বেক্সিমকোর শিল্প প্রতিষ্ঠান নিয়ে পাঁচ সিদ্ধান্ত
Published: 28th, January 2025 GMT
বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ৬ষ্ঠ সভায় পাঁচটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ড.
সভার সিদ্ধান্ত
বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের লে-অফকৃত কোম্পানিগুলো কর্তৃপক্ষ বন্ধ করবে। শ্রম আইনের অধীনে শ্রমিকদের আইনানুগ পাওনাদি ফেব্রুয়ারির মধ্যে পরিশোধ করা হবে। এ বিষয়ে সরকার প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবে। বেক্সিমকোর লে-অফকৃত কোম্পানির বন্ধ প্রক্রিয়া নিয়ে উপদেষ্টা কমিটির সিদ্ধান্ত টিভি স্ক্রলে না পাঠানোয়; অর্থাৎ কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করায়, রিসিভারকে বরখাস্তসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এবং বাংলাদেশ ব্যাংক। রিসিভার পরিবর্তনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ঋণ দেওয়া জনতা ব্যাংকসহ সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান কীসের ভিত্তিতে বা কী কী ডকুমেন্টের বিপরীতে এসব করেছে, অনিয়ম হয়েছে কি না; সে বিষয়ে ফরেনসিক অডিটসহ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তদন্ত-পূর্বক বিভাগীয় এবং আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে আগামী রবিবার বিএসইসি, এফআইডি এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকসহ সভা করে বেক্সিমকো ফার্মা ও শাইনপুকুর লিমিটেডের বন্ধকীকৃত শেয়ার বিক্রির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। অর্থ বিভাগ পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।সভায় বলা হয়, বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩২টি। অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৬টি। এগুলোর বিপরীতে ঋণ ১২ হাজার কোটি টাকা। লে-অফকৃত প্রতিষ্ঠান ১২টি, চলমান ফ্যাক্টরি ৩টি; বেক্সিমকো এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেড, বেক্সিমকো পিপিই লিমিটেড এবং আর আর ওয়াশিং লিমিটেড। ৩২টি ফ্যাক্টরির মোট ঋণ ২৯ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা। বেক্সিমকো লিমিটেডের মোট ঋণ ৪০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। জনতা ব্যাংকের ঋণ ২৩ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা।
সভায় শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়ে আলোচনা হয়। এতে বলা হয়, সরকার কর্তৃক বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিক-কর্মচারীদের ৩ মাসের বকেয়া বেতন সংস্থান করা হয়েছে। যার পরিমাণ, গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৫৫ কোটি টাকা; নভেম্বরে ৫৮ কোটি ৬৭ লাখ টাকা; ডিসেম্বরে ৪৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। চলতি বছরের জানুয়ারির বেতন উপদেষ্টা পরিষদের পরবর্তী সিদ্ধান্তের আলোকে প্রদান করার প্রস্তুতি রয়েছে।
এ ছাড়া আপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সরকার সুদমুক্ত ঋণ দিয়েছে; অর্থ বিভাগ থেকে ৫০ কোটি টাকা, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে ১০ কোটি টাকা। অর্থাৎ, সেপ্টেম্বর-২০২৪ থেকে অদ্যাবধি সরকার মোট ২২৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা প্রদান করেছে।
এদিকে, আদালত কর্তৃক বেক্সিমকো গ্রুপের ৩টি কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছে বলেও সভায় জানানো হয়।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ রহণ করব উপদ ষ ট ব যবস সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সরস্বতি পূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জে জমজমাট প্রতিমার হাট
আগামী ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা। এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্নস্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এখন চলছে প্রতিমার বেচাকেনা। এবার প্রতিমার দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রীয়া থাকলেও কারিগররা বলছেন, জিনিস পত্রের দাম বাড়ায় প্রতিমার দামও কিছুটা বাড়তি।
পঞ্জিকা মতে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে আশীর্বাদ লাভের আশায় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা করে থাকেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। শুধু বাড়িতেই নয় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। দেবীর পায়ে অঞ্জলী দিয়ে অনেক শিশুর শিক্ষাজীবন শুরু হবে।
এ পূজার প্রধান অনুসঙ্গ হলো প্রতিমা। ফলে জেলা শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ী, সদর উপজেলার সাতপাড়, বৌলতলী, কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ, ভাঙ্গারহাট, ঘাঘর বাজারসহ অনেক স্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এসব হাটে আনা এক একটি প্রতিমা প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে।
আরো পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে রাসপূর্ণিমা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
পুটিয়ার কৃষ্ণপুরে চলছে কাত্যায়নী পূজা
এ বছর ক্রেতাদের মধ্যে প্রতিমার দাম নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ক্রেতাদের অনেকেই বলছেন, দাম সাধ্যের মধ্যে আবার কেউবা বলছেন দাম আগের চেয়ে বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে, এর মধ্যেও বিভিন্ন বয়সের মানুষ এসব হাট থেকে কিনে নিচ্ছেন পছন্দমতো প্রতিমা। হাটে শুধু প্রতিমাই নয় বিক্রি হচ্ছে ফুল, মালা, মিষ্টিসহ পূজার অন্যান্য উপকরণও।
রীতি অনুযায়ী বিদ্যার দেবী সরস্বতি পূজার পাশাপশি বসন্ত পঞ্চমীতে গণেশ, লক্ষ্মী, নবগ্রহ, বই, খাতা, কলম ও বাদ্যযন্ত্রের পূজা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে শীত ঋতুর অবসান হয়ে বসন্ত ঋতুর আগমন বার্তা ঘটবে।
প্রতিমা কিনতে আসা উত্তম সাহা বলেন, “শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীতে সরস্বতী প্রতিমার হাট বসেছে। এবার বাড়িতে পূজা করাব। ছেলেকে নিয়ে হাটে প্রতিমা কিনতে এসেছি। ঘুরে ফিরে পছন্দমত প্রতিমা কিনেছি। আমি মনে করি, পূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে।”
অপর ক্রেতা নারু গোপাল বলেন, “প্রতিবছর এখানে প্রতিমার হাট বসে। এবে এবার প্রতিমার আমদানি একটু কম। তারপরেও দেখে বুঝে দরদাম করে একটি প্রতিমা কিনেছি। এবার আমাদের বাড়িতে সরস্বতী পূজা হবে।”
অপর ক্রেতা পরিমল চন্দ্র ঢালী বলেন, “এক একটি প্রতিমা ২০০ তেকে ১০ হাজার টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হচ্ছে। হাটে এসে প্রতিমা দেখছি। পছন্দ হলে কিনে নিয়ে যাব। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিমার দাম একটু বেশি।”
গোপালগঞ্জ শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীর হাটে প্রতিমা বিক্রি করতে আসা উত্তম পাল বলেন, “এবার ২০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি। ইতোমধ্যে ১০টি বিক্রি করা হয়েছে। তবে এবার ক্রেতার সংখ্যা একটু কম। আশা করি, বাকি দুই দিনও বেচাকেনা হবে।”
কার্ত্তিক পাল বলেন, “কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ গ্রাম থেকে ৩০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি বিক্রির জন্য। চার থেকে পাঁচটি প্রতিমা বিক্রি করেছি। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, তাতে প্রতিমা বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ প্রতিমা তৈরির অনুসঙ্গের যে দাম তাতে খরচও উঠছে না।”
স্বপন পাল নামে এক বিক্রেতা বলেন, “প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহৃত ছোন, রংসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের দাম প্রতিবছর বেড়েই চলছে। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, সেই দামে বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তারপরেও বাব-দাদার পেশা আমরা ধরে রেখেছি।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ