‘বাংলাদেশ ডিপ্লোমেটিক এক্সিলেন্স মেডেল’ পেয়েছেন সৌদি আরবের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আল-দুহাইলান। তার হাতে এ পুরস্কার তুলে দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ব্যাপ্তি ও বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি সৌদি আরবে বাংলাদেশি কর্মী নেওয়ার ক্ষেত্রে অবদানের জন্য তাকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে সৌদি রাষ্ট্রদূতকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.

তৌহিদ হোসেন।

পুরস্কার পেয়ে উচ্ছ্বসিত ঈসা ইউসুফ ঈসা আল-দুহাইলান বলেছেন, “আমি সব সময় মনে রাখব বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের কথা—‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।’ আমি সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হয়ে থাকব।”

ঈসা ইউসুফ ঈসা আল-দুহাইলান ঢাকায় পাঁচ বছর রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালনের সময় নিজেকে বাংলাদেশের বন্ধু প্রমাণ করেছেন। তার ভূমিকার কারণে করোনাভাইরাস মহামারিকালেও বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে কর্মী যাওয়া পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।

এছাড়াও ঢাকায় সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরসহ দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের সফর বিনিময়, বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগ ও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি, ‘রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভ’সহ বিভিন্ন সৌদি উদ্যোগে বাংলাদেশকে যুক্ত করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রদূত হিসেবে ঈসা ইউসুফ ঈসা আল-দুহাইলান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

ঈসা ইউসুফ ঈসা আল-দুহাইলান ২০২০ সালের মার্চে বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরের পাঁচ বছরে শুধু সৌদি আরবেই প্রায় ১৪ লাখ কর্মী গেছেন বাংলাদেশ থেকে। সৌদি ভিসা সহজ হয়েছে। 

পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, “সৌদি আরব আমাদের বিশ্বস্ত বন্ধু। ৩০ লাখ সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশে রেমিট্যান্স আনতে বিশেষ ভূমিকা রাখছেন। দুই দেশের মধ্যে শক্তিশালী বন্ধন আছে। বাংলাদেশে সৌদি আরবের বিনিয়োগ এই বন্ধনকে আরো দৃঢ় করেছে। আমরা জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একযোগে গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। উভয় দেশই বিশ্বব্যাপী স্থিতিশীলতা ও সম্প্রীতির পক্ষে সমর্থন জানানোর ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে ঐক্যবদ্ধ থেকেছে।”

আগামী দিনে দুই দেশের সম্পর্ক আরো ভালো হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

‘বাংলাদেশ ডিপ্লোমেটিক এক্সিলেন্স মেডেল’ পাওয়ায় বিদায়ী সৌদি রাষ্ট্রদূতকে অভিনন্দন জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

ঢাকা/হাসান/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পরর ষ ট র উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

‘এই টাকা দিলে মান-সম্মান থাকে?’ বলা সেই ওসিকে বদলি

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানায় ‘ঘুষ’ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ওসি এনায়েত হোসেনকে ফরিদপুর জেলায় বদলি করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এ কে এম আওলাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে। জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আদেশে।

বদলি আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সি-সার্কেল) মেহেদী ইসলাম। এর আগে গত ১৮ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওসির টাকা নেওয়ার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, জিডি বা অভিযোগের কাগজের সঙ্গে স্টেপলার করে রাখা কিছু টাকা হাতে নিয়ে ওসি এনায়েত হোসেন এক ব্যক্তিকে বলছেন, ‘এই টাকা দিলে মানসম্মান থাকে?’ এ সময় ওসির সামনে আরও দুই-তিনজনকে বসে থাকতে দেখা যায়।

জানা গেছে, উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে ওসির কথোপকথনের ভিডিওটি কেউ ধারণ করেন। কোনো ঘটনা তদন্তে পৃথক দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ১৯ এপ্রিল দিনব্যাপী কমিটির সদস্যরা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেন। এরপরই তাকে বদলির আদেশ দেওয়া হলো।

এর আগে গত বুধবার ওসি এনায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ মহাপরিদর্শকের কাছে ডাকযোগে অভিযোগ দেন যুবদলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি সম্পাদক সালাউদ্দিন মোল্লা ও ভূক্তভোগী এক নারী। অভিযোগপত্রে সালাউদ্দিন বলেন, এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে গত ১১ এপ্রিল শ্যামলদী গ্রামে অনুমোদনহীন বাউল গানের আসর টাকার বিনিময়ে চলার অনুমতি দেন।

এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে সরে যান ওসি এনায়েত হোসেন। এ ঘটনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা মুখে পড়েন ওসি। এ ছাড়া অনিয়ম, দুর্নীতি ও সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় জিসাসে’র সহসাংগঠনিক রিয়াজুল ইসলাম খোকনের স্ত্রী আনোয়ারা আক্তার বেবী।

অভিযোগে আনোয়ারা উল্লেখ করেন, তার স্বামী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পারভীন আক্তারের অনুসারী। দুপ্তারা বাজারে তার ছবি সংবলিত ব্যানার টানাতে গেলে প্রতিপক্ষ বাধা দেয়। এর প্রতিবাদ করলে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেন তারা। রাতে তোরণটি ভেঙে অস্ত্র নিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালান। ফাঁকা গুলি ছুড়ে ঘণ্টাব্যাপী এলাকায় তাণ্ডব চালান হামলাকারীরা। 

এ ঘটনার পর আড়াইহাজার থানায় অভিযোগ দিতে গেলে না নিয়ে উল্টো টাকা দাবি করেন ওসি এনায়েত হোসেন। পরবর্তীতে থানার সহযোগিতা না পেয়ে এলাকা ছেড়ে স্বামী ও ছেলেকে নিয়ে পালিয়ে নিজেদের রক্ষা করেছেন বলে অভিযোগ করেন আনোয়ারা আক্তার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ