রূপগঞ্জে প্রভাব বিস্তার ও আড়ৎ দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই গ্রুপের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, গুলিবর্ষণ ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় জিপ গাড়ি ও ১০টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটানো হয়। 

এ সংঘর্ষের ঘটনায় রাফি আহমেদ স্বপন ও রাজু ভুইয়া নামে দুইজন গুলিবিদ্ধসহ উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। তাদেরকে মূমূর্ষ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের সাওঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহসড়ক সংগলগ্ন সাওঘাট এলাকায় বিসমিল্লাহ আড়ৎ নিয়ে জাপান-বাংলাদেশ গ্রুপের চেয়ারম্যান সেলিম প্রধানের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ী মুজিবর রহমানের আড়ৎ নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। 

ব্যবসায়ী মজিবুর রহমানের দাবি, সেলিম প্রধানের মালিকানাধীন জমি তিনি ১০ বছরের জন্য চুক্তি ভিত্তিতে ভাড়া নেন। পরে সেখানে বালু ভরাট ও সেড নির্মাণ করে কাচাঁবাজারের আড়ৎ গড়ে তোলেন। বর্তমানে পেশী শক্তি খাটিয়ে আড়ৎটি বেদখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন সেলিম প্রধান। 

অপরদিকে, সেলিম প্রধানের দাবি, ভূয়া চুক্তিনামা তৈরী করে জোর পূর্বক জমি দখল করে আড়ৎ গড়ে তোলেন মজিবুর রহমান। 

এদিকে, আড়ৎটি দখল করতে সেলিম প্রধানের পক্ষ নেয় জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান ও তার লোকজন। অপরদিকে, মজিবুর রহমান ও আড়তের ব্যবসায়ীদের পক্ষ নেয় জেলা সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন আহবায়ক রফিকুল ইসলাম ও তার লোকজন।  

মঙ্গলবার দুপুরে আড়তের পাশে সেলিম প্রধানের বাড়িতে মাসুদুর রহমানের লোকজন অবস্থান নেয়। এসময় আড়তের পাশের সড়ক দিয়ে রফিকুল ইসলাম তার নেতাকর্মীদের নিয়ে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাস বিরোধী মিছিল বের করে।

এসময় সেলিম প্রধানের বাড়ির ভেতর থেকে ওই মিছিলে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। পরে উভয়পক্ষের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ পর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, গুলিবর্ষণ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এসময় কয়েকজনকে পিস্তল হাতে গুলি করতে দেখা গেছে।

সংঘর্ষে উভয়পক্ষের মাঝে অন্তত ২০ জন আহত হন। আহতের মধ্যে রাজু ও স্বপন নামের দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এসময় সেলিম প্রধানের ব্যবহৃত একটি জিপ গাড়ি জ¦ালিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ১০ টি মোটরসাইকেল ভাংচুর চালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। 

এসময় গাউছিয়া মার্কেট তাঁতবাজার, হাজী শপিং কমপ্লেক্সসহ আশপাশের মার্কেট ও হাঁটবাজারের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। জনমনে চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছেঁ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

জেলা সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন আহবায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাস বিরোধী মিছিল করছিলাম। ওই মিছিলে অতর্কিতভাবে সন্ত্রাসীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ গুলি ও হামলা করে।

জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। তবে শুনেছি আমার লোকজনের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। গুলিবিদ্ধসহ অনেকে আহত হয়েছে।  

এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) গ সার্কেল মেহেদী ইসলাম বলেন, সেলিম প্রধানের সঙ্গে মুজিবুর রহমানের বিসমিল্লাহ আড়ৎ নিয়ে র্দীঘদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। যেহেতু এখানে গুলিবষর্ণের ঘটনা ঘটেছে আমরা অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চালাবো। এ ঘটনা কাউকে গ্রেপ্তার যায়নি।      

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আড়তের আসল মালিক কে সেটির জন্য আমরা উচ্চ আদালতের দারস্থ হবো।    
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ছ ত র দল জ ব র রহম ন র রহম ন র র ল কজন ছ ত রদল ল ইসল ম স ঘর ষ র ঘটন ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লায় কিশোর গ্যাং জিনিয়াস গ্রুপের ছুরিকাঘাতে সুরুজ মিয়া আহত, আটক ১

ফতুল্লায় কিশোর গ্যাং জিনিয়াস গ্রুপের বিরুদ্ধে ট্রাক লুটের প্রতিবাদ করায় এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করেছে। এসময় স্থানীয়রা ধাওয়া করে রাম দা ছুরিসহ ফাহিম নামে ওই গ্রুপের একজনকে আটক করে গণপিটুনী দিয়ে পুলিশে দিয়েছে। বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় ফতুল্লার মাহমুদপুর করিম মার্কেট এলাকায় এঘটনা ঘটে।

জানাযায়, বুধবার রাতে কিশোর গ্যাং জিনিয়াস গ্রুপের রিয়াজ দলবল নিয়ে ফতুল্লার মাহমুদপুর করিম মার্কেট এলাকায় একটি নির্মানাধীন ভবনের সামনে থেকে পাথর ভর্তি ট্রাক ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। এসময় ট্রাক চালকের ডাক চিৎকারের আশপাশের লোকজন ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও এগিয়ে আসে।

এসময় কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাসীরা ট্রাক ছেড়ে দিয়ে উপস্থিত লোকজনদের চলে যেতে বলেন নয়তো কুপিয়ে সবাইকে টুকরো করে হত্যার হুমকি দেয়। তখন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যে সুরুজ মিয়া নামে একজন প্রতিবাদ করেন। এতে সন্ত্রাসীরা তার উপর ফুঁেস উঠে এলোপাথারী মারধর করে মাথায় ও পিঠে ছুরিকাঘাত করেন।

তখন এলাকাবাসী তাদের ধাওয়ার করে একজনকে রাম দা ও ছুরিসহ আটক করেন। অন্যরা পালিয়ে যায়। এরপর আটককৃতকে গুপিটুনী দিয়ে পুলিশে সোর্পদ করেন এবং আহত সুরুজ মিয়াকে শহরের খানপুর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়।

স্থানীয়রা জানান, জিনিয়াস গ্রুপের লিডার রিয়াজ তার সহযোগী শুভ, হাসান, সোহান, সোহাগ, বাবু, মাইন উদ্দিন, ফাহিম, জাকির ও নূর মোহাম্মদ নাঈম সহ আরো ২০/৩০ জন। তাদের বয়স ১৬ থেকে ১৮ বছর হবে।

তারা সাইনবোর্ড, মাহমুদপুর, কদমতলী, ডেমরা, সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড়, মৌচাক ও তার আশপাশের এলাকায় ছিনতাই ডাকাতি ও চাঁদাবাজি করেন প্রকাশ্যে। দীর্ঘদিন ধরে তারা অপরাধ কর্মকান্ডে বেপরোয়া। কোন অপরাধেই তারা ব্যর্থ হয়না এজন্য তাদের গ্রুপের নাম রেখেছেন জিনিয়াস গ্রুপ।

এবিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ একজনকে আটক করেছে। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা পক্রিয়াধীন আছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফতুল্লায় কিশোর গ্যাং জিনিয়াস গ্রুপের ছুরিকাঘাতে সুরুজ মিয়া আহত, আটক ১
  • লক্ষ্মীপুরে সংঘর্ষে ২ জন নিহত: বিএনপির ১৪ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
  • চট্টগ্রামে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, আহত ১০
  • নড়াইলে প্রতিপক্ষের হামলায় বিএনপি নেতার হাত বিচ্ছিন্ন
  • মুন্সীগঞ্জে অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্যসহ ছিনতাইকারী বাবু মিজি আটক