দুই শতাধিক সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও এতিমদের নিয়ে ‘সবাই দেখবে কক্সবাজার’ শীর্ষক ২ রাত ৩ দিনের জন্য কক্সবাজার ভ্রমণ আয়োজন করেছে সামাজিক সংগঠন দূর্বার তারুণ্য ফাউন্ডেশন।

শনিবার (২৫ জানুয়ারি) ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রংপুর থেকে বাসযোগে ২ শতাধিক সুবিধাবঞ্চিত ও এতিম শিশুদের কক্সবাজার ভ্রমণের উদ্দেশ্যে আনা হয়। তাদের আসা-যাওয়া, থাকা-খাওয়ার সব খরচ বহন করেছে সংগঠনটি। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে শিশুরা আনন্দে মেতে ওঠে।

ভ্রমণের দ্বিতীয় দিনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সাংবাদিক সোহাগ আরেফিন ও আবু আদিলের উপস্থাপনায় দূর্বার তারুণ্য ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আবু আবিদের সভাপতিত্বে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন অগ্রগামী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম ফারুক মজনু।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন বলেন, ‘‘দূর্বার তারুণ্য ফাউন্ডেশন আজ যা করে দেখিয়েছে, তা মানবিক কাজে অবিশ্বাস্য বিষয়। তারা আজ চমৎকার আয়োজন করেছে। তারা মানবিক কাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’’ 

আয়োজকদের পক্ষে দূর্বার তারুণ্য ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আবু আবিদ বলেন, ‘‘কক্সবাজারে কেউ যদি পারিবারিকভাবে ঘুরতে আসেন, তাহলে বাসার বুয়া, দারোয়ান ও ড্রাইভারদের নিয়ে আসবেন। গ্রুপভিত্তিক আসলে সাধ্য অনুযায়ী ৫-১০ জন সুবিধাবঞ্চিত বা এতিম শিশু নিয়ে আসবেন। এ কাজটুকু করলে আত্মার শান্তি অনুভব করবেন।’’

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব পীরজাদা শহীদুল হারুন, কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন চৌধুরী, বিশিষ্ট সাংবাদিক মো.

মাসুদ, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের বেসরকারি কারাপরিদর্শক আঁখি সুলতানা, কক্সবাজার জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, বিশিষ্ট সমাজসেবক মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মঞ্জুর হোসেন ঈশা প্রমুখ।

ঢাকা/রেজাউল/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ রমণ

এছাড়াও পড়ুন:

সরস্বতি পূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জে জমজমাট প্রতিমার হাট

আগামী ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা। এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্নস্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এখন চলছে প্রতিমার বেচাকেনা। এবার প্রতিমার দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রীয়া থাকলেও কারিগররা বলছেন, জিনিস পত্রের দাম বাড়ায় প্রতিমার দামও কিছুটা বাড়তি।

পঞ্জিকা মতে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে আশীর্বাদ লাভের আশায় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা করে থাকেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। শুধু বাড়িতেই নয় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। দেবীর পায়ে অঞ্জলী দিয়ে অনেক শিশুর শিক্ষাজীবন শুরু হবে।

এ পূজার প্রধান অনুসঙ্গ হলো প্রতিমা। ফলে জেলা শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ী, সদর উপজেলার সাতপাড়, বৌলতলী, কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ, ভাঙ্গারহাট, ঘাঘর বাজারসহ অনেক স্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এসব হাটে আনা এক একটি প্রতিমা প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে। 

আরো পড়ুন:

লক্ষ্মীপুরে রাসপূর্ণিমা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু

পুটিয়ার কৃষ্ণপুরে চলছে কাত্যায়নী পূজা

এ বছর ক্রেতাদের মধ্যে প্রতিমার দাম নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ক্রেতাদের অনেকেই বলছেন, দাম সাধ্যের মধ্যে আবার কেউবা বলছেন দাম আগের চেয়ে বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে, এর মধ্যেও বিভিন্ন বয়সের মানুষ এসব হাট থেকে কিনে নিচ্ছেন পছন্দমতো প্রতিমা। হাটে শুধু প্রতিমাই নয় বিক্রি হচ্ছে ফুল, মালা, মিষ্টিসহ পূজার অন্যান্য উপকরণও। 

রীতি অনুযায়ী বিদ্যার দেবী সরস্বতি পূজার পাশাপশি বসন্ত পঞ্চমীতে গণেশ, লক্ষ্মী, নবগ্রহ, বই, খাতা, কলম ও বাদ্যযন্ত্রের পূজা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে শীত ঋতুর অবসান হয়ে বসন্ত ঋতুর আগমন বার্তা ঘটবে।

প্রতিমা কিনতে আসা উত্তম সাহা বলেন, “শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীতে সরস্বতী প্রতিমার হাট বসেছে। এবার বাড়িতে পূজা করাব। ছেলেকে নিয়ে হাটে প্রতিমা কিনতে এসেছি। ঘুরে ফিরে পছন্দমত প্রতিমা কিনেছি। আমি মনে করি, পূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে।”

অপর ক্রেতা নারু গোপাল বলেন, “প্রতিবছর এখানে প্রতিমার হাট বসে। এবে এবার প্রতিমার আমদানি একটু কম। তারপরেও দেখে বুঝে দরদাম করে একটি প্রতিমা কিনেছি। এবার আমাদের বাড়িতে সরস্বতী পূজা হবে।”

অপর ক্রেতা পরিমল চন্দ্র ঢালী বলেন, “এক একটি প্রতিমা ২০০ তেকে ১০ হাজার টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হচ্ছে। হাটে এসে প্রতিমা দেখছি। পছন্দ হলে কিনে নিয়ে যাব। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিমার দাম একটু বেশি।”

গোপালগঞ্জ শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীর হাটে প্রতিমা বিক্রি করতে আসা উত্তম পাল বলেন, “এবার ২০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি। ইতোমধ্যে ১০টি বিক্রি করা হয়েছে। তবে এবার ক্রেতার সংখ্যা একটু কম। আশা করি, বাকি দুই দিনও বেচাকেনা হবে।”

কার্ত্তিক পাল বলেন, “কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ গ্রাম থেকে ৩০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি বিক্রির জন্য। চার থেকে পাঁচটি প্রতিমা বিক্রি করেছি। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, তাতে প্রতিমা বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ প্রতিমা তৈরির অনুসঙ্গের যে দাম তাতে খরচও উঠছে না।”

স্বপন পাল নামে এক বিক্রেতা বলেন, “প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহৃত ছোন, রংসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের দাম প্রতিবছর বেড়েই চলছে। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, সেই দামে বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তারপরেও বাব-দাদার পেশা আমরা ধরে রেখেছি।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ