আলম, ফারুক, শরিফুল, শাহাদৎ, মেহেদী, আলামিন ও রইস সবাই মাছ চাষি। তাদের কাছ থেকে ‘বাকিতে’ মাছ কিনে দেশের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করতেন পুলিশ সদস্য হুমায়ুন কবির হিমু। প্রথমে নগদ মূল্যে চাষিদের কাছ থেকে মাছ কিনতেন তিনি। এভাবে চাষিদের বিশ্বাস অর্জন করেন পুলিশ সদস্য। এই সুযোগে বাকিতে মাছ নিয়ে লাপাত্তা তিনি। কর্মস্থলেও রয়েছেন অনুপস্থিত। 

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এলাকার অন্তত ৫০ চাষির কাছ থেকে প্রায় ৭ কোটি টাকার মাছ বাকিতে নিয়ে আত্মগোপন করেছেন পুলিশ সদস্য হুমায়ন। অভিযুক্ত হুমায়ুন কবির নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলার পুরুলিয়া গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে। 

ভুক্তভোগী আলম, ফারুক, শরিফুল, শাহাদৎ, মেহেদী, আলামিন, রইসসহ অন্তত ১০ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অভিযুক্ত হুমায়ন কবির পুলিশ সদস্য হিসাবে পুলিশ সদর দপ্তরে কর্মরত। পাশাপাশি চার বছর ধরে এলাকায় তিনি ও তা প্রতিনিধির মাধ্যমে মাছের ব্যবসা করেন। কিন্তু গত বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরে চাষিদের অধিক লাভের প্রলোভন দিয়ে চড়া দামে বাকিতে মাছ কিনে রয়েছেন লাপাত্তা। শুধু গুরুদাসপুর নয় পার্শ্ববর্তী বড়াইগ্রাম, সিংড়া ও চাটমোহর উপজেলার অন্তত শতাধিক চাষিরা বাকিতে মাছ বিক্রি করে হয়েছেন প্রতারিত।

চাষিরা টাকা উদ্ধার ও প্রতারক হুমায়ুনের গ্রেপ্তারের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন। আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে পুরুলিয়া বাজারে ঘণ্টাব্যাপী ওই মানববন্ধনে ভুক্তভোগী মাছ চাষিসহ অন্তত ৫ শতাধিক মানুষ অংশ নেন।

পুরুলিয়ার রইস উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, তিনি গত মাসের শুরুতে হুমায়ুনের কাছে বাকিতে ৩৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করেন। ১৫ দিন পর টাকা দেওয়ার কথা বলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে পলাতক রয়েছেন হুমায়ুন। তিনি টাকা ফেরতসহ তার শাস্তির দাবী জানান।

একই এলাকার আলম বলেন, পুলিশ সদস্য হুমায়নের কাছে ১৬ লাখ ১১ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করেছেন। টাকার জন্য চাপসৃষ্টি করলে তাকে ইসলামী ব্যাংকের একটি চেক দেওয়া হয়। আমার মতো অন্তত ১০ চাষিকে ব্যাংক চেক দেওয়া হয়। টাকা তুলতে গিয়ে তারা দেখেন, প্রতারক হুমায়ন আগেই ওই নম্বরের চেক বই হারিয়ে গেছে মর্মে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। ভুক্তভোগী চেক নিয়েও প্রতারিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

টাকা ফিরে পেতে উজ্জ্বল হোসেন বাদী হয়ে ১৫ জানুয়ারি গুরুদাসপুর থানায় প্রতারক হুমায়ুন ও তার ৮ সহযোগীর নাম উল্লেখ করে অভিযোগ দায়ের করেছেন। 

অপরদিকে মকলেছুর রহমান নামে অপর মাছ চাষি সিংড়া থানায় এবং পুলিশ সদর দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য হুমায়ন কবিরের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বাসায় গিয়েও পরিবারের কোনো সদস্যকে পাওয়া যায়নি।

গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারওয়ার হোসেন জানান, হুমায়ুন কবিরের নামে মাছ চাষিদের একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাকে আটকের চেষ্টাও চলছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প ল শ সদস য প ল শ সদস য হ ম য় কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে ছাত্রদলের ২ পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৪

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ফেসবুকে স্ট্যাটাস নিয়ে ছাত্রদলের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অন্তত চারজন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) উপজেলার চৌমুহনী সরকারি সালেহ আহমেদ কলেজে ঘটনাটি ঘটে।  

চৌমুহনী সরকারি সালেহ আহমেদ কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শাকের আহমেদ সবুজ অভিযোগ করে জানান, কয়েকদিন আগে তিনি চৌমুহনী সরকারি সালেহ আহমেদ কলেজ ছাত্রদলের নতুন কমিটির সমালোচনা করে ফেসবুক একটি স্ট্যাটাস দেন। ওই স্ট্যাটাসে কমেন্ট করেন কলেজ ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি হৃদয়। আজ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি হৃদয়ের নেতৃত্বে কলেজ প্রাঙ্গণে ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়। 

আরো পড়ুন:

ক্যারাম খেলা নিয়ে ২ গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, আহত ২০

লক্ষ্মীপুরে স্বেচ্ছাসেবক দল ও কৃষক দলের সংঘর্ষে নিহত ১

সবুজ বলেন, ‍“দুপুর ১২টার দিকে ছাত্রদল নেতা প্রান্ত, রাফি ও তমাল কলেজ প্রাঙ্গণে পাল্টা কর্মসূচি পালন করে। এতে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ফেসবুক স্ট্যাটাস ও পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির জেরে হৃদয় আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে হৃদয়ের নেতৃত্বে তার সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কলেজের পাশে আমার দোকানে হামলা-ভাঙচুর চালায়। তারা আমাকে আহত করে। খবর পেয়ে পুলিশ এলে পুনরায় পুলিশের সামনে হৃদয়ের অনুসারীরা আমার দোকানে হামলা চালায়।” 

চৌমুহনী সরকারি সালেহ আহমেদ কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ইয়াসিন হৃদয় অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, “কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমার নেতৃত্বে কলেজ প্রাঙ্গণে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস গণহত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। ওই কর্মসূচিতে বহিরাগত সবুজের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। এতে আমিসহ ছাত্রদলের তিনজন নেতাকর্মী আহত হন।”  

বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাক্ষা চন্দ্র দাস বলেন, “বহিরাগত কয়েকজন যুবক কলেজে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায় বলে শুনেছি। এর বেশি কিছু আমার জানা নেই।”  

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি লিটন দেওয়ান বলেন, “কলেজ ছাত্রদলের নতুন কমিটি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে বিশৃঙ্খলা হয়। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” 

ঢাকা/সুজন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সানির ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • এক ঘণ্টা দোকান বন্ধ রেখে ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ, আরও দুজন গ্রেপ্তার
  • ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে ছাত্রদলের ২ পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৪
  • দশম শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে করলেন প্রধান শিক্ষক; তদন্তে কমিটি
  • গাজায় গণহত্যা: বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে থেমে নেই প্রতিবাদ
  • চট্টগ্রামে পদোন্নতি বঞ্চিত ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডদের মানবন্ধন
  • শিশু তাবিবের হাতে প্ল্যাকার্ড ‘বাবা হত্যার বিচার চাই’
  • লবণের ন্যায্যমূল্য চায় এনসিপি
  • তিন নদীতে দেদার বালু উত্তোলন ভাঙনের ঝুঁকিতে বাড়িঘর
  • গবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগ, প্রত্যাহার দাবি