গলা কেটে হত্যার পর সন্দেহ এড়াতে দাফনে সহযোগিতা, গ্রেপ্তার ৩
Published: 28th, January 2025 GMT
নওগাঁয় জাহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ মঙ্গলবার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সফিউল সারোয়ার। তিনি বলেন, আসামিরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহ থেকে বাঁচতে মরদেহ দাফনে সহযোগিতা করে।
জাহিদুল ইসলাম (৪১) পত্নীতলা উপজেলার ঘোষনগর ইউনিয়নের কোতালী গ্রামের মৃত অছিমুদ্দিনের ছেলে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- একই গ্রামের গুলজার হোসেনের ছেলে মামুনুর রশিদ (৩৬), ইসমাইল হোসেনের ছেলে রুবেল হোসেন (২৫) ও আবুল কালাম আজাদের ছেলে মোহাম্মদ রাজু হাসান (৩২)।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, ১৫ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে জাহিদুল ইসলামকে গলা কেটে হত্যা করে। পরে মরদেহটি পত্নীতলা থেকে অটোচার্জার ভ্যানে করে মহাদেবপুর উপজেলার রাইগা ইউনিয়নের আরমান সরদারের জমির পাশে কালভার্টের নিচে ফেলে যায়। এসময় মরদেহ পলিথিনে মোড়ানো ছিল। পরে তার স্ত্রী থানায় মামলা করলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। সোমবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের মোড় ভিন্ন খাতে নিতে আসামিরা মরদেহটি মহাদেবপুরে এনে গুমের চেষ্টা করে। আলামত ধ্বংস করতে নিহত জাহিদুলের মোটরসাইকেলটি মাঠে পুড়িয়ে ফেলে। ঘটনার পর আসামিরা নিহতের মরদেহ উদ্ধারসহ দাফন-কাফনে সহযোগিতা করে যাতে তাদেরকে কেউ সন্দেহ না করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করেছে। পূর্ব শত্রুতা ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে।
এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান, ফারজানা হোসেন, মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসমত আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফের গোপন আস্তানার সন্ধান
খাগড়াছড়িতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী অপহরণের ছয় দিন পেরিয়ে গেলেও তাদের কোনো সন্ধান মেলেনি। তবে অপহৃতদের উদ্ধারে দিনরাত অভিযান পরিচালনা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবে টানা অভিযানের ফলে ইউপিডিএফের একটি গোপন আস্তানার সন্ধান পেয়েছে যৌথবাহিনী।
সোমবার ভোরে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের ভাই-বোনছড়ার পূর্ণ চন্দ্র কারবারিপাড়া এলাকার একটি তালাবন্ধ টিনসেটের ঘরে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এসময় কাউকে আটক করতে না পারলেও চাঁদা আদায়ের রশিদ, ল্যাপটপ, মোবাইল, সামরিক ইউনিফর্মসহ বিপুল পরিমাণ প্রশিক্ষণ সরঞ্জামাদি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
পুলিশ জানায়, সোমবার ভোর ৫টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যৌথবাহিনী খাগড়াছড়ি জেলা সদরের ভাই-বোনছড়ার পূর্ণ চন্দ্র কারবারিপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইউপিডিএফের একটি গোপন আস্তানার সন্ধান পায়। পরে তালাবন্ধ টিনেসেটের ঘরের তালা ভেঙে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে তল্লাশি চালায় যৌথবাহিনী। এসময় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত তিন জোড়া পোশাক, ১৯টি ইউনিফর্মের প্যান্ট, পিস্তলের গুলি, ক্যাপ, ১টি ল্যাপটপ, কয়েকটি ওয়াকি-টকি সেট, ২টি মোবাইল ফোন, ১টি মাইক্রোফোন, নেট, ১টি ক্যামেরা, ১টি প্রিন্টার, সেলাই মেশিন, তাঁবু, জিম্মি করে রাখার লোহার চেইন, খাবারের তৈজসপত্র ও খাবারের কাঁচামাল, প্রোপাগান্ডা সামগ্রী, সন্ত্রাসীদের চাঁদা আদায়ের রশিদসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।
দুর্গম এলাকার এই গোপন আস্তানা থেকেই ইউপিডিএফ তাদের চাঁদাবাজি, অপহরণসহ তাদের সকল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এসময় যৌথবাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, অপহৃত শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে দরকার হলে প্রতিটি এলাকায় ইঞ্চি ইঞ্চি করে তল্লাশি করা হবে এবং অপহৃতরা উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
এরই মধ্যে চবির পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণের ছয় দিন অতিবাহিত হলেও সোমবার বিকেল পর্যন্ত অপহৃতদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
তবে অপহৃতদের উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল।