চীন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মিয়ানইয়াং-এ বড় ধরনের লেজার-প্রজ্বলিত ফিউশন গবেষণা কেন্দ্র তৈরি করছে বলে ধারণা হচ্ছে। এটি এমন একটি উন্নয়ন যা পারমাণবিক অস্ত্রের নকশা এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন অন্বেষণে সহায়তা করতে পারে। বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক স্বাধীন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিএনএ কর্পোরেশনের গবেষক ডেকার এভলেথ জানিয়েছেন, প্রাপ্ত স্যাটেলাইট ছবিতে চারটি বহির্মুখী ‘বাহু’ দেখা গেছে যেখানে লেজার বে থাকবে এবং একটি কেন্দ্রীয় পরীক্ষামূলক বে থাকবে। এখানে হাইড্রোজেন আইসোটোপ ধারণকারী একটি টার্গেট চেম্বার থাকবে এবং শক্তিশালী লেজারগুলো একত্রিত হয়ে শক্তি উৎপাদন করবে।

এটি যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় ৩৫০ কোটি ডলারে নির্মিত ন্যাশনাল ইগনিশন ফ্যাসিলিটির অনুরূপ। এটি  ২০২২ সালে লক্ষ্যবস্তুতে পাম্প করা লেজারের চেয়ে ফিউশন বিক্রিয়ার মাধ্যমে বেশি শক্তি উৎপন্ন করেছিল।

জেমস মার্টিন সেন্টার ফর ননপ্রলিফারেশন স্টাডিজ (সিএনএস) এর বিশ্লেষকদের সাথে কাজ করা এভলেথের ধারণা, চীনা স্থাপনার পরীক্ষামূলক ‘বে’টি বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম এনআইএফ-এর তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বড়।

হেনরি এল স্টিমসন সেন্টারের পারমাণবিক নীতি বিশ্লেষক উইলিয়াম আলবার্ক বলেন, “এনআইএফ-ধরণের ফ্যাসিলিটি থাকা যেকোনো দেশ তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পারে এবং বিদ্যমান অস্ত্রের নকশা উন্নত করতে পারে এবং অস্ত্র পরীক্ষা না করেই ভবিষ্যতের বোমার নকশা তৈরিতে সহায়তা করতে পারে।

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

হিজরতের ৫টি শিক্ষা

সাহাবিদের হিজরতের ঘটনাবলি কেবল ইতিহাসের অংশ নয়, বরং তা মুমিন জীবনের জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। তাদের হিজরতের ঘটনা ও ত্যাগের আদর্শ থেকে কয়েকটি মৌলিক শিক্ষা উঠে আসে:

১. হিজরত প্রথমত আল্লাহর আদেশ পালন

হিজরত কেবল কৌশলগত পরিকল্পনা ছিল না, বরং ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা এক ইবাদতমূলক নির্দেশ। এই কারণে সাহাবিরা সবচেয়ে প্রিয় বস্তু—ঘরবাড়ি, সম্পদ, আত্মীয়স্বজন—সহজে ত্যাগ করতে পেরেছিলেন। (মুহাম্মদ সাইদ রমাদান আল-বুতি, ফিকহুস সিরাহ, পৃষ্ঠা: ১৫৬, দারুল ফিকর, দামেস্ক, ২০০৪)

২. ইমানের জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ

হিজরত শেখায় যে একটি জাতির ভিত্তি স্থাপন এবং সত্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য চরম মূল্য দিতে হয়। সুহাইব তাঁর সব সম্পদ, আবু সালামা তাঁর পরিবার এবং বনু জাহশ (রা.) জন্মভূমি ত্যাগ করে এই মূল্য পরিশোধ করেছিলেন। এই ত্যাগ বিনা মূল্যে অর্জিত হয়নি।

আরও পড়ুনমদিনায় হিজরত: ইসলামের ৬টি মাইলফলক০২ জুলাই ২০২৫৩. ইমানের সম্পর্ক অন্য সব সম্পর্ক থেকে ঊর্ধ্বে

ওমর (রা.) আইয়াশকে যখন তার মায়ের দোহাইয়ের ফিতনা থেকে সতর্ক করেছিলেন, তা প্রমাণ করে যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি আনুগত্যের বন্ধন অন্য সব জাগতিক সম্পর্ক (গোত্র, পরিবার, রক্ত) থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী।

৪. ঐকান্তিক প্রচেষ্টার সঙ্গে আল্লাহর ওপর ভরসা

হিজরত মোটেই বিশৃঙ্খল ছিল না। ওমর (রা.)-এর পরিকল্পনা, কাফেলাবদ্ধ হয়ে যাত্রা এবং কৌশল অবলম্বন—সবই প্রমাণ করে যে আল্লাহর ওপর নির্ভরতার পাশাপাশি মানবীয় প্রচেষ্টা ও সুচিন্তিত পরিকল্পনা গ্রহণ করাও আবশ্যক।

আরও পড়ুনমহানবী (সা.)–র হিজরত মদিনায় হলো যে কারণে২৯ জুন ২০২৫৫. আল্লাহর দয়ার বিশালতা

এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে ফিতনা ও দুর্বলতা মানুষের জীবনে আসতে পারে। কিন্তু যখন তারা মক্কায় বন্দী হয়ে নিজেদের পাপী মনে করছিলেন, তখন আল্লাহ তাআলা এই আয়াতটি নাজিল করে আশার দরজা খুলে দেন, ‘বলো, “হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের ওপর বাড়াবাড়ি করেছ (পাপ করেছ), তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করে দেন।”’ (সুরা জুমার, আয়াত: ৫৩)

এই আয়াতটি ছিল তাঁদের জন্য এক ঐশী ক্ষমা ও নতুন সুযোগের বার্তা।

হিজরত কেবল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নয়; এটি একটি অক্ষয়–দর্শন—যেখানে ইমান, ধৈর্য এবং আত্মত্যাগের সমন্বয়ে একটি আদর্শ সমাজ গঠনের বীজ নিহিত ছিল। এই দর্শনই মুসলমানদের নতুন এক দিগন্তে পৌঁছে দেয়।

আরও পড়ুনআবিসিনিয়ায় নারী সাহাবিদের দ্বিতীয় হিজরত১৪ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ