লালমনিরহাটে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে ব্যাংকে চুরির চেষ্টা, তদন্তে কমিটি
Published: 28th, January 2025 GMT
সোনালী ব্যাংকের লালমনিরহাট সদরের বড়বাড়িহাট শাখায় ছয় ফুট গভীর গর্ত খুঁড়ে চুরির চেষ্টা করেছে একদল দুর্বৃত্ত। সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ব্যাংকের নিরাপত্তা প্রহরীদের গর্ত খোঁড়ার বিষয়টি নজরে আসে। তবে ব্যাংক থেকে কোনো টাকা খোয়া গেছে কি না, তা জানা যায়নি।
এ ঘটনা তদন্তে রংপুর সোনালী ব্যাংকের বিভাগীয় অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মামুন-উর-রশিদ হেলালীর নির্দেশে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে বড়বাড়িহাট সোনালী ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত শাখা ব্যবস্থাপক রাজু মিয়া বাদী হয়ে সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয়রা জানায়, ব্যাংকের পেছেনের দেয়াল ঘেঁষে একটি সুড়ঙ্গ তৈরি করেন দুর্বৃত্তরা। ওই সুড়ঙ্গ দিয়ে ব্যাংকের ভোল্ড ঘরের পূর্ব পাশে রেকর্ড রুমে প্রবেশের চেষ্টা করে তারা। নিরাপত্তা প্রহরীরা টের পেয়ে চিৎকার করলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ব্যাংকের ভেতরে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও বাইরে ছিল না।
স্থানীয়রা আরও জানায়, বছর পাঁচেক আগে এই শাখায় দুর্বৃত্তরা ছাঁদ কেটে ব্যাংকের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেছিল।
নিরাপত্তা প্রহরী আসাদুল ইসলাম জানান, রাত সাড়ে ১১টার দিকে ব্যাংকের রেকর্ডরুমে প্রবেশ করলে বড় একটি গর্ত দেখতে পাওয়া যায়। পাশেই লোহার জগ ও শাবল পড়ে ছিল। ঘটনা আঁচ করতে পেরে তিনি ব্যাংক ব্যবস্থাপককে ফোন করেন। এসময় তার চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে চোরের দল পালিয়ে যায়। পরে দেওয়ালের পিছনে গিয়ে বড় একটি সুড়ঙ্গের সন্ধান মেলে। সেখানে ড্রিল মেশিন, করাতসহ বিভিন্ন সামগ্রী পড়ে ছিল।
শাখা ব্যবস্থাপক রাজু মিয়া জানান, বড় একটি দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গেছে ব্যাংকটি। এই শাখা থেকে কোন টাকা পয়সা ও জরুরি কাগজ খোঁয়া যায়নি। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
স্কুলছাত্রী অপহরণের মামলা করায় পরিবারকে হুমকি
স্কুলছাত্রীকে অপহরণের ঘটনায় গাজীপুরের কাশিমপুর মেট্রোপলিটন থানায় মামলা করেছিলেন তার মা। এ ঘটনার আট দিন পেরিয়ে গেলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। উল্টো তারা মোবাইল ফোনে কল করে মেয়েটির মা-বাবাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। এমনকি, মামলা তুলে না নিলে তারা পেট্রোল ঢেলে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার কথাও বলছে। এ ঘটনায় পরিবারটি ভুগছে নিরাপত্তাহীনতায়।
ওই কিশোরী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে পাশের বারেন্ডা গ্রামের জান্নাতুল মোল্লা প্রেমের প্রস্তাব দিত। এতে ব্যর্থ হয়ে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। ৩১ মার্চ ঈদের দিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ১০-১২ জন সশস্ত্র সহযোগী নিয়ে মেয়েটির বাড়িতে হানা দেয় জান্নাতুল। তার মাকে মারধর করে অস্ত্রের মুখে একটি প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে যায় ওই কিশোরীকে।
ঘটনার দিনই কাশিমপুর থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হয়। পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে ৩ এপ্রিল রাতে ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয় পুলিশ। এ ঘটনায় ৪ এপ্রিল ওই থানায় অপহরণ মামলা করেন মেয়েটির মা। এতে জান্নাতুল মোল্লা (২৬), তার বাবা সফিউদ্দিন মোল্লা (৬০), আফাজ উদ্দিন আফু (৫০), জহিরুল ইসলাম (৩৫), হিমেল হোসেনের (২৬) নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়।
মামলার বাদীর ভাষ্য, আসামি ও তাদের লোকজন মামলা তুলে নেওয়ার জন্য প্রায়ই ফোনে ও সরাসরি হুমকি দিচ্ছে। তা না করলে হত্যা ও ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেবে বলে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তারা মামলার সাক্ষীদেরও নানাভাবে চাপ দিচ্ছে। পুলিশও অজ্ঞাত কারণে আসামি গ্রেপ্তার করছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিবেশী বলেন, অপহরণে জড়িত পরিবারটি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ও বিত্তবান। তাই হয়তো পুলিশ ধরতে আগ্রহী নয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামি গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
কাশিমপুর মেট্রোপলিটন থানার ওসি মনির হোসেন বলেন, ৪ এপ্রিল অপহরণের মামলা হয়। জানতে পেরেই আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়। এজাহারভুক্ত আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।