বুক ভরা আশা নিয়ে দূরপাল্লার ট্রেনের অপেক্ষায় রংপুর রেলস্টেশনে ভিড় করেছিলেন অসংখ্য যাত্রী। তবে রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির ফলে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দিনব্যাপী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় সেই স্টেশনই এখন শুনশান নিরবতায় মোড়া। রাত ৯টার দিকেও বহু যাত্রী হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন, চোখে-মুখে তাদের ক্ষোভের ছাপ।

সকাল থেকেই স্টেশনে মানুষের আনাগোনা বাড়তে থাকে। দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রীরা একরাশ আশা নিয়ে স্টেশনে গিয়ে জানতে পারেন, ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। টিকিট কাউন্টার তালাবদ্ধ থাকায় পূর্বে টিকিট কাটা যাত্রীরাও দুর্ভোগে পড়েন। 

নাটোরগামী যাত্রী রফিকুল ইসলাম বলেন, “আগের দিন টিকিট কেটেছি কিন্তু আজ ট্রেন বন্ধ বলে জানাল। বিকল্প ব্যবস্থার জন্য টাকা নেই। এখন কীভাবে ফিরব বুঝতে পারছি না।”

ঢাকাগামী যাত্রী মাহফুজ বলেন, “অসুস্থ থাকার কারণে ট্রেনে যাতায়াত আমার জন্য সহজ ছিল। দুইদিন আগে টিকিট কেটেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ ট্রেন বন্ধের কথা শুনে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি। কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত সমাধানে আসা, নইলে যাত্রীদের কষ্টের সীমা থাকবে না।”

রানিং স্টাফদের দাবি, তারা দীর্ঘদিন ধরে সঠিক বেতন, ভাতা, এবং কাজের পরিবেশ উন্নয়নের দাবিতে আন্দোলন করছেন। তারা বলছেন, বারবার জানানো সত্ত্বেও তাদের অভিযোগগুলো আমলে নেওয়া হয়নি।

রংপুর স্টেশনের সুপারিনটেনডেট শংকর গাঙ্গুলী বলেন, “পূর্বে বুকিংকৃত টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়ার কার্যক্রম চলছে। তবে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘব করা সম্ভব নয়। রানিং স্টাফদের দাবির বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে আলোচনা চলছে, তবে এখনো কোনো সমাধান আসেনি।”

স্টেশনে থাকা যাত্রীদের মধ্যে একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, “এমন অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিশেষ করে জরুরি কাজে ঢাকা বা অন্যান্য গন্তব্যে যেতে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।”

যাত্রীরা দ্রুত ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করার পাশাপাশি রানিং স্টাফদের ন্যায্য দাবিগুলো সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যথায় এই সংকট আরো দীর্ঘায়িত হলে ভোগান্তির মাত্রা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

ঢাকা/আমিরুল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। এর ফলে গাজাজুড়ে নিহতের মোট সংখ্যা দাঁড়াল ৫১ হাজারে।

গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ১ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। খবর আনাদোলু এজেন্সির।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে ভূখণ্ডটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ হাজার ৯৮৩ জনে পৌঁছেছে বলে সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি আক্রমণে আহত হওয়া আরও ১১৮ জনকে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে সংঘাতের শুরু থেকে আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৭৪ জনে পৌঁছেছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।

দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় গত সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬১৩ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৪ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ