নারীর ফাঁদে ঢাকার গ্রাফিক্স ডিজাইনার বন্দরে অপহরণ, গ্রেপ্তার ৬
Published: 28th, January 2025 GMT
বন্দরে নারী দিয়ে ফাঁদ পেতে এক গ্রাফিক্স ডিজাইনারকে অপহরণের পর মুক্তিপন আদায়ের ঘটনায় সংঘবদ্ধ চক্রের ৬ অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত অপহরণকারিরা হলো, বন্দর থানার নবীগঞ্জ নোয়াদ্দা এলাকার বোরহান মিয়ার ছেলে শাকিল (২৮) একই থানার দাঁশেরগাও আমিরাবাদ এলাকার সালাউদ্দিন মিয়ার সালাউদ্দিন মিয়ার ছেলে শাকিল (১৯) নোয়াদ্দা এলাকার মোঃ হোসেন মিয়ার ছেলে রাহাত (২৪) কাইতাখালি এলাকার আব্দুল লতিফ মিয়ার ছেলে শিল্প (২৪) একরামপুর ইস্পাহানী এলাকার দুলাল মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ হোসেন (২৭) ও একরামপুর পৌরসভা এলাকার সোহেল পাটুয়ারী ছেলে মোঃ শরিফ (২৭)।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে বন্দর উপজেলার সাবদী এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত সোমবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে আনিকা ওরফে রিংকি (২৫) নামে এক নারীর মাধ্যমে ফাঁদ পেতে বন্দর উপজেলার মদনপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে ওই গ্রাফিক্স ডিজাইনাকে অপহরণ করা হয়।
এ ঘটনায় অপহৃত গ্রাফিক্স ডিজাইনার বাদী হয়ে গ্রেপ্তারকৃত ৬ অপহরণকারীসহ ২১ জনের নাম উল্লেখ করে বন্দর থানায় এ মামলা দায়ের করে।
পুলিশ গ্রেপ্তারকৃত ৬ অপহরনকারিকে মঙ্গলবার দুপুরে উল্লেখিত মামলায় আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। অপহৃত গ্রাফিক্স ডিজাইনার আল আমিন (৩০) রাজধানীর মিরপুর থানার শাহ আলীবাগ এলাকার আব্দুল খালেকের ছেলে।
তথ্যসূত্রে জানাগেছে, বন্দরের স্বল্পেরচক এলাকার শাকিল আহম্মেদের স্ত্রী আনিকা ওরফে রিংকির সঙ্গে গ্রাফিক্স ডিজাইনার আল আমিনের সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকে মাধ্যমে পরিচয় হয় এবং ম্যাসেঞ্জারে কথা হতো। এর ধারাবাহিকতায় গত সোমবার রাতে রিংকি ম্যাসেঞ্জারে আল আমিনকে বন্দর থানাধীন মদনপুর বাস স্ট্যান্ডে আসতে বলে।
পরে তাকে অপহরণ করে কাইতাখালি বাস স্ট্যান্ডের পাশে পাকুরের পাড়ে নিয়ে কাঠের ডাসা দিয়ে পিটিয়ে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। অপহরণকারিরা অপহৃত আল আমিনকে বেদম ভাবে পিটিয়ে তার কাছ থেকে মোবাইল ও ম্যানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়।
পরে অপহরনকারীরা অপহৃত পিতার কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপন হিসেবে ৪৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে অপহরনকারীরা অপহৃত গ্রাফিক্স ডিজাইনার আল আমিনকে কাইতাখালি এলাকা থেকে সাবদী এলাকায় তুলে নিয়ে যায়।
এক পর্যায়ে অপহৃত আল আমিন টহলরত পুলিশের গাড়ী দেখে থামানোর সংকেত দিলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। ওই সময় অপহরণকারীরা কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২১ জনের মধ্যে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ অপহরণ গ র প ত র কর অপহরণক র এল ক র ঘটন য় অপহ ত
এছাড়াও পড়ুন:
বৈঠকে অভিযোগ শুনেই ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
কক্সবাজারের চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল কাদের ভূঁইয়াকে এক দিনের মধ্যেই প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ শনিবার সকালে এক মতবিনিময় সভায় ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ শোনার পর পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজিকে ফোন দিয়ে তিনি এ নির্দেশ দেন।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভায় চকরিয়া থানার ওসি মিথ্যা মামলা দিয়ে লোকজনকে হয়রানি করছেন জানিয়ে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এক সাংবাদিক। এরপর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চকরিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন।
সভায় মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে অনুপ্রবেশ ও মাদক চোরাচালান ঘটতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, যেকোনো মূল্যে মাদকের চোরাচালান ও অনুপ্রবেশ ঠেকাতে হবে। গুজব-ছিনতাই, অপহরণ নিয়ন্ত্রণে রেখে জনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। দুর্নীতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনের সভাপতিত্বে এক ঘণ্টার ওই সভায় শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি); সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, এপিবিএন, আনসার, কারা অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, পাসপোর্ট অধিদপ্তর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি, দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) এবং সীমান্তনিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়। উপস্থিত কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যের বিপুল এলাকা এখন আরাকান আর্মির দখলে থাকলেও কাগজে–কলমে সেটি মিয়ানমারের। তারপরও আমরা নানাভাবে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করছি।’
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘কক্সবাজারে অপহরণের ঘটনা বেশি, এর কারণ রোহিঙ্গা। ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে এখানে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তারা বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। রোহিঙ্গাদের যত তাড়াতাড়ি মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে যাবে, ততই আমাদের জন্য মঙ্গল।’
বৈঠক শেষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, বৈঠকে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা কক্সবাজারের মাদক চোরাচালান, গুজব, ছিনতাই, অপহরণ, সীমান্তনিরাপত্তা, হাইওয়ের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। পর্যটক ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের জন্য অনুকূল পরিবেশ যেন বজায় থাকে, সে বিষয়েও নির্দেশনা দিয়েছেন। পাশাপাশি দুর্নীতি ও আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনকে সার্বিক বিষয়ে নজরদারি রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
উখিয়াতে বিজিবির নতুন ব্যাটালিয়নের যাত্রা শুরুদুই দিনের সরকারি সফরে গতকাল শুক্রবার দুপুরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কক্সবাজার আসেন। আজ শনিবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে দুপুরে কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের প্রশিক্ষণ মাঠে উখিয়াতে নবগঠিত ব্যাটালিয়ন (৬৪ বিজিবি) স্টেশনের সদর দপ্তর, গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এবং কে-নাইন ইউনিট অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের আনুষ্ঠানিক পতাকা উত্তোলন করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত শহীদদের স্মরণ ও আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের সুস্থতা কামনা করে ব্যাটালিয়নের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দেশের সীমান্ত রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বিজিবির ওপর ন্যস্ত। সীমান্তের নিরাপত্তা রক্ষা, চোরাচালান, নারী ও শিশু এবং মাদক পাচারসংক্রান্ত অপরাধ দমন, আন্তরাষ্ট্রীয় সীমান্ত অপরাধ প্রতিরোধ, অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রশাসনকে সহায়তা দিচ্ছে বিজিবি। নবগঠিত উখিয়া ৬৪ ব্যাটালিয়নও বাহিনীর সুনাম ও মর্যাদা বৃদ্ধিতে অবদান রাখবে।