বিপিএলের পারিশ্রমিক ইস্যুতে ক্ষুব্ধ ক্রিকেটারদের আন্তর্জাতিক সংগঠন
Published: 28th, January 2025 GMT
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চলমান আসরে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ইস্যু হয়ে উঠেছে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক সংক্রান্ত সমস্যা। এমন ঘটনা আগে থেকেও চলে আসছে এবং এখনো স্থায়ী সমাধান না হওয়ায় এবার কড়া সমালোচনায় মুখর হয়েছে ওয়ার্ল্ড ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিউসিএ)। আন্তর্জাতিক এই সংগঠনটি বিপিএলের আয়োজক বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
ডব্লিউসিএ’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টম মোফাট ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোতে নিজের হতাশা প্রকাশ করে বিসিবির তীব্র সমালোচনা করেন। বারবার একই সমস্যার পুনরাবৃত্তি দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।
চলতি আসরে একাধিক দল খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক পরিশোধে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে। দুর্বার রাজশাহীর খেলোয়াড়রা টাকা না পেয়ে একপর্যায়ে অনুশীলন বর্জন করেন। পরবর্তীতে তাদের বিদেশি ক্রিকেটাররাও ম্যাচ বর্জন করেন। নিয়ম ভেঙে এরপরও দলটির খেলা চালিয়ে নেওয়া হয়। এছাড়া চিটাগং কিংসের ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকও এক খেলোয়াড়কে পারিশ্রমিক না দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। শুধু পারিশ্রমিক নয়, একাধিক দল খেলোয়াড়দের দৈনিক ভাতাও সময়মতো পরিশোধ করেনি।
বিপিএলের শুরুর দিকের আসরগুলো থেকেও এমন সমস্যা দেখা গেছে। কিন্তু এখনো কেন এই সমস্যার সমাধান হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মোফাট। তিনি বলেন, ‘বিপিএলে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক না দেওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত হতাশাজনক। প্রায় প্রতি আসর থেকেই এমন অভিযোগ শোনা যায়, যা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
মোফাট আরও বলেন, ‘এটা দুঃখজনক যে বিসিবি এ ধরনের সমস্যার উন্নয়ন ঘটাতে ব্যর্থ হচ্ছে। টুর্নামেন্টের সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করে খেলোয়াড়দের ওপর। তাই যেকোনো লিগে চুক্তি অনুযায়ী মৌলিক বিষয়গুলো সুরক্ষিত থাকা উচিত। এতে খেলোয়াড়রা ন্যূনতম মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী থাকতে পারে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব প এল ব প এল সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণাত্মক ঋণ হিসাবের নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণের সময় বাড়ল
শেয়ারবাজারের নেগেটিভ ইকুইটি বা ঋণাত্মক ঋণ হিসাবের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণের সময় বাড়ানো হয়েছে। শর্তসাপেক্ষে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শেয়ারবাজারের ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো ঋণাত্মক ঋণ হিসাবের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতির ক্ষেত্রে ছাড় পাবেন।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) এক জরুরি সভায় আজ বৃহস্পতিবার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এত দিন বিষয়টি নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছিল। এ কারণে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউসের মালিকদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) ও মার্চেন্ট ব্যাংকারদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিএসইসির জরুরি সভা শেষে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিএসইসি জানিয়েছে, এই সুবিধা নিতে হলে প্রত্যেক ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংককে তাদের ঋণাত্মক ঋণ হিসাব বা অনিরূপিত (আনরিয়ালাইজড) লোকসানের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতির সুনির্দিষ্ট ও গ্রহণযোগ্য পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। সেই পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনসহ ৩০ জুনের মধ্যে কমিশনে জমা দিতে হবে। যারা এই পরিকল্পনা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা দেবে, তারা নিরাপত্তা সঞ্চিতির ক্ষেত্রে এই সুবিধা পাবে।
শর্তসাপেক্ষে এই সুবিধা দেওয়ার কারণ হিসেবে জানা যায়, ঋণাত্মক ঋণ হিসাব নিয়ে একেক প্রতিষ্ঠানের সমস্যা একেক রকম। কারও নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ বা প্রভিশনিং করতে হবে বেশি, কারও কম। এই বাস্তবতায় শর্তসাপেক্ষে এ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। অতীতে সর্বজনীনভাবে বারবার সময় বাড়ানোর পরও প্রতিষ্ঠানগুলো এই সমস্যার সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এ কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো যেন নিজে থেকে এই সমস্যা সমাধানের পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেয়, সে জন্য শর্ত আরোপ করেছে বিএসইসি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সার্বিকভাবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণে সময় বাড়ানো হলেও পরবর্তী সময়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিকল্পনাসাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানভেদে এই সময়সীমা আরও বাড়তে পারে।
ঋণাত্মক ঋণ হিসাবের এই সমস্যা তৈরি হয় মূলত ২০১০ সালে শেয়ারবাজার ধসের পর। ওই ধসের পর শেয়ারের ব্যাপক দরপতনের কারণে শেয়ারের বিপরীতে দেওয়া বিপুল ঋণ আর আদায় করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানগুলো। আবার শেয়ারের বাজার মূল্য কমে যাওয়ায় শেয়ার বিক্রি করেও পুরোপুরি ঋণ সমন্বয়ের সুযোগ নেই। সে জন্য এসব ঋণাত্মক ঋণ হিসাবের বিপরীতে এত দিন নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশনিংয়ে ছাড় পেয়ে আসছিল প্রতিষ্ঠানগুলো। সর্বশেষ গত ডিসেম্বরে এই সময় শেষ হয়। ফলে নিয়ম অনুযায়ী, ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে ঋণাত্মক ঋণের বিপরীতে শতভাগ নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা দেখা দেয়। আবার ঋণ সমন্বয় করতে গিয়ে ঋণাত্মক ঋণ হিসাবে থাকা শেয়ার বিক্রির চাপও তৈরির সম্ভাবনা তৈরি হয়। উভয় ক্ষেত্রেই বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে। এ কারণে ঋণাত্মক ঋণ হিসাব সমন্বয়ে আরও সময় চায় ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো। ডিবিএ ও বিএমবিএর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বিএসইসির হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়। এ নিয়ে শেয়ারবাজারের শীর্ষ ২০ ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহীরা গত মঙ্গলবার বিএসইসির সঙ্গে বৈঠকও করেন।
বিএসইসিতে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকের পর এ বিষয়ে বিএসইসির পক্ষ থেকে সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে বিএসইসির সঙ্গে বৈঠকে শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউসের প্রতিনিধিরা ২০৩০ সাল পর্যন্ত ঋণাত্মক ঋণ হিসাব ও লোকসানে থাকা ডিলার হিসাবের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতিতে ছাড়ের দাবি জানিয়েছিলেন।