকিন ছাড়িয়ে গেছেন এবার। সরাসরি চুক্তি না করে খোলা মনে তাসকিন নাম লিখিয়েছিলেন প্লেয়ার্স ড্রাফটে। কিন্তু এখানেও ভাগ্য তাকে সহায়তা করেনি।

আরো পড়ুন:

বিপিএল নিয়ে ‘সিরিয়াস বিসিবি’, ৭ ফ্র্যাঞ্চাইজিকে বিসিবির ডাক 

নিয়তি মেনে বিশ্বমানের হওয়ার স্বপ্ন বোনা

দুর্বার রাজশাহী তাকে দলে ভেড়ায়। যারা টুর্নামেন্টজুড়ে আলোচনায় পরিশ্রমিক দিতে না পারায়, হোটেল বিল দিতে না পারায়, খেলোয়াড়দের দৈনিক ভাতা দিতে না পারায়। মাঠের বাইরের ইসু্যগুলোতে তাসকিন মাথা ঘামাননি। চেয়েছিলেন নিজে পারফর্ম করতে। সেটাই হয়েছে।

১২ ম্যাচে ২৫ উইকেট নিয়ে বিপিএলের এক আসরে সবচেয়ে বেশি উইকেট পাওয়ার রেকর্ড গড়েছেন। এতো ভালো করেও তার মুখ থেকে হাসি উধাও। কেননা বড় দল, গোছানো পরিবেশ, ভালোমানের সতীর্থ এবং পেশাদারিত্ব থাকা একটি দলে কয়েক আসর ধরে খেলতে না পারার আক্ষেপ তার।

তাসকিন এখন বাংলাদেশের পেস ব‌্যাটারি। নিজেকে ভেঙে নতুন করে গড়ে লাল-সবুজের পতাকাকে উড়িয়ে নিচ্ছেন বিশ্ব দরবারে। বাংলাদেশের পেস আক্রমণের বর্তমান ব্যাটন এখন তার হাতেই। ঢাকা এক্সপ্রেস হাসলে হাসে বাংলাদেশ, বিষয়টি এমনই দাঁড়িয়েছে।

শুধু বোলিংয়ে তাসকিন মুগ্ধ করছেন না। নিজের পরিপক্কতা, কথার সৌন্দর্য, ভাবনার গভীরতা, প্রতিপক্ষকে মূল‌্যায়ন, নিজের যত্ন, কাজের পরিধি নির্ণয়, আগ্রাসী মনোভাব, হারার আগে না হারার মানসিকতায় অনন‌্য হয়ে উঠেছেন।

সেই তাসকিনের আক্ষেপ বিপিএলে ভালো ও গোছানো দলে খেলতে না পারার, “এটা কিছুটা আনফরচুনেট। এই নিয়ে চারটা সিজন ব্যাক টু ব্যাক বড় দলে খেলার সুযোগ হয়নি। যার কারণে এই বছরে ড্রাফটে গেলাম। ড্রাফটে প্রথম ডাকেই রাজশাহী আমাকে পিক করে।”

“এখন আসলে কয়েকটা ম্যাচ আছে…সেগুলো উপভোগ করতে চাচ্ছি। আফসোস করলে আফসোস করা ছাড়া কিছু করার নেই। নিজেকে নিজের অনুপ্রাণিত করতে হয়। প্রক্রিয়াতে থাকি তাহলে জিনিসটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ভবিষ্যতে বড় দলগুলো যদি মনে করে আমি তাদের নেওয়ার মতো খেলোয়াড় তাহলে নিবে।”

তাসকিনের বিগত কয়েক বছরে ডাক এসেছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ থেকে। বোর্ডের অনাপত্তিপত্র পাননি বলে যাওয়া হয়নি। এছাড়া আরো ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও তার সুযোগ মিলেছে। কিন্তু বাংলাদেশের তারকা পেসারের সব জায়গায় খেলার সুযোগ হয়নি। সেসব নিয়ে আপাতত তার ভাবনায় নেই।

“তকদির বলেও কিছু আছে। ক্রিকেটার হিসেবে আমি এই মুহূর্তে কেবল উপভোগ করতে চাই। ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই। আল্লাহ যেন আমাকে সুস্থ রাখে এটাই চাওয়া।” 

ঢাকা/ইয়াসিন/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১২ ম য চ ব প এল উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ