সমকামিতা প্রচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে নেওয়া প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। তার স্থায়ী অপসারণের দাবিতে উপাচার্য বাসভবন ঘেরাও করেছেন তারা।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। পরে তারা মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপাচার্য বাসভবনে গিয়ে অবস্থান করেন।

মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘তদন্ত না ভণ্ডামি, ভণ্ডামি ভণ্ডামি’, ‘প্রশাসন সিদ্ধান্ত, মানি না মানবো না’, ‘প্রহসনের বিচার, মানি না মানবো না’, ‘প্রশাসনে প্রহসন, মানি না মানবো না’, ‘বিচার না পুরস্কার, পুরস্কার পুরস্কার’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘হাফিজের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘হাফিজ হটাও, ক্যাম্পাস বাঁচাও‘সহ বিভিন্ন শ্লোগান দেন।

বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের শিক্ষার্থী দ্বীপ সাহা বলেন, “হাফিজের বিরুদ্ধে আমাদের অসংখ্য অভিযোগ আছে। কিন্তু প্রশাসন বিচারের নামে একটা প্রহসন করেছে। তাকে মাত্র ১ বছরের ছুটিতে পাঠিয়েছে। এতে মনে হচ্ছে, তাকে প্রশাসন পুরস্কৃত করেছে। আমরা এ বিচার প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা হাফিজকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার চাই। আমরা লম্পটমুক্ত ক্যাম্পাস চাই।”

তিনি বলেন, “আমরা তার স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি করছি। প্রশাসন সুনির্দিষ্টভাবে আমাদের কথা দিবে তারপরে আমরা এখান থেকে উঠব। তার বিরুদ্ধে ২৭টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তারপরেও তার বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”

বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা প্রশাসনের প্রতি আস্থা রেখেছি। কিন্তু প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কিছুই করেনি। হাফিজ যদি ১ বছর পর আবার বিভাগে ফিরে আসে, তাহলে সে শিক্ষার্থীদের জীবন শেষ করে ফেলবে। আমরা এ হুমকির মধ্যে থাকতে চাই না। আমরা তার স্থায়ী বহিষ্কার চাই। সে বিভাগকে একটি টর্চারসেল বানিয়ে ফেলছিল। পুনরায় আবার টর্চারসেল বানানোর পায়তারা করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।”

এর আগে, গত ৭ অক্টোবর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী হেনস্তা, আপত্তিকর মন্তব্য, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, দাড়ি থাকলে শিবির ট্যাগ দিয়ে হেনস্তা, ইচ্ছাকৃতভাবে ফলাফল খারাপ করে দেওয়া, সমকামিতাসহ ২৭ দফা অভিযোগ তুলে অপসারণের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক আটকে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ করেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এছাড়াও তার কুশপুত্তলিকায় জুতা নিক্ষেপ ও কুশপুত্তলিকা দাহ করে শিক্ষার্থীরা। পরে উপাচার্য অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি এসব অভিযোগের প্রমাণ পায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬৬তম সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট বাতিলসহ ১ বছরের জন্য বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অ য কশন

এছাড়াও পড়ুন:

পোপের মৃত্যুর কারণ জানাল ভ্যাটিকান

বিশ্বের ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস (৮৮) গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে ভ্যাটিক্যানে নিজ বাসভবন মৃত্যুবরণ করেছেন। 

তার মৃত্যুর কারণ সোমবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছে ভ্যাটিকান সিটির হলি সি প্রেস অফিস। ভ্যাটিকান সিটি স্টেটের স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. আন্দ্রেয়া আর্কাঞ্জেলি পোপের মৃত্যুর সার্টিফিকেট জারি করেছেন। 

ভাটিকান নিউজ জানিয়েছে, পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে স্ট্রোক, এরপর কোমা এবং অপরিবর্তনীয় হৃদযন্ত্রের রক্তনালী ধস।

মেডিকেল রিপোর্ট অনুসারে, পোপের মাল্টিমাইক্রোবিয়াল বিলাটেরাল নিউমোনিয়া, একাধিক ব্রঙ্কাইক্টেস, উচ্চ রক্তচাপ এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিসের কারণে তীব্র শ্বাসযন্ত্রের জটিলতা ছিল।

ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাফিক থ্যানাটোগ্রাফির মাধ্যমে তার মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। ডেথ সার্টিফিকেটে ডা. আর্কাঞ্জেলি লিখেছেন, “আমি ঘোষণা করছি, আমার জ্ঞান এবং বিচারে মৃত্যুর কারণগুলো উপরে বর্ণিত।”

সম্প্রতি টানা পাঁচ সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন পোপ। এরপর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার এক মাসের মাথায় মারা গেলেন এই ধর্মগুরু। সোমবার সকালে ভ্যাটিক্যানে নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পোপ।

২০১৩ সালের ১৩ মার্চ ভ্যাটিকানের ২৬৬তম পোপ নির্বাচিত হন ফ্রান্সিস। রোমের বিশপ হিসেবে তিনি বিশ্বব্যাপী ক্যাথলিক চার্চ এবং সার্বভৌম ভ্যাটিকান সিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। 

১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে পোপ ফ্রান্সিসের জন্ম। ক্যাথলিক পুরোহিত হিসেবে তার অভিষেক হয়েছিল ১৯৬৯ সালে।

তিনি ছিলেন ৭৪১ সালের পর প্রথম নন-ইউরোপিয়ান পোপ। ৭৪১ সালে সিরিয়ান বংশোদ্ভূত তৃতীয় গ্রেগরির মৃত্যুর পর রোমে আর কোনো নন-ইউরোপীয় পোপ আসেননি। পুরো আমেরিকা অঞ্চল এবং দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে নির্বাচিত প্রথম পোপ ছিলেন ফ্রান্সিস। তিনি ক্যাথলিক গির্জায় সংস্কার কখনো বন্ধ করেননি। তারপরও তিনি সকলের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন।

পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ গোটা বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মানুষদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিশ্বনেতারাও।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে বাংলাদেশ কাথলিক মণ্ডলীর শোক প্রকাশ
  • শুল্ক ইস্যুতে ট্রাম্প প্রশাসনকে সন্তুষ্ট করতে চাইছে ভারত
  • পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া কবে, কোথায় জানাল ভ্যাটিকান সিটি
  • পোপের মৃত্যুর কারণ জানাল ভ্যাটিকান
  • পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক