আড়তের দখল নিয়ে দুই গ্রুপে সংঘর্ষ-গুলি, আহত ২০
Published: 28th, January 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় একটি আড়তের দখলকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে দুইজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের সাওঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ইস্যুতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন ভুলতা সাওঘাট এলাকায় বিসমিল্লাহ আড়ত নিয়ে সেলিম প্রধানের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ী মুজিবর রহমানের বিরোধ চলছিল।
এ বিষয়ে ব্যবসায়ী মজিবুর রহমান বলেন, সেলিম প্রধানের মালিকানাধীন জমি ১০ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিতে ভাড়া নিয়েছি। সেখানে বালু ভরাট ও সেড নির্মাণ করে কাচাঁবাজারের আড়ত গড়ে তুলেছি। বর্তমানে পেশী শক্তি খাটিয়ে আড়তটি বেদখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন সেলিম প্রধান।
অন্যদিকে সেলিম প্রধানের দাবি, ভুয়া চুক্তিনামা তৈরি করে জোরপূর্বক জমি দখল করে আড়ত গড়ে তোলেন মজিবুর রহমান। জমি আমার, আমি তো দখলে নেব।
স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে আড়তটি দখল করতে সেলিম প্রধানের পক্ষ নেয় মাসুদুর রহমান ও তার লোকজন। অপরদিকে মজিবুর রহমান ও আড়তের ব্যবসায়ীদের পক্ষ নেয় রফিকুল ইসলাম ও তার লোকজন। আড়তের পাশের সড়ক দিয়ে রফিকুল ইসলাম তার লোকজনদের নিয়ে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসবিরোধী মিছিল বের করে। এসময় সেলিম প্রধানের বাড়ির ভেতর থেকে ওই মিছিলে ইটপাটকেল ছোড়া হয় ও মিছিলের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, গুলিবর্ষণ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়ায়। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতের মধ্যে রাজু ও স্বপন নামের দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এসময় একটি জিপ গাড়ি ও ১০ টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
পরে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আড়তের আসল মালিক কে সেটির জন্য আমরা উচ্চ আদালতের দারস্থ হবো।
সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ‘গ’ সার্কেল মেহেদী ইসলাম বলেন, সেলিম প্রধানের সঙ্গে মুজিবুর রহমানের বিসমিল্লাহ আড়ত নিয়ে র্দীঘদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। যেহেতু এখানে গুলিবষর্ণের ঘটনা ঘটেছে আমরা অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চালাব। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ স ঘর ষ আহত জ ব র রহম ন ল ইসল ম স ঘর ষ উপজ ল ব যবস আড়ত র
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে ছাত্রলীগের মিছিলের পর দুই আ.লীগ নেতার বাসায় হামলা
সিলেটে সকালে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ঝটিকা মিছিল করার পর বিকাল ও সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দুই নেতার এবং ছাত্রলীগের এক নেতারা বাসায় হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে।
বুধবার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সিলেটে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় বিকালে হামলা হয়েছে। প্রায় একই সময়ে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহেল আহমদের বাসায়ও হামলা চালানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
নোয়াখালীতে বিনোদনকেন্দ্রে হামলা, পুলিশসহ আহত ৭
রাঙ্গুনিয়ায় আহত আ.লীগ নেতার মৃত্যু
হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের বাসার জিনিসপত্র ভাঙচুর করেছে।
সিলেট নগরীর শুভেচ্ছা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরীর (নাদেল) বাসভবনের ‘ফ্ল্যাট অ্যাপার্টমেন্টের কার্যালয়ে’ হামলা চালায় একদল মানুষ। তারা মিছিল নিয়ে তার বাসায় ঢুকে পড়েন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নগরের পাঠানটুলা এলাকায় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় ৭০ থেকে ৮০টি মোটরসাইকেলে করে শতাধিক তরুণ-যুবক গিয়ে এ হামলা চালান। এ সময় হামলাকারীরা বাসায় ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাট চালান। বাসাটিতে আনোয়ারুজ্জামানের পরিবারের কেউ থাকেন না। দুজন তত্ত্বাবধায়ক বাসার দেখাশোনা করেন।
মেজরটিলা এলাকায় অবস্থিত ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহেল আহমদের বাসায় হামলা চালায় দুর্বৃত্তদের একটি দল। সন্ধ্যা সাতটায় রুহেলের বাসায় হামলার সময় তাঁর মা ও বোন বাসায় ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
অবশ্য এসব হামলায় হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
বুধবার সকাল থেকে সিলেট নগরীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের একটি মিছিলের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এরপর বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা মাঠে নামে। তারা ভিডিওতে দেখা যাওয়া চার-পাঁচজন মিছিলকারীকে ধরে পুলিশে হাতে তুলে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ছাত্রলীগের ব্যানারে ৩০ থেকে ৪০ জন তরুণ নগরের ধোপাদিঘিরপাড় এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেন। এতে ছাত্রদলের কিছুসংখ্যক নেতা-কর্মী বিক্ষুব্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের তিন নেতার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালান।
এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা নাদেলের বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। শুনেছি, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা এই হামলা চালিয়েছে।
তিনি বলেন, মিছিলকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।