সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা বেশ সরব। প্রতিনিয়ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন নতুন ছবি পোস্ট করেন তিনি। অনুরাগীদের সঙ্গে নানান অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেন। সম্প্রতি তিনি কিংবদন্তী সংগীতশিল্পী শবনমকে নিয়ে এক আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন। যেখানে পূর্ণিমা উল্লেখ করেছেন, ‘শিল্পী জীবন মাঝে মাঝে ভীষণ সার্থক মনে হয়।’

তার কথায়, ‘শিল্পী জীবন মাঝে মাঝে ভীষণ সার্থক মনে হয় যখন আপনার মতো কিংবদন্তী শিল্পী শবনম বলেন, ‘পূর্ণিমা তোমাকে আমার খুব ভালো লাগে, তোমার কাজ আমি দেখেছি।’

পূর্ণিমা বলেন, ‘আমাদের একজন শবনম আছেন, এটাই আমাদের গর্বের বিষয়। আপনার সান্নিধ্যে এসে সময় কাটিয়েছি। এই পরম ভালোলাগার স্মৃতি শ্রদ্ধার সাথে লালন করবো আমার হৃদয়ে।’ শেষে লিখেছেন, ‘প্রিয় শবনম ম্যাম  আপনি সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন অনেক দোয়া, ভালোবাসা।’

প্রসঙ্গত, শৈশবেই বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে নাচ শিখেছিলেন শবনম। একজন নৃত্যশিল্পী হিসেবে তিনি সুপরিচিতি লাভ করেন। সেখানেই একটি নৃত্যের অনুষ্ঠানে এহতেশাম তার নাচ দেখে এদেশ তোমার আমার চলচ্চিত্রের নৃত্যে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন। তিনি আরও কিছু ছবিতে অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন। কিন্তু এহতেশামের পাশাপাশি পরিচালক মুস্তাফিজের নজর কাড়তে সক্ষম হন অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেই। মুস্তাফিজ পরিচালিত ‘হারানো দিন’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে ১৯৬১ সালে নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন শবনম।

 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শবনম ন শবনম

এছাড়াও পড়ুন:

অনুষ্ঠানে প্রবেশে নারী সাংবাদিককে ‘বাধা’, যা হয়েছিল সেদিন

বাংলাদেশে রাজধানী ঢাকায় কওমী উদ্যোক্তাদের আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে একজন নারী সাংবাদিককে সংবাদ সংগ্রহের কাজে প্রবেশে বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে বেশ আলোচনা।

বুধবার ঢাকার আগারগাঁয়ে চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘কওমী উদ্যোক্তা সম্মেলন ২০২৫’ নামে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।

বেসরকারি সংবাদ সংস্থা-ইউএনবিতে কর্মরত সাংবাদিক এমি জান্নাত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এই বিষয়ে একটি স্ট্যাটাস দিলে আলোচনা-সমালোচনার সূত্রপাত হয়।

এমি জান্নাত বলেন, বুধবার বেলা ৩টায় চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানকার নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে প্রবেশে বাধা দিয়ে জানান, মেয়েদের প্রবেশ করতে দেওয়ায় নিষেধ রয়েছে।

এদিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরে আয়োজক গোষ্ঠী ফেসবুকভিত্তিক গ্রুপ ‘কওমী উদ্যোক্তা’র পক্ষ থেকে এই ঘটনায় ‘দুঃখ প্রকাশ’ করে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, “এ ধরনের কোনো ঘটনার দায় কোনোভাবেই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ধর্ম উপদেষ্টার নয়। এরূপ কোনো ঘটনার জন্য ধর্ম উপদেষ্টার ওপর দায় চাপানো অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক।”

এদিন দুপুরেই সচিবালয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে এই বিবৃতির কথা তুলে ধরে ‘বিতর্কের অবকাশ নেই’ বলে মন্তব্য করেন। অতিথি হিসেবে ঘটনার দায় তার নয় বলেও মন্তব্য করেন এই উপদেষ্টা।

কী ঘটেছিল এমির সঙ্গে ?

ইউএনবির সাংবাদিক এমি জান্নাত বলেছেন, অফিস থেকে দেওয়া অ্যাসাইনমেন্ট কাভার করতে বুধবার বেলা ৩টায় চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে যান তিনি।

জান্নাত বলেন, “গেট দিয়ে ঢোকার সময় গার্ডরা বলেন- আপনি তো ঢুকতে পারবেন না। কওমী, উনাদের প্রোগাম। উনারা মানা করছেন। ভলান্টিয়ার আছে। তাদের সাথে কথা বলেন, তারা যেতে দেয় কি না।”

অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে চেয়ে আরও ২০ মিনিট অপেক্ষার পর নিরাপত্তা প্রহরীরা ভেতর থেকে জেনে এসে জান্নাতকে বলেন, “মেয়েদের ভেতরে যেতে দেওয়া হবে না।”

এই ঘটনা জান্নাত তার অফিসকে অবহিত করেন। একই সঙ্গে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন, যা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।

সাংবাদিক জান্নাত তার পোস্টে লিখেছেন, “দেশের দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের মধ্যে মাননীয় ধর্ম উপদেষ্টাকে শুধু আলাদা করে ছেলেদের সেবায় কাজ করার জন্য নিয়োজিত করা হয়েছে কি না, প্রশ্ন রেখে গেলাম। যদি এটাই হয়ে থাকে, স্পষ্টত উল্লেখ করে কাজ করার অনুরোধ।”

“একজন ‘নারী’ সাংবাদিক বলে নিউজ কাভার করতে পারবে না, এটা কতটা দুঃখজনক এবং অবমাননাকর, বলতে পারেন?” ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন জান্নাত।

মন্ত্রণালয় থেকে অনুষ্ঠানটি কাভার করতে যে আমন্ত্রণ করা হয়েছে, তাতে নারী রিপোর্টার পাঠানো যাবে না- এমন বিষয় কেন উল্লেখ করা হয়নি, সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

এর আগেও এ-সংক্রান্ত প্রোগ্রাম কাভার করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ার ঘটনা ঘটেছে জানিয়ে জান্নাত লিখেছেন, “আবার তাদের মধ্যেই অনেকে ভেতরে সসম্মানে ঢুকতে দিয়েছেন, আমাদের সহকর্মী ভাইয়েরা জায়গা করে দিয়েছেন। কিন্তু সেগুলো দেশের দায়িত্বে থাকা সুনির্দিষ্ট কারও প্রোগ্রাম না হওয়ায় চুপ থেকেছি।”

জান্নাত ধর্ম উপদেষ্টার অনুষ্ঠানে নারীদের প্রবেশ নিয়ে এ ধরনের নির্দেশনা যারই হোক, সংশ্লিষ্টরা দায় এড়াতে পারেন কি না, সে বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

ফেসবুকে এমির এই পোস্টের পরে দেশটির গণমাধ্যমকর্মীদের অনেককেই এই বিষয়ে প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে।

তৃতীয় পক্ষের দিকে সন্দেহ ধর্ম উপদেষ্টার

ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বুধবারের ওই অনুষ্ঠানে ইতিবাচক মানসিকতা থেকে গিয়েছিলেন তিনি।

তিনি বলেন, “এটাকে আমি মনে করছি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, আর্থিক সচ্ছলতা আসবে। এটা যদি বাইরে যায়, তবে বৈদেশিক মুদ্রা আসবে। তারা ইনভেস্ট করবেন, বাজারে একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, কম্পিটিটিভ বাজার তৈরি হবে। এজন্য এটাকে (সম্মেলন) আমি ইতিবাচকভাবে দেখেছি।”

তবে অনুষ্ঠানে অবস্থানের সময়ে নারী সাংবাদিককে প্রবেশ করতে না দেওয়ার খবরটি তার জানা ছিল না বরে দাবি করেন খালিদ হোসেন।

এই ঘটনা তৃতীয় কোনো পক্ষ ঘটিয়েছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন খালিদ হোসেন।

বুধবার কওমী উদ্যোক্তা সম্মেলন কাভার করতে নারী হওয়ার কারণে প্রবেশ করতে পারেননি, এমন অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এমি জান্নাত নামে এক সাংবাদিক।

তিনি বলেন, “আমি ওখানে ছিলাম মাত্র এক ঘণ্টা। অনেক সাংবাদিক ছিলেন, নিউজও কভার করেছেন। আমি তখনো জানতাম না বা আমাকে কেউ বলে নাই এখানে নারী সাংবাদিককে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে। আমাকে কেউ বলেও নাই, আমি শুনিও নাই।”

খালিদ হোসেন বলেন, “রাত সাড়ে ১১টায় আমাকে জানানো হয়, আ্যামি জান্নাত নামে এক মহিলা একটা পোস্ট দিছেন। এগুলো করতে করতে রাত ১২টা হয়ে গেল।”

“আমি প্রয়োজনে এমি জান্নাতের সাথে কথা বলতাম। কিন্তু রাত গভীর হওয়ার কারণে আর যোগাযোগ করতে পারিনি। আজকেও এটা নিয়ে ফেসবুকে নানা কথা হয়েছে,” বলেন খালিদ হোসেন।

পরে কওমী উদ্যোক্তার পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতি পড়ে শোনান তিনি।

ধর্ম উপদেষ্টা দাবি করেন, “এই দায় তো আমার ওপর কোনো দিন নয়। আমি তো তাদের অনুষ্ঠানে গেস্ট হিসেবে গেছি। একটা পজিটিভ মানসিকতা নিয়ে গেছি যে, আসুক না আলেমরা উদ্যোক্তা হিসেবে আসুক।"

ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ফেসবুকে ওই নারী সাংবাদিকের পোস্টকে 'নিছক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' বলে বর্ণনা করা হয়েছে।

‘ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত’

‘কওমী উদ্যোক্তা’ প্ল্যাটফর্মটির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি রোকন রাইয়ান এই ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ ঘটনায় ধর্ম উপদেষ্টার কোনো দায় নেই বলে তুলে ধরেছেন।

তিনি বলেন, “এখানে একটা মিসলিড হচ্ছে। আমাদের অনুষ্ঠানে কোনো নারী আসতে পারবেন না, এ ধরনের কোনো এথিকে আমরা বিশ্বাস করি না। এটা সবার জন্য ওপেন ছিল, সবাই আসছে। কিন্তু কোনো একজন অডিয়েন্স কর্তৃক বিষয়টা এরকম হইছে।”

আরেকজন নারী সাংবাদিকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা যখন জানতে পারছি আমাদের স্বেচ্ছাসেবক নিজে চ্যানেল আইয়ের একজন নারী সাংবাদিককে নিয়ে অনুষ্ঠানে বসাইছে। ওনার নামটা বলতে পারছি না।”

এ ঘটনাকে ‘একটা ভুল’ বলে মনে করেন  রোকন রাইয়ান। তিনি বলেন, “ধর্ম উপদেষ্টাকে টার্গেট করে বলা হচ্ছে। আমাদের কোনো ত্রুটি বা এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ ছিল না যে, এ রকম নারী সাংবাদিককে হেনস্থা করা হবে বা করা হবে না। জাস্ট এটা একটা মিসটেক বলা যায়।”

“আমাদের নারী সাংবাদিক আসতে পারবে না- এ ধরনের কোনো ইয়েই... ছিল না। আমরা তো নারী উদ্যোক্তাদের নিয়েই কাজ করি। আমরা কেন না করব? আমাদের হলো উদ্যোক্তা প্রোগ্রাম,” বলেন রায়হান।

কিন্তু এই অনুষ্ঠানে সব আলেম ওলামা ছিলেন উল্লেখ করে রোকন রায়হান বলেন, “আমাদের অনুষ্ঠানে যারা ছিলেন সবাই আলেম-ওলামা। হয়তো অডিয়েন্স থেকে কোনো একজন এটা করতে পারেন। এটা খুবই নিন্দনীয়।”

নিজেদের অনুষ্ঠানে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারেন না মন্তব্য করে রোকন রাইয়ান বলেন, “এটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। আমরা এটা বিশ্বাস করি না যে, আমাদের অনুষ্ঠানে নারী সাংবাদিক আসতে পারবে না। এটা টোটালি একটা মিসটেক বলা যায়। আমাদের আগত কোনো গেস্ট কর্তৃক এ রকম একটা মিসটেক হতে পারে আরকি।”

“আমাদের নারী উদ্যোক্তাও আছে। তো আমরা নারীদেরকে বাধা দিবে- এটা আমরা বিশ্বাস করি না।”

রোকন রায়হান আরও বলেন, “দোষ দিলে আমাদের আয়োজকদের দিতে পারে। আমাদের আগত কোনো অডিয়েন্স কর্তৃক এটা ঘটছে। এখানে আমরা দোষী। ধর্ম উপদেষ্টা তো দোষী না। আমরা দোষ স্বীকার করছি।”

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লির মৃত্যু 
  • গায়িকা-অভিনেত্রী মারিয়ান ফেইথফুল আর নেই
  • সাইফুল-সাজ্জাদে তটস্থ চট্টগ্রামের ৫ থানার পুলিশ
  • কামরুল হাসানের কাছে শিল্প ধরা দিয়েছিল
  • ‘আমার চিত্রকর সত্তার মৃত্যু ঘটিয়েছি’
  • ‘রেখাচিত্রকে অবহেলা করা উচিত নয়’
  • অনুষ্ঠানে প্রবেশে নারী সাংবাদিককে ‘বাধা’, যা হয়েছিল সেদিন
  • আমাদের একজন শবনম আছেন, এটাই আমাদের গর্বের বিষয়: পূর্ণিমা
  • শবনমের সান্নিধ্য পেয়ে উচ্ছ্বসিত পূর্ণিমা