দেশে প্রথমবারের মতো পালিত হবে কৃষক দিবস
Published: 28th, January 2025 GMT
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কৃষকদের মধ্যে নতুন প্রযুক্তির সম্প্রসারণ, সচেতনতা বৃদ্ধি ও দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ‘কৃষক দিবস’ পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রসারণ কেন্দ্র (বাউএক) ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) প্রশাসন যৌথভাবে এ দিবসের আয়োজন করবে।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ শিক্ষা বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাউএকের পরিচালক অধ্যাপক ড.
এতে উপস্থিত ছিলেন বাউএকের অতিরিক্ত পরিচালক আফরোজা বেগম, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. সাইদুর রহমান, ড. মো. এনামুল হক সরকার প্রমুখ।
জানা গেছে, ৩০০ জন কৃষক-কৃষাণীর অংশগ্রহণে ‘কৃষকবান্ধব প্রযুক্তির সম্প্রসারণই হোক আমাদের অঙ্গীকার’ প্রতিপাদ্যে আগামী ৩০ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পালিত হবে কৃষক দিবস। দিবসটি উপলক্ষে কৃষক র্যালি, আলোচনা সভা, কৃষকদের জন্য বাকৃবির খামারগুলো পরিদর্শন ও কৃষকদের মধ্যে বীজ বিতরণ করা হবে। এছাড়াও প্রতিযোগিতামূলক সবজি বাগান চাষে সেরা সবজি বাগান চাষী ছয়জন কৃষক-কৃষাণীকে ক্রেস্ট ও সনদপত্র দিয়ে সম্মানিত করা হবে।
সকালে কৃষক র্যালির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন শুরু হবে এবং পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমান, ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল হক।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ড. মো. নাছির উদ্দিন বলেন, “কৃষকদের উদ্ভাবিত কৃষকবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা ও তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে আমরা কৃষক দিবস পালনের উদ্যোগ নিয়েছি। প্রতিষ্ঠার শুরুতে বাউএক কৃষকদের আর্থ-সামাজিক নানা উন্নয়নে কাজ করলেও কৃষক দিবস নামক আলাদা করে কোন দিবস পালন করেনি। তাছাড়া জাতীয়ভাবে কৃষক দিবস আছে বলে আমার জানা নেই।”
তিনি বলেন, “২০২৩ সালে বাকৃবির প্রশাসন প্রতি বছর জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহের বৃহস্পতিবার দিবসটি পালনে আদেশনামা জারি করে। কিন্তু বাস্তবে এখন পর্যন্ত তা আলোর মুখ দেখেনি। তাই বর্তমান বাকৃবি প্রশাসনের বিশেষ সহযোগিতায় বাউএক দিবসটি পালনের উদ্যোগ নিয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “বাউএক কৃষকদের কথা চিন্তা করে এবং তাদের নিয়ে কাজ করতে চায়। শীত ও গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষের প্রতিযোগিতা, গবাদি পশু-পাখির টিকা প্রদান, মাঠ ফসলের প্রদর্শনী, কৃষকদের প্রশিক্ষণ, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, পারিবারিক খাদ্য ও পুষ্টি কার্যক্রম, মাছ চাষ, মুরগি পালন কর্মসূচি, উন্নত ঘাস চাষ পদ্ধতিসহ কৃষকদের মাঝে নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করি আমরা। নতুন নতুন প্রযুক্তি, ফসলের জাত কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে বেশি পরিমাণে ফসল উৎপাদন ও তাদের লাভবান করে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করছি আমরা।”
১৯৬১ সালে কৃষি শিক্ষা, গবেষণা, সম্প্রসারণ ও প্রশিক্ষণ- এ চার মূলনীতির উপর ভিত্তি করে বাকৃবি প্রতিষ্ঠিত হয়। এ সম্প্রসারণ কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য ১৯৭৬ সালে ‘এগ্রি ভার্সিটি এক্সটেনশন’ প্রজেক্টের মাধ্যমে কৃষি সম্প্রসারণ কাজ বাকৃবিতে পুরোদমে শুরু হয়। ১৯৮৯ সালে প্রজেক্টের নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রসারণ কেন্দ্র (বাউএক) করা হয়।
ঢাকা/লিখন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ষকদ র ম
এছাড়াও পড়ুন:
যমজ বোনের ডেন্টালে ভর্তির সুযোগে আনন্দ, প্রথমবারের মতো আলাদা হওয়ার কষ্ট
টাঙ্গাইলের সখীপুরে যমজ বোন ডেন্টাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। গতকাল রোববার ডেন্টাল কলেজে বিডিএসে ভর্তি পরীক্ষার (২০২৪-২৫) ফলাফলে যমজ বোন উত্তীর্ণ হয়েছেন।
এই দুই বোন হলেন সামিয়া জাহান ওরফে আফসানা ও সাদিয়া জাহান ওরফে শাহানা। সামিয়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটে এবং সাদিয়া রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
এর আগে সখীপুরে আরেক শিক্ষক দম্পতির যমজ মেয়ে যারিন তাসনিম বুয়েটে এবং যাহরা তাসনিম মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান।
আরও পড়ুনএক বোনের বুয়েটে আরেকজনের মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ, প্রথমবার আলাদা হচ্ছেন তাঁরা০১ মার্চ ২০২৫সামিয়া ও সাদিয়ার পরিবার সূত্রে জানা যায়, সখীপুর পৌর এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাহারতা এলাকার বাসিন্দা আল আমিন মিয়া ও আফিয়া আক্তার দম্পতির যমজ মেয়ে সামিয়া ও সাদিয়া। এর আগে দুই বোন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন।
যমজ বোনদের বাবা আল আমিন আজ সোমবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ওরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হয়ে ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হবে। তাঁর দুই মেয়ে টাঙ্গাইলের কুমুদিনী সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ–৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। এর আগে এসএসসি ও জেএসসিতে তাঁরা জিপিএ–৫ পেয়েছিলেন।
সামিয়া জাহান ও সাদিয়া জাহান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা একসঙ্গে মায়ের পেটে ছিলেন। একসঙ্গে বড় হয়েছেন। এক বিছানায় ঘুমিয়েছেন। একই টেবিলে, একই বিদ্যালয়ে ও একই কলেজে পাশাপাশি বসে পড়াশোনা করেছেন। এখন স্বপ্নপূরণে ও ভবিষ্যৎ জীবন গড়তে দুজনকে দেশের দুই প্রান্তে চলে যেতে হবে। একজন আরেকজনকে ছেড়ে থাকবেন, ভাবতেই তাঁদের কষ্ট হচ্ছে।
বাবা আল আমিন মিয়া উপজেলার বড়চওনা-কুতুবপুর কলেজের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং জামায়াতে ইসলামীর সখীপুর উপজেলা শাখার আমির। মা আফিয়া আক্তার স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
সখীপুর পাইলট উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল কাইউম বলেন, ‘ওরা আমাদের বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ–৫ পেয়েছিল। ওরা আমাদের বিদ্যালয়ের গর্ব। এবার ওই দুই বোন ডেন্টাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে শুনে খুব খুশি হয়েছি।’