২১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০ হাজার মে. টন চিনি ও মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত
Published: 28th, January 2025 GMT
টিসিবি’র ফ্যামিলি কার্ডধারীদের কাছে ভর্তুকি দামে বিক্রির জন্য ১০ হাজার মে.টন চিনি ও ১০ হাজার মে. টন মসুর ডাল ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে প্রায় ২১৪ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড.
সভায় কমিটির সদস্য ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভা সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১০ হাজার মে. টন চিনি ক্রয়ের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। টিসিবি’র ফ্যামিলি কার্ডধারী ১ কোটি পরিবারের নিকট ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে ১০ হাজার মে.টন চিনি ক্রয়ের জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ২টি প্রস্তাব জমা পড়ে। ২টি প্রস্তাবই কারিগরিভাবে ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান সিটি সুগার ইন্ডাষ্ট্রিজ লি:এর কাছ থেকে ১০ হাজার মে.টন চিনি (৫০ কেজির বস্তায়) ক্রয় করা হবে।
প্রতি কেজি চিনির দাম ১১৫.৪২ টাকা হিসেবে ১০ হাজার মে. টন চিনি ক্রয়ে ব্যয় হবে ১১৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে চিনি ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৪৪ হাজার মে.টন। এ পর্যন্ত ক্রয় চুক্তি হয়েছে ৩৫ হাজার মে. টন।
সভায় ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১০ হাজার মে.টন মসুর ডাল (৫০ কেজির বস্তায়) ক্রয়ের অন্য একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। টিসিবি’র ফ্যামিলি কার্ডধারী ১ কোটি পরিবারের কাছে ভর্তুকি দামে বিক্রির লক্ষ্যে ১০ হাজার মে.টন মসুর ডাল ক্রয়ের জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি প্রস্তাব জমা পড়ে। ৩টি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান শেখ অ্যাগ্রো ফুড ইন্ডাষ্ট্রিজ, ঢাকা এই মসুর ডাল সরবরাহ করবে।
প্রতি কেজি ৯৮.৪৫ টাকা হিসেবে ১০ হাজার মে.টন মসুর ডাল ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৯৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে মসুর ডাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৮৮ হাজার মে.টন। এ পর্যন্ত ক্রয় চুক্তি হয়েছে ১ লাখ ২২ হাজার ৯৫০ মে. টন।
ঢাকা/হাসনাত/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১০ হ জ র ম টন চ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স
রমজান সামনে রেখে ফেব্রুয়ারিতে রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছে। দিন সংখ্যা কম হওয়ার পরও ব্যাংকিং চ্যানেলে গত মাসে এসেছে প্রায় ২৫৩ কোটি ডলার। দৈনিক গড়ে ৯ কোটি ২ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এর আগে কোনো একক মাসে দৈনিক সর্বোচ্চ ৮ কোটি ৫১ লাখ ডলার আসে গত ডিসেম্বরে। ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্সের পরিমাণ গত জানুয়ারি কিংবা আগের বছরের একই মাসের তুলনায়ও অনেক বেশি। মূলত সরকার পতনের পর থেকে অর্থ পাচার ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় রেমিট্যান্স বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে প্রবাসীরা মোট ১ হাজার ৮৪৯ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। আগের অর্থবছরের একই সময়ে আসে ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার। আট মাসে বেশি এসেছে ৩৫৫ কোটি ডলার, যা ২৩ দশমিক ৮০ শতাংশ। রেমিট্যান্সের এই প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি রপ্তানি আয়ও বাড়ছে। এসব কারণে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আগের বছরের ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১৬ কোটি ডলার। গত জানুয়ারিতে এসেছিল ২১৯ কোটি ডলার। এ যাবৎকালে কোনো একক মাসে সর্বোচ্চ ২৬৪ কোটি ডলার এসেছিল গত ডিসেম্বরে। দিন সংখ্যা কম হওয়ার পরও এ বছরের ফেব্রুয়ারির রেমিট্যান্স চতুর্থ সর্বোচ্চ।
ব্যাংকাররা জানান, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে অর্থ পাচার নিয়ে কড়াকড়ির কারণে হুন্ডি চাহিদা কমেছে। এতে করে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়ছে। আবার বাণিজ্যের আড়ালে কিংবা দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ হুন্ডি করে যারা দেশের বাইরে পাঠাত, তারাও চাপে আছে। ঋণ জালিয়াতি, রাজস্ব ফাঁকি, অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে অভিযুক্ত ১০টি গ্রুপের বিষয়ে যৌথ টিম কাজ করছে। পাচার করা অর্থ দেশে আনার চেষ্টা চলছে। এসব কারণে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বেড়েছে। এখন আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে কোনো ডলার বিক্রি করছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে এখন ২১ বিলিয়ন ডলার ছুঁইছুঁই। গত বুধবার রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার। গত ৩০ জানুয়ারি যা ছিল ১৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের একই দিন ছিল ২০ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার। এর আগে ২০২২ সালের আগস্টে অবশ্য রিজার্ভ বেড়ে ৪৮ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। বিগত সরকারের সময়ে প্রচুর ডলার বিক্রির কারণে তা দ্রুত কমে যায়। বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বৃদ্ধির কারণে ডলার বাজারে খানিকটা স্বস্তি ফিরেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেন, রেমিট্যান্স বাড়ার অন্যতম কারণ অর্থ পাচার কমে যাওয়া।