এবার আরও ৭ ফেডারেশনে অ্যাডহক কমিটি
Published: 28th, January 2025 GMT
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) আগেই ৯টি ফেডারেশনে অ্যাডহক কমিটি গঠন করেছিল। আড়াই মাস পর এবার আরও ৭টি ফেডারেশনে নতুন অ্যাডহক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এই কমিটিগুলো প্রকাশ করা হয়। নতুন কমিটি গঠিত ফেডারেশনগুলো হলো সাঁতার, টেবিল টেনিস, ফেন্সিং, ভারত্তোলন, কারাতে, ভলিবল ও শরীর গঠন।
সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শাহীন আবার সাধারণ সম্পাদক পদে ফিরেছেন। আগের সহ-সভাপতি প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরও সহ-সভাপতির দায়িত্বে বহাল রয়েছেন। সদস্য হিসেবে যুক্ত হয়েছেন আব্দুল হামিদ, যুগ্ম সম্পাদক করা হয়েছে নিবেদিতা দাসকে। ১৯ সদস্যের এই কমিটিতে সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী এবং বিকেএসপি থেকে একজন করে প্রতিনিধি থাকবেন। এছাড়া অলিম্পিয়ান মাহফিজুর রহমান সাগর সদস্য হিসেবে এবং রফিকুল ইসলাম কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। কমিটির সভাপতি হয়েছেন নৌবাহিনীর প্রধান।
টেবিল টেনিসের অন্যতম সাবেক তারকা নাসিমুল হাসান কচি হয়েছেন যুগ্ম সম্পাদক। আগের কমিটির অন্যতম সমালোচিত খন্দকার হাসান মুনীর সুমন অ্যাডহক কমিটিতেও সহ-সভাপতি হয়েছেন! মাইক্রো ফাইবার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার এমএইচ জামানকে সভাপতি করা হয়েছে।
ভলিবল ফেডারেশনে গত দুই দশক আধিপত্য ছিল আশিকুর রহমান মিকুর। তাকে সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সরিয়ে সাবেক জাতীয় খেলোয়াড় বিমল ঘোষ ভুলুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। সভাপতি পদে বিজিএমইএ সাবেক সভাপতি জায়ান্ট গ্রুপের ফারুক হাসান মনোনীত হয়েছেন। এই কমিটির সহ-সভাপতি হিসেবে আছেন রেডিয়েন্ট গ্রুপের পরিচালক নাসের শাহরিয়ার জাহেদী। ভলিবল ফেডারেশনের কমিটি ১৯ সদস্য বিশিষ্ট। সেনা,নৌ,বিমান ও বিজিবি থেকে একজন করে প্রতিনিধি থাকবেন সেখানে। সাবেক খেলোয়াড় শিরিন, ঝিলু, আমিরুল হোসেন আপন,লিঙ্কন সদস্য হিসেবে আছেন।
কারাতে ফেডারেশনও ১৯ সদস্য বিশিষ্ট হয়েছে। বিগত কমিটির সহ-সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। তিনি আগেও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সভাপতি হিসেবে আছেন এশিয়াটিক কটন মিলের সাহজাদা আলম।
ভারত্তোলন ফেডারেশনের সভাপতি মনোনীত হয়েছেন প্রবীন সংগঠক উইং কমান্ডার (অব.
শরীরগঠন ফেডারেশনের সভাপতি করা হয়েছে অতিরিক্ত আইজিপি ও পিবিআই প্রধান মোস্তফা কামালকে। সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন চিকিৎসক ও প্রাক্তন খেলোয়াড় কামরুজ্জামান। ফেন্সিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে বসুনিয়া এম আশিকুল ইসলামকে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সদস য হ স ব ত হয় ছ ন ল ইসল ম কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
‘কিছু লোকজনের অনুরোধে’ ঠিকাদারি লাইসেন্স নিয়ে ‘বিব্রত’ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা
১ মাস ৯ দিন আগে কুমিল্লা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ঠিকাদারি লাইসেন্স নিয়েছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বাবা মো. বিল্লাল হোসেন। লাইসেন্স পেতে তিনি যাবতীয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছিলেন বলে জানিয়েছেন এলজিইডির কর্মকর্তারা। তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার লাইসেন্সটি বাতিল করা হয়েছে।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বাবা একজন বিদ্যালয় শিক্ষক। তিনি জেলার মুরাদনগর উপজেলার আকুবপুর ইয়াকুব আলী ভূঁইয়া পাবলিক উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা মো. বিল্লাল হোসেন বৃহস্পতিবার বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাটি নিয়ে আমি নিজেই বিব্রত। আমি শিক্ষক মানুষ, ঠিকাদারির কিছুই বুঝি না। গত বছরের নভেম্বরে স্থানীয় কিছু লোকজন আমাকে ধরল, এলজিইডিতে অনেক কাজটাজ আসতেছে, আপনার একটা লাইসেন্স থাকলে এলাকার মানুষ উপকৃত হবে। এলাকার কিছু মানুষ আপনার লাইসেন্সে কাজ এনে করতে পারবে। এতে কিছু মানুষের কাজের ব্যবস্থাও হবে। আসলে বিষয়টি আমার ছেলে (উপদেষ্টা) কিছুই জানেও না। পরে এলাকার মানুষের বারবার অনুরোধের কারণে গত বছরের নভেম্বরে আমি ওই লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছি। এক মাস আগে লাইসেন্স পেয়েছি, কিন্তু এটা দিয়ে এক টাকার কাজও করিনি।’
বিষয়টি নিয়ে এত সমালোচনা আর কেলেঙ্কারি হবে, বিষয়টি ভাবনাতেও ছিল না উল্লেখ করে বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমার ভুলের জন্য ছেলেকে (উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ) বিতর্কের মুখে পড়তে হবে, কখনো চিন্তাও করিনি। এ ঘটনায় আমি নিজেই লজ্জিত।’
সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করে লাইসেন্স পেয়েছেন উল্লেখ করে মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘যখন সবাই আমাকে ধরল একটা লাইসেন্স করার জন্য, তখন চিন্তা করলাম, দেশের নাগরিক হিসেবে একজন মানুষের অধিকার আছে ঠিকাদারি লাইসেন্স করার। আমিও সেই জায়গা থেকেই সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আবেদন করেছি এবং নভেম্বরে আবেদনের পর দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে গত ১৬ মার্চ লাইসেন্স পেয়েছি। আমি উপদেষ্টার বাবা হিসেবে নয়, একজন সাধারণ মানুষ হিসেবেই আবেদন করেছি। যদি জানতাম বিষয়টি নিয়ে এত কেলেঙ্কারি হবে আর উপদেষ্টাকে বিতর্কের মুখে পড়তে হবে, তাহলে কখনোই আমি এমন কাজ করতাম না। এ ছাড়া আমি আজ পর্যন্ত কোথাও ঠিকাদারি কাজের বিষয়ে জেলা ও উপজেলার কোথাও কোনো হস্তক্ষেপ করিনি। কেউ বলতে পারবে না উপদেষ্টার বাবা হিসেবে এক টাকার ঠিকাদারি কাজ করেছি।’
আরও পড়ুনবাবার ঠিকাদারির লাইসেন্স ছিল, জানিয়ে ক্ষমা চাইলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ৫ ঘণ্টা আগেএলজিইডি কুমিল্লার সূত্রে জানা গেছে, আয়কর সনদ, ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন, ট্রেড লাইসেন্সসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর কুমিল্লার জেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে মেসার্স ইসরাত এন্টারপ্রাইজ নামে লাইসেন্সের আবেদন করেন বিল্লাল হোসেন। গত ১৬ মার্চ ৫ হাজার ৯০০ টাকার ব্যাংক চালান দেওয়ার পর ওই দিন এলজিইডি কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী মেসার্স ইসরাত এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী হিসেবে মো. বিল্লাল হোসেনের ওই লাইসেন্সে স্বাক্ষর করেন। তাঁর এই ঠিকাদারি লাইসেন্সের মেয়াদ চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত উল্লেখ করা হয়।
এলজিইডি কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল মতিন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বুধবার রাতে মো. বিল্লাল হোসেন তাঁর ঠিকাদারি লাইসেন্সটি বাতিলের জন্য আবেদন করেন। তবে রাতে তিনি আবেদনটি হাতে পাননি। আজ সকালে আবেদনটি হাতে পেয়ে অফিসে গিয়ে প্রথমেই বিধি মোতাবেক সীমিত দরপত্র পদ্ধতিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া লাইসেন্সটি বাতিল করে কার্যালয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে।
নির্বাহী প্রকৌশলী আরও বলেন, এর আগে বিল্লাল হোসেন সব বিধি মেনেই ঠিকাদারি লাইসেন্স পেয়েছিলেন। গত ১৬ মার্চ মেসার্স ইসরাত এন্টারপ্রাইজ নামে লাইসেন্সটি ইস্যু করা হয়। তবে এখনো এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে জেলার কোনো এলজিইডির কার্যালয়ে দরপত্রে অংশ নেওয়া হয়নি। এ ছাড়া বিল্লাল হোসেন অন্য কোনো নামেও ঠিকাদারি কাজ করেননি বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে আজ বিকেল পর্যন্ত উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা মো. বিল্লাল হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বাবার ঠিকাদারি লাইসেন্স থাকার বিষয়টি জানিয়ে গতকাল রাতে ফেসবুকে পোস্ট দেন এক গণমাধ্যম কর্মী। তিনি বিষয়টির সত্যাসত্য জানতে চান আসিফ মাহমুদের কাছে। আসিফ মাহমুদ খোঁজ করে জানান যে তাঁর বাবার লাইসেন্স নেওয়ার বিষয়টি সঠিক। আর বিষয়টি তাঁকে জানান বলেও ওই গণমাধ্যমকর্মী তাঁর পোস্টে উল্লেখ করেন। এরপরই আজ আসিফ মাহমুদ বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন।
‘বাবার ভুলের জন্য’ ক্ষমা চেয়ে আসিফ মাহমুদ পোস্টে লেখেন, ‘আমার বাবা একজন স্কুলশিক্ষক। আকুবপুর ইয়াকুব আলী ভুঁইয়া পাবলিক উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। স্থানীয় একজন ঠিকাদার কাজ পাওয়ার সুবিধার্থে বাবার পরিচয় ব্যবহার করার জন্য বাবাকে লাইসেন্স করার পরামর্শ দেন। বাবাও তাঁর কথায় জেলা নির্বাহী ইঞ্জিনিয়ার থেকে একটি ঠিকাদারি লাইসেন্স করেন। রাষ্ট্রের যেকোনো ব্যক্তি ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে যেকোনো লাইসেন্স করতেই পারেন। তবে আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় বাবার ঠিকাদারি ব্যবসায় জড়ানো স্পষ্টভাবেই কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট। বিষয়টি বোঝানোর পর আজ বাবার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাইসেন্সটি বাতিল করা হয়েছে।
বাবা হয়তো কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টের বিষয়টি বুঝতে পারেননি, সে জন্য বাবার পক্ষ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। উল্লেখ্য, মধ্যবর্তী সময়ে উক্ত লাইসেন্স ব্যবহার করে কোনো কাজের জন্য আবেদন করা হয়নি।’