বন্দরে জোরপূর্বক সম্পত্তি দখলে নিতে আপন বোন আফরোজা (৩৪) ও ভগ্নিপতিকে টিটু (৪৪)কে বেদম পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে পাষন্ড বড় ভাই ২৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী মশিউর রহমান  সুজু ওরফে নাডা সুজু ও তার স্ত্রী মানসুরা আক্তার মুক্তা। গত শনিবার রাতে বন্দর থানার  নবীগঞ্জ কদমরসুল দরগাহ সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। 

আহত স্বামী ও স্ত্রীকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় আহত আফরোজা আক্তার বাদী হয়ে আওয়ামীলীগ নেতা সুজুর বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। 

তবে অভিযোগের ৩ দিন অতিবাহিত হলেও রহস্যজনক কারণে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ কিংবা অভিযোগের তদন্তে যায়নি। পুলিশের গাফিলতির কারণে আহতদের পরিবারে চরম শংকা বিরাজ করছে। 

আহত আফরোজা আক্তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, নবীগঞ্জ কদমরসুল দরগাহ সংলগ্ন এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মশিউর রহমান সুজু ওরফে নাডা সুজু স্ত্রী মানসুরা আক্তার মুক্তার কু-পরামর্শে দীর্ঘ দিন ধরে তার আপন ছোট বোন আফরোজা আক্তারের সম্পত্তি দখলের পাঁয়তারা করে আসছে। 

আওয়ামীলীগ সরকারের ক্ষমতাকালে ২৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী হওয়ার সুবাদে সরকারি দলের ক্ষমতা দেখিয়ে সে সময় অনবরত নির্যাতন চালিয়েছে। ইদানীং আওয়ামী সরকারের পতনের পরও সে প্রভাব দেখিয়ে পূণরায় বাড়ি থেকে বের করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। 

আফরোজা আপত্তি জানালে সুজু ও তার স্ত্রী মুক্তা তাকে গালমন্দ করে। এ সময় আফরোজার স্বামী টিটু প্রতিবাদ করলে এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সুজু ও তার স্ত্রী মুক্তা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে লোহার পাইপ দিয়ে আফরোজা ও তার স্বামীকে বেদম পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। 

সুজু গংয়ের হামলায় আফরোজা ও তার স্বামী ডাক চিৎকার করলে আশ পাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে তাদেরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। 
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ আওয় ম ল গ আফর জ

এছাড়াও পড়ুন:

সরস্বতি পূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জে জমজমাট প্রতিমার হাট

আগামী ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা। এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্নস্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এখন চলছে প্রতিমার বেচাকেনা। এবার প্রতিমার দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রীয়া থাকলেও কারিগররা বলছেন, জিনিস পত্রের দাম বাড়ায় প্রতিমার দামও কিছুটা বাড়তি।

পঞ্জিকা মতে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে আশীর্বাদ লাভের আশায় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা করে থাকেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। শুধু বাড়িতেই নয় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। দেবীর পায়ে অঞ্জলী দিয়ে অনেক শিশুর শিক্ষাজীবন শুরু হবে।

এ পূজার প্রধান অনুসঙ্গ হলো প্রতিমা। ফলে জেলা শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ী, সদর উপজেলার সাতপাড়, বৌলতলী, কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ, ভাঙ্গারহাট, ঘাঘর বাজারসহ অনেক স্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এসব হাটে আনা এক একটি প্রতিমা প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে। 

আরো পড়ুন:

লক্ষ্মীপুরে রাসপূর্ণিমা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু

পুটিয়ার কৃষ্ণপুরে চলছে কাত্যায়নী পূজা

এ বছর ক্রেতাদের মধ্যে প্রতিমার দাম নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ক্রেতাদের অনেকেই বলছেন, দাম সাধ্যের মধ্যে আবার কেউবা বলছেন দাম আগের চেয়ে বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে, এর মধ্যেও বিভিন্ন বয়সের মানুষ এসব হাট থেকে কিনে নিচ্ছেন পছন্দমতো প্রতিমা। হাটে শুধু প্রতিমাই নয় বিক্রি হচ্ছে ফুল, মালা, মিষ্টিসহ পূজার অন্যান্য উপকরণও। 

রীতি অনুযায়ী বিদ্যার দেবী সরস্বতি পূজার পাশাপশি বসন্ত পঞ্চমীতে গণেশ, লক্ষ্মী, নবগ্রহ, বই, খাতা, কলম ও বাদ্যযন্ত্রের পূজা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে শীত ঋতুর অবসান হয়ে বসন্ত ঋতুর আগমন বার্তা ঘটবে।

প্রতিমা কিনতে আসা উত্তম সাহা বলেন, “শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীতে সরস্বতী প্রতিমার হাট বসেছে। এবার বাড়িতে পূজা করাব। ছেলেকে নিয়ে হাটে প্রতিমা কিনতে এসেছি। ঘুরে ফিরে পছন্দমত প্রতিমা কিনেছি। আমি মনে করি, পূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে।”

অপর ক্রেতা নারু গোপাল বলেন, “প্রতিবছর এখানে প্রতিমার হাট বসে। এবে এবার প্রতিমার আমদানি একটু কম। তারপরেও দেখে বুঝে দরদাম করে একটি প্রতিমা কিনেছি। এবার আমাদের বাড়িতে সরস্বতী পূজা হবে।”

অপর ক্রেতা পরিমল চন্দ্র ঢালী বলেন, “এক একটি প্রতিমা ২০০ তেকে ১০ হাজার টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হচ্ছে। হাটে এসে প্রতিমা দেখছি। পছন্দ হলে কিনে নিয়ে যাব। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিমার দাম একটু বেশি।”

গোপালগঞ্জ শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীর হাটে প্রতিমা বিক্রি করতে আসা উত্তম পাল বলেন, “এবার ২০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি। ইতোমধ্যে ১০টি বিক্রি করা হয়েছে। তবে এবার ক্রেতার সংখ্যা একটু কম। আশা করি, বাকি দুই দিনও বেচাকেনা হবে।”

কার্ত্তিক পাল বলেন, “কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ গ্রাম থেকে ৩০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি বিক্রির জন্য। চার থেকে পাঁচটি প্রতিমা বিক্রি করেছি। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, তাতে প্রতিমা বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ প্রতিমা তৈরির অনুসঙ্গের যে দাম তাতে খরচও উঠছে না।”

স্বপন পাল নামে এক বিক্রেতা বলেন, “প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহৃত ছোন, রংসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের দাম প্রতিবছর বেড়েই চলছে। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, সেই দামে বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তারপরেও বাব-দাদার পেশা আমরা ধরে রেখেছি।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ