ছাত্র আন্দোলনে হামলা: শাস্তির মুখে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের ৬ ছাত্রলীগ নেতা
Published: 28th, January 2025 GMT
জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের (রামেক) সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ছয় নেতাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। হামলার প্রায় ৭ মাস পর মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ এ শাস্তির সিদ্ধান্ত নেয়।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ ডা. প্রীতি প্রসূন বড়ুয়া।
বিভিন্ন মেয়াদে একাডেমিক কার্যক্রম ও মেডিকেল কলেজ ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। এদের মধ্যে একজনকে কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে এবং বাকি ৫ জনকে হোস্টেল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) ঘটনার প্রায় ৭ মাস পর মেডিকেল কলেজের সিট বরাদ্দ কমিটির সমন্বয়ক ড.
শাস্তি পাওয়া নিষিদ্ধ সংগঠনে নেতাকর্মীদের মধ্যে মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আয়াত শরীফকে ২ বছরের জন্য কলেজ থেকে এবং আজীবনের জন্য মেডিকেল কলেজ ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
তবে বাকি পাঁচজনকে শুধু কলেজ হোস্টেল থেকে ৩ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা হলেন, সহ-সাধারণ সম্পাদক ও সপ্তম ব্যাচের শিক্ষার্থী বিক্রম আদিত্য চাকমা, সাংগঠনিক সম্পাদক ও অষ্টম ব্যাচের ইমতিয়াজ হোসেন, সৃজন কান্তি দে, সিং সিং এ মং এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ও নবম ব্যাচের অভিজিৎ কুমার বৈদ্য।
ওই নোটিশে বলা হয়েছে, ১৬ জুলাই বহিরাগতের সঙ্গে কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে হওয়া সংঘাত ও অপ্রীতিকর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি সত্যতা পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই তাদের কলেজ হোস্টেল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হলো।
রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক প্রীতি প্রসূন বড়ুয়া বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন মেয়াদে এ শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঘটনার প্রায় ৭ মাস পর সিট বরাদ্দ কমিটির সমন্বয়ক ডা. হাবিবুল ইসলাম চৌধুরীর ২৬ জানুয়ারি স্বাক্ষরিত এক নোটিশে মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আয়াত শরীফকে ২ বছরের জন্য কলেজ থেকে এবং আজীবনের জন্য ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ছয় ছাত্রলীগ নেতাকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে।”
ঢাকা/শংকর/বিজয়/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ড ক ল কল জ ছ ত র ম ড ক ল কল জ র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সরস্বতি পূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জে জমজমাট প্রতিমার হাট
আগামী ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা। এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্নস্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এখন চলছে প্রতিমার বেচাকেনা। এবার প্রতিমার দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রীয়া থাকলেও কারিগররা বলছেন, জিনিস পত্রের দাম বাড়ায় প্রতিমার দামও কিছুটা বাড়তি।
পঞ্জিকা মতে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে আশীর্বাদ লাভের আশায় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা করে থাকেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। শুধু বাড়িতেই নয় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। দেবীর পায়ে অঞ্জলী দিয়ে অনেক শিশুর শিক্ষাজীবন শুরু হবে।
এ পূজার প্রধান অনুসঙ্গ হলো প্রতিমা। ফলে জেলা শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ী, সদর উপজেলার সাতপাড়, বৌলতলী, কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ, ভাঙ্গারহাট, ঘাঘর বাজারসহ অনেক স্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এসব হাটে আনা এক একটি প্রতিমা প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে।
আরো পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে রাসপূর্ণিমা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
পুটিয়ার কৃষ্ণপুরে চলছে কাত্যায়নী পূজা
এ বছর ক্রেতাদের মধ্যে প্রতিমার দাম নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ক্রেতাদের অনেকেই বলছেন, দাম সাধ্যের মধ্যে আবার কেউবা বলছেন দাম আগের চেয়ে বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে, এর মধ্যেও বিভিন্ন বয়সের মানুষ এসব হাট থেকে কিনে নিচ্ছেন পছন্দমতো প্রতিমা। হাটে শুধু প্রতিমাই নয় বিক্রি হচ্ছে ফুল, মালা, মিষ্টিসহ পূজার অন্যান্য উপকরণও।
রীতি অনুযায়ী বিদ্যার দেবী সরস্বতি পূজার পাশাপশি বসন্ত পঞ্চমীতে গণেশ, লক্ষ্মী, নবগ্রহ, বই, খাতা, কলম ও বাদ্যযন্ত্রের পূজা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে শীত ঋতুর অবসান হয়ে বসন্ত ঋতুর আগমন বার্তা ঘটবে।
প্রতিমা কিনতে আসা উত্তম সাহা বলেন, “শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীতে সরস্বতী প্রতিমার হাট বসেছে। এবার বাড়িতে পূজা করাব। ছেলেকে নিয়ে হাটে প্রতিমা কিনতে এসেছি। ঘুরে ফিরে পছন্দমত প্রতিমা কিনেছি। আমি মনে করি, পূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে।”
অপর ক্রেতা নারু গোপাল বলেন, “প্রতিবছর এখানে প্রতিমার হাট বসে। এবে এবার প্রতিমার আমদানি একটু কম। তারপরেও দেখে বুঝে দরদাম করে একটি প্রতিমা কিনেছি। এবার আমাদের বাড়িতে সরস্বতী পূজা হবে।”
অপর ক্রেতা পরিমল চন্দ্র ঢালী বলেন, “এক একটি প্রতিমা ২০০ তেকে ১০ হাজার টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হচ্ছে। হাটে এসে প্রতিমা দেখছি। পছন্দ হলে কিনে নিয়ে যাব। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিমার দাম একটু বেশি।”
গোপালগঞ্জ শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীর হাটে প্রতিমা বিক্রি করতে আসা উত্তম পাল বলেন, “এবার ২০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি। ইতোমধ্যে ১০টি বিক্রি করা হয়েছে। তবে এবার ক্রেতার সংখ্যা একটু কম। আশা করি, বাকি দুই দিনও বেচাকেনা হবে।”
কার্ত্তিক পাল বলেন, “কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ গ্রাম থেকে ৩০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি বিক্রির জন্য। চার থেকে পাঁচটি প্রতিমা বিক্রি করেছি। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, তাতে প্রতিমা বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ প্রতিমা তৈরির অনুসঙ্গের যে দাম তাতে খরচও উঠছে না।”
স্বপন পাল নামে এক বিক্রেতা বলেন, “প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহৃত ছোন, রংসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের দাম প্রতিবছর বেড়েই চলছে। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, সেই দামে বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তারপরেও বাব-দাদার পেশা আমরা ধরে রেখেছি।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ