রংপুরে রাতেও হতাশা নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন ট্রেন যাত্রীরা
Published: 28th, January 2025 GMT
বুক ভরা আশা নিয়ে দূরপাল্লার ট্রেনের অপেক্ষায় রংপুর রেলস্টেশনে ভিড় করেছিলেন অসংখ্য যাত্রী। তবে রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির ফলে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দিনব্যাপী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় সেই স্টেশনই এখন শুনশান নিরবতায় মোড়া। রাত ৯টার দিকেও বহু যাত্রী হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন, চোখে-মুখে তাদের ক্ষোভের ছাপ।
সকাল থেকেই স্টেশনে মানুষের আনাগোনা বাড়তে থাকে। দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রীরা একরাশ আশা নিয়ে স্টেশনে গিয়ে জানতে পারেন, ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। টিকিট কাউন্টার তালাবদ্ধ থাকায় পূর্বে টিকিট কাটা যাত্রীরাও দুর্ভোগে পড়েন।
নাটোরগামী যাত্রী রফিকুল ইসলাম বলেন, “আগের দিন টিকিট কেটেছি কিন্তু আজ ট্রেন বন্ধ বলে জানাল। বিকল্প ব্যবস্থার জন্য টাকা নেই। এখন কীভাবে ফিরব বুঝতে পারছি না।”
ঢাকাগামী যাত্রী মাহফুজ বলেন, “অসুস্থ থাকার কারণে ট্রেনে যাতায়াত আমার জন্য সহজ ছিল। দুইদিন আগে টিকিট কেটেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ ট্রেন বন্ধের কথা শুনে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি। কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত সমাধানে আসা, নইলে যাত্রীদের কষ্টের সীমা থাকবে না।”
রানিং স্টাফদের দাবি, তারা দীর্ঘদিন ধরে সঠিক বেতন, ভাতা, এবং কাজের পরিবেশ উন্নয়নের দাবিতে আন্দোলন করছেন। তারা বলছেন, বারবার জানানো সত্ত্বেও তাদের অভিযোগগুলো আমলে নেওয়া হয়নি।
রংপুর স্টেশনের সুপারিনটেনডেট শংকর গাঙ্গুলী বলেন, “পূর্বে বুকিংকৃত টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়ার কার্যক্রম চলছে। তবে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘব করা সম্ভব নয়। রানিং স্টাফদের দাবির বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে আলোচনা চলছে, তবে এখনো কোনো সমাধান আসেনি।”
স্টেশনে থাকা যাত্রীদের মধ্যে একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, “এমন অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিশেষ করে জরুরি কাজে ঢাকা বা অন্যান্য গন্তব্যে যেতে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।”
যাত্রীরা দ্রুত ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করার পাশাপাশি রানিং স্টাফদের ন্যায্য দাবিগুলো সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যথায় এই সংকট আরো দীর্ঘায়িত হলে ভোগান্তির মাত্রা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
ঢাকা/আমিরুল/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের প্রথম নারী ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যু
বাংলাদেশ প্রথম নির্বাচিত নারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট চন্দনা গ্রামের বাসিন্দা শামসুন্নাহার চৌধুরী মারা গেছেন।
শুক্রবার আছর নামাজের পর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মৃত্যুকালে তিনি স্বামী, সন্তানসহ আত্মীয়স্বজন ছাড়াও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। সিঙ্গাপুর, ভারতসহ বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহেরের স্ত্রী তিনি।
তিনি চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশী ও দেওরগাছ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৩ বার চেয়ারম্যান নির্বাহিত হন। এরমধ্যে ১৯৮৮ সালে প্রথম মিরাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সারা দেশে তখন তিনিই ছিলেন প্রথম নারী ইউপি চেয়ারম্যান। সেই থেকে রাজনীতিতে জড়ান। ১৯৯৩ সালে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন।
শামছুন্নাহার চৌধুরী ৩ বার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নানা সামাজিক দায়িত্ব পালন করেছেন। পেয়েছেন অতিশ দীপঙ্কর জয়িতাসহ নানা পুরস্কার। হয়েছেন জেলার শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান। কাজ করেছেন নারী উন্নয়নে।
তার মৃত্যুতে সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শোক প্রকাশ করেছে।