রেল স্টাফদের কর্মবিরতির ফলে দেশের অন্য এলাকার মতো পঞ্চগড়ের যাত্রীরাও ভোগান্তিতে পড়েছেন। মঙ্গলবার সকালে পঞ্চগড় স্টেশনে এসে ট্রেন না পেয়ে ফেরত যান অনেকে। ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার কারণে অলস সময় কাটাচ্ছেন স্টেশন মাস্টার, টিকিট কাউন্টারের কর্মী থেকে শুরু করে এলাকার শ্রমিক, অটোরিকশা ও ইজি বাইকচালকরা।

পঞ্চগড় রেলস্টেশন সূত্র জানায়, সর্বোত্তরের শুরুর জেলা পঞ্চগড় রেল স্টেশন দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দূরত্বে অবস্থিত। এই স্টেশন থেকে প্রতিদিন পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, দুরন্ত এক্সপ্রেস, একতা এক্সপ্রেস, বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস, কাঞ্চন কমিউটার এবং দোলনচাঁপা এক্সপ্রেসসহ ৬টি ট্রেন নিয়মিত যাতায়াত করে। কর্মবিরতির ফলে বন্ধ রয়েছে এসব ট্রেন চলাচল। তবে সোমবার রাতে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস এবং ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা দ্রুতযান এক্সপ্রেস মঙ্গলবার সকালে পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছেছে। তবে ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ ট্রেন চলাচল বন্ধে পঞ্চগড় থেকে ঢাকা, রাজশাহী, রংপুরগামী যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন।

ইজিবাইক চালক রহিবুল ইসলাম বলেন, আমরা রেলস্টেশনের যাত্রী পরিবহন করি। এখন এখানে এসে দেখি ট্রেনও আসে না, যাত্রীও নেই। যারা এসেছিলেন তারা ট্রেন না পেয়ে চলে গেছেন।

তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর এলাকা থেকে আসা যাত্রী সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার রংপুর যাওয়া জরুরি ছিল। ভেবেছিলাম ট্রেনে যাব। কিন্তু এসে শুনলাম রেল ধর্মঘট চলছে। নিরুপায় হয়ে ফেরত যাচ্ছি। এখন বিআরটিসি বাস বা অন্য কোনও মাধ্যমে যেতে হবে।

পঞ্চগড় রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার মাসুদ পারভেজ বলেন, আমরা সময়মতো স্টেশনে এসেছি। অফিস খুলেছি। আমাদের টিকিট কাউন্টার খোলা রয়েছে। কিন্তু যেহেতু ট্রেন চলাচল করছে না, সে কারণেই যাত্রীরাও ট্রেনের টিকিট কাটছেন না। পঞ্চগড় থেকে সকালে কোনও ট্রেন ছেড়ে যায়নি তবে ঢাকা থেকে সোমবার রাতে ছেড়ে আসা পঞ্চগড় এক্সপ্রেস এবং রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস স্টেশনে পৌঁছেছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মানছে না রাশিয়া

ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছে তাতে মস্কোর বিবেচিত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা হয়নি বলে মনে করে রাশিয়া। এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ। খবর রয়টার্সের

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিসংক্রান্ত সাময়িকীতে মঙ্গলবার সের্গেই রিয়াবকভের দেওয়া এক সাক্ষাৎকারের অংশবিশেষ প্রকাশিত হয়েছে। 

রিয়াবকভ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত মডেল ও সমাধানগুলো আমরা খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। কিন্তু বর্তমানে সেগুলো যেভাবে আছে, সেভাবে আমরা মেনে নিতে পারি না। আজ পর্যন্ত সেগুলোতে আমাদের প্রধান দাবির জন্য কোনো জায়গা রাখা হয়নি, অর্থাৎ এই সংঘাতের মূল কারণগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যাগুলোর সমাধান নিয়ে। এটি পুরোপুরি অনুপস্থিত; যা অবশ্যই কাটিয়ে উঠতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে ক্ষমতায় বসার পর থেকেই তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ দ্রুত বন্ধ করার চেষ্টা করছেন। তবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে প্রতিনিধিদলের সমঝোতা আলোচনায় এখনো উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে আলোচনায় ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাবে মতৈক্য হয়। তবে তা নাকচ করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত বলে অভিমত দেন তিনি।

গত রোববার ট্রাম্প এনবিসি নিউজকে বলেন, পুতিন সমঝোতা আলোচনায় জেলেনস্কির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় এবং ইউক্রেনে নতুন নেতৃত্বের আহ্বান জানানোয় তিনি রুশ প্রেসিডেন্টের ওপর ‘রেগে আছেন’। পরবর্তী সময়ে ট্রাম্প সাংবাদিকদের আরও বলেছেন, রাশিয়ার নেতা একটি শান্তিচুক্তির জন্য তার দিকের করণীয়টা করবেন বলে তিনি প্রত্যাশা করছেন।

এর পরদিন সোমবার ক্রেমলিন বলেছে, প্রেসিডেন্ট পুতিন এখনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় রাজি আছেন।

তবে রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াবকভ সতর্ক করেছেন, ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির পরে এই যুদ্ধের সমাপ্তি টানার জন্য ট্রাম্প বা ইউক্রেন কারও পক্ষ থেকে কোনো ইঙ্গিত দেখতে পাচ্ছে না মস্কো। তিনি বলেছেন, ‘এতে (যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে) আজকে আমাদের প্রধান চাওয়াগুলো স্থানই পায়নি। এই সংঘাতের মূল কারণগুলো সম্পর্কিত সমস্যাগুলোর নিরসনে এ বিষয়গুলো জরুরি।’

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে রাশিয়া। তখন থেকে দুই দেশের মধ্য প্রাণক্ষয়ী এই যুদ্ধ চলছে। এর আগে ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নিয়েছিল রাশিয়া।

সম্পর্কিত নিবন্ধ