ভারতের বিনোদন ইন্ডাস্ট্রিতে কাস্টিং কাউচ নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। গত বছর প্রকাশিত হেমা কমিটির রিপোর্টে নারীশিল্পীদের সঙ্গে হওয়া যৌন হেনস্তার বিবরণ সবাইকে অবাক করেছে। ওই রিপোর্ট প্রশাকের পাশাপাশি বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে কাস্টিং কাউচের শিকার প্রথম সারির অনেক অভিনেত্রীরা এ বিষয়ে কথা বলেছেন। এবার কাস্টিং কাউচ নিয়ে মুখ খুললেন ‘দঙ্গল’ অভিনেত্রী ফাতিমা সানা শেখ।

দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে কীভাবে তাকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা হয়েছে তা নিয়েই বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন এই অভিনেত্রী।

ভারতের বিনোদনভিত্তক একটি ওয়েবসাইটের সঙ্গে কথা বলার সময় ফাতিমা দাবি করেছেন, একজন এজেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা হওয়ার সময় তাকে এমন সব কথা শুনতে হয়েছিল যা ছিল রীতিমতো অস্বস্তিদায়ক।

ফাতিমা বলেন, ‘ওই ব্যক্তি আমাকে বলেছিলেন, আপনি সবকিছু করতে রাজি তো? শুনে আমি বলেছিলাম, অবশ্যই। চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে কঠোর পরিশ্রম করব। কিন্তু উনি সেদিকে না গিয়ে কেবল ইঙ্গিতপূর্ণ কথাই বলে চললেন। একটা সময় পর আমি নির্বাক হয়ে কেবল লক্ষ করছিলাম মানুষ কতটা নিচে নামতে পারে!’

একইসঙ্গে হায়দরাবাদে এক প্রযোজকের সঙ্গে তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়েও কথা বলেছেন ফাতিমা। তার কথায়, ‘ওই প্রযোজক আমাকে বলছিলেন, তুমি তো জানোই তোমাকে লোকের সঙ্গে মেলামেশা করতে হবে।’

ফাতিমার কথায়, ‘যারা কু-প্রস্তাব দেন, তারা সরাসরি বলতেন না। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে নানা প্রস্তাব দেওয়া হত। কিন্তু কথা শুনেই যে কেউ বুঝবে তারা শারীরিক সম্পর্কে কথা বোঝাতে চাচ্ছে।’

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২, গুলিবিদ্ধ ৪

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার ছনখোলা এলাকায় ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে দুইজন নিহত হয়েছে। ডাকাত সন্দেহ করে মসজিদের মাইক থেকে ঘোষণা দেওয়া হলে তাদের পিটুনি দেওয়া হয়। এ সময় আক্রান্তরা পাল্টা গুলি চালালে স্থানীয় চারজন এলাকাবাসী গুলিবিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নেওয়া হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড ছনখোলা (পশ্চিম পাড়া) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, গণপিটুনিতে নিহত দুজনের মরদেহ থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গুলিবিদ্ধ অন্তত চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সাতকানিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুদীপ্ত রেজা বলেন, রাত ১০টার দিকে ইওছিয়া ইউনিয়নের চানখোলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। প্রকৃত কারণ জানতে আমরা ঘটনাটি তদন্ত করছি।

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনী আমাকে জানায় যে, ডাকাতরা যখন ডাকাতির চেষ্টা করে, তখন গ্রামবাসী মসজিদের লাউড স্পিকার ব্যবহার করে তাদের উপস্থিতি ঘোষণা করে। এ সময় ডাকাতরা পালানোর চেষ্টা করলে দুজনকে ধরে ফেলে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।’

সাতানিয়া থানার ডিউটি অফিসার আমজাদ হোসেন জানান, এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে দুজন মারা গেছে। তাদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। এ সময় কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুলিবিদ্ধদের চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। তবে কী কারণে এই ঘটনা ঘটেছে সেটা তিনি জানাতে পারেননি। ঘটনাস্থলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও অন্যান্য অফিসার আছেন বলে জানান তিনি।
 
স্থানীয়রা জানান, কাঞ্চনার নেজাম নামের এক রাজনৈতিক কর্মী ৫ আগস্টের পর মধ্যপ্রাচ্য থেকে দেশে ফেরেন। ফিরেই তিনি এলাকায় চাঁদাবাজি, ডাকাতি শুরু করেন। নেজাম গ্রুপের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠে। সোমবার নেজাম আরও কয়েকজনকে নিয়ে ছনখোলা এলাকায় গেলে তারাবি নামাজ পড়ে বের হওয়া মুসল্লিরা নেজাম গ্রুপকে ঘিরে ফেলে। মসজিদের মাইক থেকেও তখন ঘোষণা দেওয়া হয় এলাকায় ডাকাত পড়েছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নেজাম এলাকাবাসীর ওপর গুলি চালায়। এতে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়। বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে পরে নেজাম ও তার সঙ্গীদের গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলে নেজাম ও ছালেক নামে দুজন মারা যায়। 

একটি পিস্তল, ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার: পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সুদীপ্ত রেজা র বরাত দিয়ে সাতকানিয়া প্রতিনিধি সুকান্ত বিকাশ ধর জানান, গণপিটুনিতে নিহত এক ব্যক্তির কাছে থাকা একটি পিস্তল এবং ৮ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের পরিচয় পুলিশ জানাতে পারেনি। 

এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন, মো. ওবায়দুল্লাহ (২২), মো. নাসির(৩৮), মো. আব্বাস (৩৮) ও মো. মামুন সওদাগর (৪৮)। তাদের হাসপাতালে  চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম শান্তু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ